ডেঙ্গুর বিস্তার বন্ধ করতে বধির করা হবে মশাকে

একটি নারী এডিস মশারয়টার্স

বিভিন্ন দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ে চিন্তিত জনস্বাস্থ্যবিদ ও বিজ্ঞানীরা। কোনোভাবেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা ডেঙ্গুর বিস্তার বন্ধ রোধে মশাকে বধির করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবছেন। বিজ্ঞানীরা টিআরপিভিএ নামের একটি প্রোটিনকে লক্ষ করেছেন, যা মশার শ্রবণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রোটিন নিষ্ক্রিয় করে মশাকে বধির করা গেলে ডেঙ্গুর বিস্তার বন্ধ হতে পারে, এমনই তথ্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে।

সাধারণভাবে পুরুষ এডিস নারী এডিস মশার ডানার স্পন্দনে আকৃষ্ট হয়। বিজ্ঞানীরা ডেঙ্গু, হলুদ জ্বর ও জিকার মতো মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার অনন্য উপায় হিসেবে মশাকে বধির করার পথ খুঁজে পেয়েছেন। পুরুষ মশাকে বধির করে দিলে তারা সঙ্গম করতে পারবে না, তখন মশার বংশবৃদ্ধি করতে পারবে না। পুরুষ ও নারী উভয় মশা উড়ার সময় এক স্পন্দনে ডানা ঝাকালে মৃদু শব্দ উৎপন্ন করে। এডিস পুরুষরা এই স্পন্দনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ছুটে যায় নারী মশার দিকে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এই পরীক্ষা পরিচালনা করেছেন। তাঁরা পুরুষ মশার জিনগত নকশায় পরিবর্তন এনে পুরুষ মশার শ্রবণক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করেন। গবেষণায় দেখা যায়, জিনগত পরিবর্তনের পরে তিন দিন একই খাঁচায় রাখার পরেও নারী মশার সঙ্গে পুরুষ মশার কোনো যোগাযোগ হয়নি। সাধারণ অবস্থায় পুরুষ মশা নারী মশার সঙ্গে যোগাযোগ করার ২০ সেকেন্ডের মধ্যে সঙ্গমে যায়। এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে এডিস মশা সঙ্গম ও প্রজনন সম্পন্ন করে। জিনগত পরিবর্তনের পরে মশার নিউরনে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। মশার শ্রবণ উদ্দীপনার প্রতিক্রিয়ায় তেমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।

স্ত্রী এডিস মশা প্রতিবছর প্রায় ৪০ কোটি মানুষের মধ্যে রোগ ছড়ায়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন মশাকে বাচ্চা হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারলে সামগ্রিকভাবে মশার সংখ্যা কমবে। যদি পুরুষ মশারা সঙ্গম করতে না পারে, তাহলে নতুন মশার ডিম নিষিক্ত হবে না।

সূত্র: এনডিটিভি