বিভিন্ন ধরনের রোগের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক থাকায় শরীরে এক রোগের সংক্রমণ ঘটলে অন্য রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি থাকে। নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, যক্ষ্মার সংক্রমণে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় স্বাস্থ্য তথ্যভান্ডারে থাকা ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সালের তথ্য পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির গবেষকেরা। ২৭ এপ্রিল থেকে স্পেনের বার্সেলোনায় শুরু হতে যাওয়া ইউরোপিয়ান কংগ্রেস অব ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস সম্মেলনে এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হবে।
গবেষণায় ৭২ হাজারের বেশি যক্ষ্মা রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যক্ষ্মা ও ক্যানসারের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যেসব ব্যক্তির শরীরে বর্তমানে বা অতীতে যক্ষ্মায় সংক্রমণ ঘটেছে; তাদের ফুসফুস, রক্ত, গাইনোকোলজিক্যাল, কোলোরেক্টাল ক্যানসারসহ বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁদের ধূমপান, অ্যালকোহল পানের অভ্যাস রয়েছে বা দীর্ঘস্থায়ী লিভার রোগ আছে; তাঁদের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। গবেষণার নেতৃত্ব দেন দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল হেলথ ইনস্যুরেন্স সার্ভিসের জিওন কিম ও হ্যানিয়াং ইউনিভার্সিটির গবেষক জিন্নাম কিম। জিওন কিম বলেন, ‘আমরা দেখেছি যক্ষ্মা ক্যানসারের জন্য বড় একটি ঝুঁকির কারণ। শুধু ফুসফুসের ক্যানসারই নয়, বলা যায় প্রায় সব ধরনের ক্যানসার হতে পারে যক্ষ্মার জীবাণুর কারণে। আর তাই যক্ষ্মায় আক্রান্ত রোগীদের ক্যানসার শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা উচিত।
গবেষণায় দেখা গেছে, যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮০ শতাংশের পরে ক্যানসার হয়েছে। গবেষকদের তথ্যমতে, যক্ষ্মায় আক্রান্তদের মধ্যে সাধারণ মানুষের তুলনায় ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি ৩.৬ গুণ, রক্তের ক্যানসারের ঝুঁকি ২.৪ গুণ ও নারীদের রোগ–সংক্রান্ত ক্যানসারের ঝুঁকি ২.২ গুণ বেশি। শুধু তা–ই নয়, কোলোরেক্টাল, থাইরয়েড, খাদ্যনালি ও পাকস্থলীর ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি হয়ে থাকে।
সূত্র: মেডিকেল এক্সপ্রেস