বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক ফিউশন চুল্লি তৈরি করেছে ফ্রান্স

পারমাণবিক ফিউশন চুল্লির ফাইল ছবিরয়টার্স

১৯টি বিশাল কয়েল দিয়ে তৈরি একাধিক টরয়েডাল চুম্বকের সমন্বয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক ফিউশন চুল্লি তৈরি করেছে ফ্রান্স। ইন্টারন্যাশনাল ফিউশন এনার্জি প্রজেক্ট ফিউশন রিঅ্যাক্টর নামের এই পারমাণবিক ফিউশন চুল্লি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার। বিশাল এই চুল্লি তৈরিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারতসহ ৩৫টি দেশ সমন্বিতভাবে কাজ করেছে। পারমাণবিক ফিউশন চুল্লি তৈরির কাজ শেষ হলেও এটি ২০৩৯ সাল নাগাদ চালু করা হতে পারে।

ফিউশন আর ফিশন শব্দের মধ্যে কিন্তু বেশ পার্থক্য রয়েছে। ফিউশন পদ্ধতি বর্তমানে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার করা হয়। একটি পরমাণুকে বিভক্ত করার পরিবর্তে দুটি পারমাণবিক নিউক্লিয়াসকে যুক্ত বা ফিউজ করে এ পদ্ধতি। আর তাই নতুন এই চুল্লিতে ফিউশন শক্তির মাধ্যমে জ্বালানি তৈরি করতে চান বিজ্ঞানীরা। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে চান তাঁরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বিশাল এই চুল্লিতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী চুম্বক রয়েছে। এই চুম্বকের চৌম্বকক্ষেত্র পৃথিবীকে ঘিরে রাখা চৌম্বকক্ষেত্রের চেয়ে ২ লাখ ৮০ হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী।

আরও পড়ুন

গত ৭০ বছর ধরে বিজ্ঞানীরা পারমাণবিক ফিউশনের শক্তিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। এই প্রক্রিয়ায় হিলিয়াম তৈরি করতে খুব বেশি উচ্চ চাপ ও তাপমাত্রায় হাইড্রোজেন পরমাণুকে ফিউজ করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় নক্ষত্র পদার্থকে আলো ও তাপে রূপান্তরিত করে। এই প্রক্রিয়ায় কোনো গ্রিনহাউস গ্যাস বা দীর্ঘস্থায়ী তেজস্ক্রিয় বর্জ্য উৎপাদন হয় না।

ফিউশন রিঅ্যাক্টরের নকশায় টোকামাক নামের বিশেষ একটি যন্ত্র থাকে। এই যন্ত্রে শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্রসহ একটি ডোনাট আকৃতির চুল্লি থাকে। চেম্বারের ভেতরে প্লাজমা উত্তপ্ত করা হয়। পারমাণবিক ফিউশন ঘটানোর জন্য প্লাজমার কয়েল অনেক সময় ধরে রাখা বেশ চ্যালেঞ্জিং।

সূত্র: লাইভ সায়েন্স