কে ছিল কুমিরের পূর্বপুরুষ?
ডাইনোসররা প্রগৌতিহাসিক পৃথিবী শাসনের সব গৌরব পায়। বিজ্ঞানীরা আধুনিক কুমিরের এক চাচাতো ভাই হিসেবে এটোসররা ডাইনোসরদের খোঁজ পেয়েছেন। এই ডাইনোসররা সেই সময়ে বিশ্ব শাসনের দলে নাম লিখিয়েছিল। ট্রায়াসিক যুগের দানব প্রায় ২০ কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে যায়। অ্যান্টার্কটিকা ও অস্ট্রেলিয়া প্রতিটি মহাদেশেই এদের জীবাশ্ম পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন জীবাশ্মের হাড়ের তথ্য ব্যবহার করেন বিভিন্ন প্রজাতিকে শনাক্ত করতে চেষ্টা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, অস্টিনের গবেষকেরা এটোসরদের বর্মের অক্ষত অংশ খুঁজে পেয়েছেন। প্রাগৌতিহাসিক আমলের কুমিরের বর্মকে ক্যারাপেস বলা হয়। এই বর্মে শরীরের ৭০ শতাংশ সম্পূর্ণ ঢেকে থাকে।
কুমিরের চাচাতো ভাইদের নিয়ে একটি গবেষণাপত্র দ্য অ্যানাটমিক্যাল রেকর্ডে প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানী উইলিয়াম রেয়েস বলেছেন, আদি কুমিরের ঘাড়ের পেছনে কাঁধের অঞ্চল থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত উপাদানের খোঁজ মিলেছে। নতুন এই প্রজাতির নাম দেওয়া হয়েছে গারজাপেল্টা মুয়েলেরি। গারজা নামটি এসেছে উত্তর-পশ্চিম টেক্সাসের গারজা কাউন্টি থেকে, যেখানে আইটোসরের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছিল। প্রজাতির নাম মুয়েলেরি নাম রাখা হয়েছে বিল মুলার নামের জীবাশ্মবিদের সম্মানে।
কুমিরের পূর্বপুরুষ হিসেবে নিউ মেক্সিকো মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি অ্যান্ড সায়েন্সে গারজাপেল্টার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। বিজ্ঞানী রেয়েস বলেন, গারজাপেল্টা প্রায় সাড়ে ২১ কোটি বছর আগে বেঁচে ছিল। আধুনিক আমেরিকান কুমিরের মতো প্রকান্ড আকারের ছিল তাদের দেহ। দেখতে কাটাওয়ালা বিশালাকৃতির ছিল।
গার্জাপেল্টা ও অন্যান্য অ্যাটোসরদের কাটাওয়ালা আবৃত হাড়ের প্লেটকে অস্টিওডার্ম বলা হয়। এগুলো সরাসরি ত্বকের সঙ্গে যুক্ত ছিল। অনেকটা মোজাইকের মতো একসঙ্গে লেগে বর্ম তৈরি করেছিল। হাড়ের প্লেট শরীর ঢেকে রাখার পাশাপাশি দুই পাশ আবদ্ধ ছিল, যা শিকারিদের থেকে সুরক্ষা দিত। এখনকার কুমির মাংসাশী হলেও পূর্বপুরুষেরা প্রাথমিকভাবে সর্বভুক ছিল। কুমিরের পূর্বপুরুষের এই জীবাশ্ম ৩০ বছরের বেশির ভাগ সময় বদ্ধঘরে সংরক্ষিত ছিল।
সূত্র: ফিজিস ডট অর্গ