‘বোমা ঘূর্ণিঝড়’ কী, কোথায় বেশি হয়

বোমা ঘূর্ণিঝড়ফাইল ছবি: রয়টার্স

প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে আমরা বেশ পরিচিত। দেশ বা অবস্থান ভেদে ঘূর্ণিঝড়ের বাহারি বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়। নাম যাই হোক না কেন, ধরন এবং ক্ষতির মাত্রা বিবেচনায় এক ধরনের ঘূর্ণিঝড়কে ‘বোমা ঘূর্ণিঝড়’ নামে ডেকে থাকেন বিজ্ঞানীরা। বোমা ঘূর্ণিঝড়ে হারিকেনের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। এর ফলে ঘূর্ণিঝড়টি বেশ বিপজ্জনক এবং ক্ষয়ক্ষতিও বেশি হয়ে থাকে।

 বোমা ঘূর্ণিঝড়কে বিস্ফোরক সাইক্লোজেনেসিস বা বোমোজেনেসিসও বলা হয়। এ ধরনের ঘূর্ণিঝড় দ্রুত তীব্রতর হয়। সাধারণভাবে ঘূর্ণিঝড় একটি নিম্নচাপ সংক্রান্ত আবহাওয়া অবস্থা। যেখানে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ তার কেন্দ্রে আশপাশের এলাকার তুলনায় কম থাকে, বাতাস ভেতরের দিকে ঘুরতে থাকে। ঘূর্ণিঝড় উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘোরে। বোমা ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতি দ্রুত হারিকেন শক্তিতে পৌঁছাতে পারে। এই ঝড় শীতকালে তৈরি হয় ও প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাডিসনের উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জন মার্টিনের মতে, এমন ঘূর্ণিঝড়ের জীবনকাল প্রায় এক সপ্তাহের মতো থাকে। এই সময়ের মধ্যে প্রায় চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ তীব্রতায় দেখা যায়।

বোমা ঘূর্ণিঝড় বেশির ভাগ সময় মহাসাগরের ওপরে ও সাধারণত উভয় গোলার্ধে ঠান্ডা ঋতুতে দেখা যায়। উত্তর গোলার্ধের জন্য মোটামুটি নভেম্বর থেকে মার্চ ও দক্ষিণ গোলার্ধে মোটামুটি মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত,এমন বোমা ঝড় দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে উষ্ণ সমুদ্রের স্রোত যেখানে বিদ্যমান সেখানে এসব ঝড় তৈরি হচ্ছে। জাপানের কুরোশিও ও উত্তর আমেরিকার উপসাগরীয় প্রবাহে এমন ঝড় বেশি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জন নক্সের মতে, বোমা ঘূর্ণিঝড় খুব ধ্বংসাত্মক হতে পারে। এসব ঝড় জাহাজে পণ্য পরিবহনে বিশেষ বিপদ ডেকে আনতে পারে।

মধ্য অক্ষাংশে গড় সমুদ্র-স্তরের বায়ুমণ্ডলীয় চাপ প্রায় ১০১২ মিলিবার। ঘূর্ণিঝড়ের সময় তা ৯৮০ মিলিবার হতে পারে। অন্যদিকে, বোমা ঘূর্ণিঝড়ের সময় ৯৫০ মিলিবার বা তার চেয়ে কম হতে পারে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন ঘটনা ঘন ঘন ঘটছে। বিভিন্ন চরম আবহাওয়ার ঘটনার কারণে বোমা ঘূর্ণিঝড় তীব্র হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি