জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভয়ংকর হচ্ছে ছত্রাক সংক্রমণ
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ধীরে ধীরে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম বদলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বদলে যাচ্ছে প্রাণী ও উদ্ভিদের আচরণও। চীন, সিঙ্গাপুর ও কানাডার একদল গবেষক জানিয়েছেন, পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির ছত্রাক ভয়ংকর রূপে মানুষকে সংক্রমিত করতে বিবর্তিত হচ্ছে। নেচার মাইক্রোবায়োলজি জার্নালে ছত্রাকের ভয়ংকর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ–গবেষক ডেভিড ডেনিং বলেন, ‘ছত্রাক নিয়ে অপ্রত্যাশিত আবিষ্কার আমাদের চমকে দিয়েছে। ভবিষ্যতের জন্য খারাপ ইঙ্গিত পাচ্ছি আমরা। স্বাভাবিকভাবে ছত্রাক দুটি কারণে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের তুলনায় মানুষের শরীরে রোগ কম তৈরি করে। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের শরীরের উচ্চ তাপমাত্রার কারণে ছত্রাক ভালোভাবে বৃদ্ধি পায় না। কিন্তু কয়েক দশক ধরে ছত্রাকের সংক্রমণ সাধারণ হয়ে উঠেছে। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমছে বলে বিভিন্ন ছত্রাকের সংক্রমণও বাড়ছে।’
সাধারণভাবে মানুষের মধ্যে ছত্রাকের সংক্রমণ খুব একটা হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। মানুষের শরীরের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়ে থাকে। গত কয়েক বছর ধরে মানুষের শরীরে বিরল ধরনের ছত্রাক সংক্রমণের ঘটনা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজিস্ট এশিয়া গুসা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সম্পূর্ণ নতুন ছত্রাকের সংক্রমণ মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। উদ্বেগজনকভাবে এদের মধ্যে কিছু আগে থেকেই ওষুধপ্রতিরোধী ছিল। এ তথ্য কিছুটা ভীতিকর বটে।
ছত্রাক সাধারণভাবে কম তাপমাত্রায় বসবাস করে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক ছত্রাক অভিযোজিত হয়ে মানুষের শরীরকে বসবাসের জায়গা হিসেবে বেছে নিচ্ছে। পৃথিবীতে এক লাখের বেশি প্রজাতির ছত্রাক রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এসব ছত্রাকের আবাস ও বংশবৃদ্ধির স্বাভাবিক ধরন পরিবর্তিত হচ্ছে। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চীনের ৯৬টি হাসপাতালে ছত্রাকের সংক্রমণের রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে, যার ১.৭ শতাংশই বিরল প্রজাতির ছত্রাক। এসব ছত্রাকের বেশ কিছু প্রজাতি প্রথমবারের মতো মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়েছে এবং সেগুলো ওষুধপ্রতিরোধী।
সূত্র: ফিজিস ডট অর্গ