রোবট ইঁদুরের সঙ্গে জীবন্ত ইঁদুরের বন্ধুত্ব কীভাবে হলো
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই–চালিত রোবট ইঁদুরের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছে একটি জীবন্ত ইঁদুর। রোবোটিক ইঁদুরটির আকার–আকৃতি সত্যিকারের ইঁদুরের মতো। রোবট ইঁদুরে পায়ের বদলে আছে চাকা। কোনো লেজ নেই। প্লাস্টিকের দেহ নিয়ে জীবন্ত ইঁদুরের মতো অগ্রভাগ আর চারপাশে ঘোরাঘুরি করার ক্ষমতা রয়েছে রোবট ইঁদুরের। অন্য সব জীবন্ত ইঁদুরের মতো ভঙ্গি নকল করার ক্ষমতা রয়েছে রোবট ইঁদুরের। চীনা গবেষকেরা এই স্বায়ত্তশাসিত ও গতিশীল ইঁদুরের রোবট তৈরি করেছেন। রোবট ইঁদুরের একটি ক্যামেরা, ছোট মোটর ও বেশ কয়েকটি জোড় রয়েছে। জীবন্ত ইঁদুরের শরীরের ভাষার প্রতিলিপি করতে পারে এই রোবট।
গবেষণার অংশ হিসেবে রোবট ইঁদুরকে বাস্তব ইঁদুরের সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার তথ্য দ্বারা প্রশিক্ষিত করা হয়। জীবন্ত ইঁদুরের সঙ্গে মেশার সময় বিভিন্ন সামাজিক সংকেত রিয়েল-টাইমে প্রদর্শন করতে পারে এই রোবট। বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্মুরো নামের এই রোবট ইঁদুরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম। জীবন্ত ইঁদুরের প্রতি তাদের আগ্রহ জাগিয়ে তুলতে পেরেছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, জীবন্ত ইঁদুর রোবটের সঙ্গে একই আচরণ করেছে, যেভাবে অন্য সব জীবন্ত ইঁদুর পরস্পরের সঙ্গে করে।
যখন যন্ত্রটি রাগ প্রকাশ করে, তখন জীবন্ত ইঁদুর কাঁপতে থাকে ও চিৎকার করে। যন্ত্র সহনশীল আচরণ প্রকাশ করলে জীবন্ত ইঁদুর খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে। চীনা বিজ্ঞানীরা জীবিত প্রাণী ও যন্ত্রের মধ্যে সংযোগ তৈরির জন্য এমন রোবট ইঁদুর তৈরি করেছেন। এমন গবেষণা ভবিষ্যতে মানুষ ও যন্ত্রের মধ্যে অনুরূপ সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে।
অস্ট্রিয়ার গ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো-হাইব্রিড সিস্টেমের বিজ্ঞানী থমাস শ্মিকল বলেন, রোবট ইঁদুরের অভূতপূর্ব সামাজিক দক্ষতা দেখা যাচ্ছে। স্মুরো সক্রিয়ভাবে জীব ও রোবট ইন্টারঅ্যাকশনের প্রেক্ষিতে কাজ করতে পারে। জীবন্ত ইঁদুরের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের কারণে দারুণ একটি বায়ো-মিমেটিক রোবট হিসেবে অভূতপূর্ব সামাজিক দক্ষতা প্রদর্শন করে। একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, স্মুরো রোবট সফলভাবে জীবন্ত ইঁদুরের মানসিক অবস্থায় সক্রিয়ভাবে পরিবর্তন আনতে পারে। রোবট ও ইঁদুরের এমন মিথস্ক্রিয়ায়, নতুন তথ্য জানার সুযোগ তৈরি হবে। গবেষণাটি নেচার মেশিন ইন্টেলিজেন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র: টেলিগ্রাফ