সবচেয়ে ভারী পরমাণু খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা

ভারী পরমাণুর সন্ধানে গবেষণাগারে কাজ করছেন জ্যাকলিন গেটসফিজিস ডটওআরজি

যুক্তরাষ্ট্রের লরেন্স বার্কলে ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা ১১৮টি পরিচিত মৌলের মধ্যে ১৬টিই আবিষ্কার করেছেন। আর তাই এই ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা বেশ আলোচিত। এবার ১২০ নম্বর মৌলের সন্ধান পেতে সবচেয়ে ভারী পরমাণুর খোঁজে গবেষণা শুরু করেছেন তাঁরা। বার্কলে ল্যাবরেটরির হেভি এলিমেন্ট (ভারী মৌল) গ্রুপের বিজ্ঞানীরা টাইটানিয়াম রশ্মি ব্যবহার করে পরিচিত অতিরিক্ত ভারী মৌল ১১৬ তৈরি করেছিলেন। ১১৬ নম্বর মৌলের নাম রাখা হয়েছে লিভারমোরিয়াম। ২০১২ সালে এই নামকরণ করা হয়। ২০০০–২০০৬ সময়ে গবেষণার মাধ্যমে এই মৌল আবিষ্কৃত হয়। সেই ভারী মৌলের ওপর ভিত্তি করেই নতুন মৌল ১২০ তৈরি বা সন্ধানের চেষ্টা করছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে ১১৬ নম্বর মৌল লিভারমোরিয়ামের দুটি পরমাণু তৈরি করেছেন। ১২০ নম্বর মৌলের একটি পরমাণু তৈরির বিষয়টি বেশ বিরল বলে মনে করেন তাঁরা। বার্কলে ল্যাবের নিউক্লিয়ার সায়েন্স ডিভিশনের পরিচালক রেইনার ক্রুকেন বলেন, ১১৬ নম্বর মৌলের চেয়ে ১২০ নম্বর মৌল তৈরি করতে প্রায় ১০ গুণ বেশি সময় লাগবে। এটা সহজ নয়, কিন্তু এখন এটা সম্ভব।

যদি আবিষ্কৃত হয়, তবে ১২০ নম্বর মৌলটি তৈরি করা সবচেয়ে ভারী পরমাণু হবে। রাসায়নিক পর্যায় সারণির অষ্টম সারিতে বসবে ১২০ নম্বর মৌল। অনন্য বৈশিষ্ট্যের অন্যান্য সুপারহেভি বা অতিভারী মৌলের পাশাপাশি থাকবে ১২০ নম্বর মৌল। এ বিষয়ে বার্কলে ল্যাবের পরমাণুবিজ্ঞানী জ্যাকলিন গেটস বলেন, ‘নতুন উপাদান তৈরি করা বেশ বিরল কৃতিত্ব। এ প্রক্রিয়াটির অংশ হতে পেরে বেশ উত্তেজিত আমরা।’

অতিভারী মৌল বা সুপারহেভি উপাদান তৈরির রেসিপি তাত্ত্বিকভাবে সহজ। দুটি হালকা মৌল বা উপাদান একসঙ্গে ভেঙে একত্র করে পছন্দের প্রোটনের সংখ্যার পরমাণু তৈরি করা যায়। তাত্ত্বিকভাবে সহজ মনে হলেও বাস্তবে বিষয়টি অবিশ্বাস্যভাবে কঠিন। দুটি পরমাণু সফলভাবে যুক্ত বা ফিউজ হওয়ার আগে ট্রিলিয়নসংখ্যক (এক লাখ কোটিসংখ্যক) মিথস্ক্রিয়া দেখা যায়। বাস্তবে নতুন মৌল তৈরির অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই কাজের জন্য সহযোগিতা করছে বার্কলে ল্যাব, লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়, আর্গোন ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিসহ ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা।

সূত্র: ফিজিস ডটওআরজি