পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরে থাকা শিলার নমুনা সংগ্রহ করেছেন বিজ্ঞানীরা
আটলান্টিক মহাসাগরের সমুদ্রতলের ৪ হাজার ১৬০ ফুট নিচ থেকে শিলা পাথর সংগ্রহ করেছেন যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ভূতত্ত্ববিদ। তাঁদের দাবি, সমুদ্রতল খনন করে পাওয়া এই পাথর এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরতম শিলা। এই শিলা পরীক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীপৃষ্ঠের সবচেয়ে বড় স্তর সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন ভূতত্ত্ববিদরা। এরই মধ্যে শিলাটির বিভিন্ন তথ্য সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ভূতত্ত্ববিদদের তথ্যমতে, পৃথিবীর মোট আয়তনের প্রায় ৮০ শতাংশই ‘ম্যান্টল’ স্তর দিয়ে আবৃত। ম্যান্টল মূলত সিলিকেট পাথরের একটি স্তর, যা পৃথিবীর ভূত্বক ও উত্তপ্ত কেন্দ্রের মধ্যে অবস্থান করছে। বিশাল মধ্য–আটলান্টিক রিজের ঠিক পশ্চিমে আটলান্টিকের মাঝখানে ‘আটলান্টিস ম্যাসিফ’ নামে একটি ডুবো পর্বত রয়েছে, যেখানে ম্যান্টল স্তর প্রায় উন্মুক্ত অবস্থায় দেখা যায়।
ইন্টারন্যাশনাল ওশান ডিসকভারি কর্মসূচির অংশ হিসেবে আটলান্টিক মহাসাগরের সমুদ্রতলে থাকা শিলা সংগ্রহে ব্যবহার করা হয়েছে জয়ডেস রেজল্যুশন নামে একটি খননকারী জাহাজ। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সমুদ্রপৃষ্ঠের তলদেশে থাকা ম্যান্টল স্তর ড্রিল করা হয়। এ বিষয়ে ওয়েলসের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ জোহান লিসেনবার্গ বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরে থাকা শিলার খোঁজ পেয়েছি।’
ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ববিদ অ্যান্ড্রু ম্যাককেগ বলেন, ‘গর্ত শুরু করতে আমাদের বেশ কিছুটা অসুবিধা হয়েছিল। সমুদ্রের পানি ও তলদেশে বা তার কাছাকাছি ম্যান্টল শিলার মধ্যে হাইড্রোজেন নির্গত হয়। এর ফলে মিথেনের মতো যৌগ তৈরি হয়, যা জীবাণুর জীবন বিকাশ করে। এভাবে পৃথিবীতে জীবনের উৎপত্তি হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। আমাদের সংগ্রহে থাকা ম্যান্টল শিলা প্রাণের বিকাশ সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে সহায়তা করবে।’
সূত্র: রয়টার্স