টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরির উদ্যোগ
১৯১২ সালের ১৫ এপ্রিল মধ্যরাতে আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায় টাইটানিক জাহাজ। সেই থেকে শত বছরের বেশি সময় ধরে আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে ডুবে রয়েছে জাহাজটি। আর তাই টাইটানিকের রহস্য জানতে উদ্গ্রীব বিজ্ঞানীরা। সর্বশেষ ২০১০ সালে টাইটানিকের ধ্বংসস্থলের একটি ‘সনার’ মানচিত্র তৈরি করা হয়েছিল। এবার টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের বিস্তারিত ফটোগ্রাফিক রেকর্ড সংগ্রহ করে একটি ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) মডেল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
টাইটানিক জাহাজের ডুবে যাওয়ার স্থান ১৯৮৫ সালে আবিষ্কৃত হয়। এরপর নানা রকমের গবেষণা পরিচালনা করা হলেও টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কোনো মানচিত্র তৈরি করা হয়নি। ভাঙা জাহাজের কিছু অংশ বোঝা গেলেও, আশপাশের ধ্বংসাবশেষের ছবি এখনো অজানা। আর তাই নতুন এ উদ্যোগের আওতায় টাইটানিকের আশপাশের ধ্বংসাবশেষের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করা হবে দুটি রিমোট চালিত যান। হাইডেফিনেশন অপটিক্যাল ক্যামেরা ও বিশেষ ধরনের লাইটযুক্ত যান দুটি সেন্সর স্ক্যানারের মাধ্যমে পানির নিচে থাকা বিভিন্ন বস্তুর বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
অভিযানের ইমেজিং প্রোগ্রামের প্রধান ইভান কোভাকস বলেন, ‘ক্যামেরা সিস্টেমের মাধ্যমে মিলিমিটার মাত্রার রেজল্যুশনের ছবিও তৈরি করা যাবে। আবহাওয়া, কম্পিউটার, রোবট আর ক্যামেরা সব ঠিকঠাক কাজ করলে আমরা টাইটানিকসহ ধ্বংসাবশেষের সর্বোচ্চ মাত্রার ডিজিটাল ছবি সংগ্রহ করতে পারব। আক্ষরিক অর্থে বালুর দানাও গণনা করতে পারব আমরা। রোবট যানের ম্যাগনেটোমিটার প্রথমবারের মতো টাইটানিকের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এই যন্ত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থানে সব ধাতব পদার্থকে শনাক্ত করতে পারবে।’
আটলান্টিক মহাসাগরের প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ফুট নিচে অবস্থান করছে টাইটানিক। ফলে চাইলে টাইটানিকের কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব হয় না। গত বছর টাইটানিক দেখতে গিয়ে পাঁচজন অভিযাত্রী মারা যান, যা ওশান গেট দুর্ঘটনা নামে পরিচিত। ওশান গেট দুর্ঘটনার পর টাইটানিকের রহস্য জানতে এটিই প্রথম বাণিজ্যিক মিশন। এই অভিযান পরিচালনা করছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান আরএমএস টাইটানিক ইনকর্পোরেটেড। অভিযান পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের আশপাশে থাকা বিভিন্ন উপাদান সংগ্রহও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র: বিবিসি