ডলফিন কি সত্যিই নিজেদের নাম ধরে ডাকতে পারে
বন্য প্রাণীরা নিজেদের মধ্যে নানাভাবে যোগাযোগ করে, বার্তা বিনিময়ও করে তারা। ডলফিন তো এক ধাপ ওপরে। একে অপরের নাম ধরে ডাকে ডলফিন। প্রাণীদের যোগাযোগের মাধ্যম নিয়ে গবেষণা করছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞানী আরিক কেরশেনবাউম। তিনি মূলত নেকড়ে, গিবন আর ডলফিনের যোগাযোগপদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন। আরিক কেরশেনবাউম বলেন, প্রাণীরা আলাদা ভাষা ব্যবহার করে যোগাযোগের জন্য। তাদের ভাষা বিশ্লেষণ করতে পারলে তাদের বাস্তুসংস্থান ও সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে জানা যাবে।
গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আরিক কেরশেনবাউম বলেন, প্রাণীরা কথা বলে কী না বা তারা কী কথা বলে, সেগুলো আমরা জানতে চাই। যদিও প্রাণীরা কথা বলে—এই ধারণা নিয়ে নানা ধরনের মতামত রয়েছে। প্রতিটি ডলফিনেরই আলাদা নাম রয়েছে। নিজেদের সঙ্গে যোগযোগের সময় শিস দেয় তারা। এ বিষয় নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। এই শিসের শব্দ কী, তা জানার চেষ্টা চলছে। ২০১৩ সালের এক গবেষণায় জানা গেছে, ডলফিনেরা নিজেদের নাম ধরে ডাকে। ডলফিনের শিসের শব্দ পানির নিচে ২০ কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা যায়। একটি নেকড়েকে তার চিৎকারের বৈশিষ্ট্য থেকে শনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু ডলফিন কেন নাম ধরে বা শিস বাজিয়ে ডাকে, তা আমরা জানি না। সম্ভবত পানির নিচে বেঁচে থাকার জন্য এসব তাদের শিখতে হয়। ডলফিনেরা সমুদ্রে জানে না, কে কোথায় আছে, কিন্তু শিস বা শব্দ দিয়ে নিজেদের অবস্থান অন্যদের জানাতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের প্রাণীদের যোগাযোগের আলাদা মাধ্যম রয়েছে। এ বিষয়ে আরিক কেরশেনবাউম বলেন, তোতাপাখি কথা বলে। তোতাপাখি অস্বাভাবিক ধরনের পাখি। পাখির বিবর্তনের ধারা এমন বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছে তারা। তোতাপাখি সত্যিই জটিল ও কঠিন পরিবেশে বাস করে। খাবার খোঁজাসহ নানা কঠিন কাজ করতে হয় তোতাপাখিদের। যে কারণে তারা আলাদা। অন্য পাখিরা আবার নিজেদের অন্যভাবে বিকাশ করেছে। যেমন রবিন পাখি সামাজিকভাবে দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। শব্দ করার শারীরিক ক্ষমতা ও বুঝতে পারার বুদ্ধিমত্তা রয়েছে তাদের। ঝাঁকে ঝাঁকে বাস করে বলে শব্দের ওপর নির্ভর করে এসব পাখি।
আরিক কেরশেনবাউম ২০২০ সালে ‘দ্য জুলজিস্টস গাইড টু দ্য গ্যালাক্সি’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। এই বইতে তিনি ভিনগ্রহে প্রাণীদের অস্তিত্ব রয়েছে বলে মতামত দেন। তিনি এবার প্রাণীদের যোগাযোগ ও ভাষা নিয়ে নতুন বই ‘হোয়াই অ্যানিমেলস টকস’ নামের বই প্রকাশ করেছেন। বইটিতে নিজেরে গবেষণার তথ্য তুলে ধরেছেন তিনি।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান