সবচেয়ে শক্তিশালী গামা রশ্মির সন্ধান মিলল কোথায়

শক্তিশালী গামা রশ্মির খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরাআর্থ ডট কম

উচ্চশক্তির গামা রশ্মির খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যা দৃশ্যমান আলোর চেয়ে ১০ ট্রিলিয়ন গুণ বেশি শক্তিশালী। বিজ্ঞানীরা নামিবিয়ার হাই এনার্জি স্টেরিওস্কোপিক সিস্টেম টেলিস্কোপ বা এইচইএসএস অবজারভেটরির তথ্য পর্যালোচনা করে একটি মৃত তারা বা পালসার থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী এই গামা রশ্মি শনাক্ত করেছেন। ২০ টেরা-ইলেকট্রন ভোল্ট ক্ষমতায় এই গামা রশ্মির উৎপত্তি বর্তমানে প্রচলিত ধারণা বা তত্ত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

নেচার অ্যাস্ট্রোনমি জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণার তথ্য মতে, ভেলা পালসার থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী গামা রশ্মি আসার প্রমাণ পাওয়া গেছে। নতুন এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ১০ টেরা-ইলেকট্রন ভোল্ট পরিসরে অন্যান্য পালসার শনাক্তকরণের জন্য নতুন উপায় নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। ফ্রান্সের অ্যাস্ট্রো পার্টিকেল অ্যান্ড কসমোলজি (এপিসি) ল্যাবরেটরির গবেষক আরাচে জানাতি-আতাই বলেন, ‘পালসার সম্পর্কে নতুন তথ্য আমাদের আগের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। এমন মহাজাগতিক ঘটনার কীভাবে কাজ করে, তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে মনে হচ্ছে।’

আরও পড়ুন

পালসার আসলে তারার অবশিষ্টাংশ। বিশাল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে সুপারনোভা তৈরি হয়। বিস্ফোরণের কারণে প্রায় ২০ কিলোমিটার ব্যাসের একটি ক্ষুদ্র মৃত নক্ষত্র তৈরি হয়, যা অবিশ্বাস্য গতিতে ঘুরতে থাকে। পালসারে একটি শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র তৈরি হয়। এযাবৎ ৩ হাজারের বেশি পালসারের খোঁজ পাওয়া গেছে। উচ্চশক্তির গামা রশ্মি নির্গত করে এমন ১০০ মেগা ইলেকট্রন ভোল্টস থেকে ১০০ গিগা ইলেকট্রন ভোল্ট সীমানায় প্রায় ২৭০টি পালসারের সন্ধান এ পর্যন্ত পাওয়া গেছে। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৬ সালের তথ্য এ গবেষণায় বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানী এমা ডি ওনা উইলহেলমি বলেন, ‘এই মৃত নক্ষত্র প্রায় পুরোটাই যেন নিউট্রন দ্বারা গঠিত, যা অবিশ্বাস্যভাবে গভীর ঘনত্বের। সমুদ্রের বাতিঘরের আলোর মতো পালসার থেকে  ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণ নির্গত হয়। এই রশ্মি গুলি আমাদের সৌরজগতের মধ্য দিয়ে গেলে আমরা নিয়মিত বিরতিতে বিকিরণ টের পাই।’

আরও পড়ুন

বিজ্ঞানীদের ধারণা, দ্রুতগতির ইলেকট্রন থেকে বিকিরণ তৈরি হয়। এর ফলে ইলেকট্রন পালসারের ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে সীমানার বাইরে চলে আসে। পালসারের চৌম্বকক্ষেত্র প্লাজমা ও ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডে আবদ্ধ, যা তারার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরতে থাকে।
পোল্যান্ডের নিকোলাস কোপার্নিকাস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সেন্টারের বিজ্ঞানী ব্রোনেক রুডাক বলেন, ‘ইলেকট্রনগুলো অর্জিত শক্তি বিকিরণ বিমের মতো নিয়মিত বিরতিতে ছেড়ে দিচ্ছে। ভেলা পালসার ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালির রেডিও ব্যান্ডে সবচেয়ে উজ্জ্বল পালসার। গিগা-ইলেকট্রন ভোল্টস পরিসরে সবচেয়ে উজ্জ্বল মহাজাগতিক গামা রশ্মির উৎস হিসাবে এটি পরিচিত। এই পালসার প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১১ বার ঘুরছে।’
সূত্র: আর্থ ডট কম