উপকূলে লবণাক্ত পানির পরিমাণ বাড়ছে, ঝুঁকিতে পড়বে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া
বিশ্বজুড়ে লবণাক্ত পানির পরিমাণ বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির গবেষকেরা সম্প্রতি লবণাক্ত পানি দ্রুত বাড়ার কারণ জানতে গবেষণা করেছেন। সেই গবেষণায় বলা হয়েছে, বেশ দ্রুত হারে লবণাক্ত পানির পরিমাণ বাড়ছে। এর ফলে ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রতি চারটি উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় তিনটিতেই স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি লবণাক্ত পানি থাকবে, যা ভূগর্ভস্থ স্বাদুপানির উৎসেও প্রবেশ করবে। এর ফলে কিছু উপকূলীয় জলাশয়ের পানি পান করা সম্ভব হবে না। তখন সেচের জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে স্বাদুপানির সংকট দেখা যাবে। লবণাক্ত পানির পরিমাণ বাড়ার কারণে বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতিও বেশি হবে। বিষয়টিকে বিজ্ঞানীরা লবণাক্ত পানির অনুপ্রবেশ বলছেন। এমন ঘটনা উপকূলরেখার নিচে দেখা যায়।
উপকূলে লবণাক্ত পানি ও ভূগর্ভস্থ স্বাদুপানি পাশাপাশি অবস্থান করে। বৃষ্টির মাধ্যমে উপকূলীয় জলাশয়ে স্বাদুপানি জমা হয়। উপকূলরেখায় সমুদ্রের চাপের কারণে সমুদ্রের পানি ভূমির অভ্যন্তরীণ দিকে প্রবেশের চেষ্টা করে। দুই শক্তির ভারসাম্য একদিকে স্বাদুপানি ও অন্যদিকে লবণাক্ত পানির মধ্যে সমন্বয় করে।
গবেষণায় বিশ্বের ৬০ হাজারের বেশি উপকূলীয় জলাশয়ের পানির তথ্যসহ ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণার তথ্যমতে, সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সর্বত্র বন্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। লবণাক্ত পানির অনুপ্রবেশ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ভূগর্ভস্থ পানির প্রবাহ পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মেক্সিকো উপসাগরের চারপাশের উপকূল এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু নিচু স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন স্বাদু ও লবণাক্ত পানির ভারসাম্যেও প্রভাব ফেলছে। পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। এতে লবণাক্ত পানি উপকূলরেখা থেকে অভ্যন্তরীণ চাপের কারণে ভূমির দিকে স্থানান্তরিত হচ্ছে। শুধু তা–ই নয়, লবণাক্ত পানির স্থলভাগের দিকে আসার শক্তিও বাড়ছে। একই সময়ে কম বৃষ্টি ও উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে ভূগর্ভস্থ স্বাদুপানির সঞ্চালনশক্তি দুর্বল হচ্ছে। এতে উপকূল অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠের নিচে স্বাদুপানির পরিমাণ কমছে।
সূত্র: ফিজিস ডটঅর্গ