প্ল্যানেট নাইন নিয়ে আবার আলোড়ন
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক), ইউনিভার্সিটি কোট ডি’আজুর ও সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গ্রহবিজ্ঞানীরা ‘প্ল্যানেট নাইন’ নিয়ে আলোড়ন তৈরি করেছেন। গেল ১০০ বছর ধরেই নেপচুন গ্রহের পেছনে কোনো না কোনো গ্রহ আছে বলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন। প্ল্যানেট নাইন নিয়ে ২০১৬ সালের পর বেশ কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে। পৃথিবীর চেয়ে আকারে বড় এ গ্রহের সম্ভাব্য কক্ষপথের ধারণা ২০২১ সালে প্রকাশ করা হয়। গ্রহটির অস্তিত্ব নিয়ে নতুন প্রমাণ জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের জার্নাল ‘লেটারস’–এ উপস্থাপন করা হয়েছে।
২০১৫ সালে প্রথম ক্যালটেকের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সৌরজগতের শেষ প্রান্তের কাছে নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে বেশ কয়েকটি বস্তুকে একত্র অবস্থায় দেখতে পান। তাত্ত্বিকভাবে সেই গুচ্ছ আকারের মহাজাগতিক বস্তু কোনো অজানা গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ টানে তৈরি হয় বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। সেই অজানা গ্রহকে ‘প্ল্যানেট নাইন’ নামে ডাকা হচ্ছে। গবেষকেরা গ্রহের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে বিভিন্ন গবেষণা পরিচালনা করছেন। প্রথমে ধারণা করা হয়, পৃথিবী সূর্যকে যে পথে ভ্রমণ করে, তার চেয়ে ৪০০-৮০০ গুণ বড় আকারের কক্ষপথে প্ল্যানেট নাইট ঘুরছে। গ্রহটির ভর পৃথিবীর চেয়ে ৫-১০ গুণ ও ব্যাসার্ধ পৃথিবীর ব্যাসার্ধের চেয়ে ২-৪ গুণ বেশি বলে অনুমান করা হচ্ছে।
আবারও গবেষকেরা গ্রহের অস্তিত্ব নিয়ে বেশ কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করছেন। একাধিক কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে নতুন গ্রহটির অস্তিত্ব জানা যাচ্ছে। গ্রহের গ্যালাকটিক জোয়ারের কারণে মহাকর্ষীয় বস্তু গুচ্ছ আকারে অবস্থান করছে। গ্যালাকটিক জোয়ার অনেকটা আমাদের চাঁদের আকর্ষণের কারণে জোয়ারের বিষয়টির সঙ্গে তুলনা করা যায়। প্ল্যানেট নাইনের জন্য চিলির ভেরা রুবিন অবজারভেটরির মাধ্যমে ভবিষ্যতে গবেষণা করা হবে বলে জানা গেছে।
প্ল্যানেট নাইনের এখনো কোনো স্বীকৃত নাম নেই। যদি আসলেই প্ল্যানেট নাইনের অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান ইউনিয়ন গ্রহটির নাম ঠিক করবে। সাধারণত গ্রহের আবিষ্কারক বা তাঁদের প্রস্তাবিত নাম দেওয়া হয়। জ্যোতির্বিদ ব্যাটিগিন ও ব্রাউন অজানা গ্রহকে প্রথম প্ল্যানেট নাইন বলে অভিহিত করেন। ২০১৮ সালে গ্রহটির নাম গায়ক ডেভিড বাউয়ির নামে নামকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে পদার্থবিজ্ঞানী লরেঞ্জো ইওরিও গ্রিক শব্দ অনুসারে গ্রহটির নাম দেন ‘টেলিস্টো’। এখন দেখা যাক, প্রমাণের মাধ্যমে সৌরজগতের তালিকায় নতুন গ্রহের নাম দেখা যায় কি না।
সূত্র: ফিজিস ডট অর্গ