২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বুধ গ্রহে লবণের হিমবাহের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা

বুধ গ্রহের উত্তর মেরুর কাছে থাকা খাদে লবণাক্ত হিমবাহের খোঁজ পাওয়া গেছে
লাইভসায়েন্স

সৌরজগতের অন্যতম উত্তপ্ত গ্রহ বুধ। এই বুধ গ্রহের উত্তর মেরুর কাছে থাকা বড় বড় খাদে লবণাক্ত হিমবাহের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শুধু তা–ই নয়, বুধ গ্রহের এসব অঞ্চলে প্রাণের উপস্থিতি থাকতে পারে বলে অনুমান করছেন তাঁরা। নাসার মেসেঞ্জার মহাকাশযানের বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে বুধ গ্রহের উত্তর গোলার্ধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার সুযোগ মিলেছে। মেসেঞ্জার মহাকাশযানের সংগ্রহ করা তথ্য পর্যবেক্ষণ করে নতুন একটি গবেষণাপত্র প্ল্যানেটারি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনাভিত্তিক অলাভজনক প্ল্যানেটারি সায়েন্স ইনস্টিটিউটের গ্রহবিজ্ঞানী অ্যালেক্সিস রদ্রিগেজ বলেন, ‘বুধ গ্রহে আমরা লবণের হিমবাহের খোঁজ পেয়েছি। এর আগে প্লুটো গ্রহে নাইট্রোজেন হিমবাহের খোঁজ মিলেছে। বুধ গ্রহে রাডিটলাদি ও এমিনেস্কু নামের দুটি খাদ রয়েছে। এখানেই লবণের হিমবাহের অবস্থান। আমরা পৃথিবীতে যে আইসবার্গ বা হিমবাহ দেখি, বুধ গ্রহের হিমবাহ তেমন নয়।’

বুধ গ্রহে হিমবাহের সন্ধান পাওয়াকে আশ্চর্যজনক ঘটনা হিসেবেই দেখছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, বুধ গ্রহের ভর পৃথিবীর মাত্র ৫.৫ শতাংশ। বুধ গ্রহ বলা যায় একেবারেই ওজনহীন, যেন তুলার মতো শূন্যে ভাসছে। শুধু তা–ই নয়, বুধের সবই উত্তপ্ত। সেখানে লবণের প্রবাহ এক বিলিয়ন বছরের বেশি সময় ধরে চলা উদ্বায়ীকে সংরক্ষণ করছে। বুধ গ্রহের ওপর সূর্যের তাপ অনেক বেশি। সেই তাপ থেকে আশ্রয় নিয়ে ভূগর্ভস্থ প্রাণের বিকাশ ঘটতে পারে।

আরও পড়ুন

হিমবাহের সন্ধান পাওয়ার ঘটনা বুধ গ্রহ সম্পর্কে একটি দীর্ঘস্থায়ী রহস্যের সমাধান করেছে। আগে ধারণা করা হতো, বুধ গ্রহের ছোট ছোট খাদ নানা উদ্বায়ী পদার্থে পূর্ণ ছিল। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী রদ্রিগেজ বলেন, ‘সম্ভবত বুধ গ্রহে আগে কোনো হ্রদ ছিল। বুধ গ্রহের বয়স যখন কম তখন ঘন লবণাক্ত বাষ্প আগ্নেয়গিরির অভ্যন্তর থেকে বেরিয়ে আসার কারণে এসব হিমবাহ তৈরি হতে পারে। বুধ গ্রহের পৃষ্ঠের নিচে কী লুকিয়ে থাকতে পারে তা নিয়ে বড় পরিসরে গবেষণার কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।’

আরও পড়ুন

উল্লেখ্য, বুধ গ্রহ সূর্যের সবচেয়ে কাছে অবস্থিত। সৌরজগতের সবচেয়ে ছোট গ্রহ হওয়া সত্ত্বেও গ্রহটির গড় ব্যাস ৪ হাজার ৮৮০ কিলোমিটার, যা পৃথিবীর ৩৮ শতাংশ। শুধু তা–ই নয়, মঙ্গল গ্রহের সমান মাধ্যাকর্ষণ শক্তির পাশাপাশি বুধ গ্রহের একটি গতিশীল চৌম্বক ক্ষেত্র রয়েছে, যার শক্তি পৃথিবীর প্রায় ১ শতাংশের সমান। বর্তমান তথ্য অনুসারে, বুধ গ্রহে একটি কঠিন সিলিকেট ভূত্বক ও একটি শক্ত কেন্দ্র রয়েছে। বুধ গ্রহের তাপমাত্রা রাতে মাইনাস ১৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও দিনে ৪২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়।

সূত্র: লাইভসায়েন্স