আটলান্টিক মহাসাগর যেভাবে বদলে যাবে
আটলান্টিক মহাসাগরের বদলে যাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আটলান্টিক মহাসাগরের জিব্রাল্টার স্ট্রেইটের নিচের সাবডাকশন জোন (দুটি মহাদেশের টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল) ভবিষ্যতে বড় আকারের আটলান্টিক সাবডাকশন সিস্টেম গঠন করবে। এর ফলে আটলান্টিক রিং অব ফায়ার তৈরি হবে ভবিষ্যতে। দুই কোটি বছরের মধ্যে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মহাসাগরের জীবনচক্র অনেকটা মানুষের মতো। মহাসাগর তৈরির পর ধীরে ধীরে বড় হয়, তারপর একদিন বদলে যায়। তবে মহাসাগর বদলে যেতে কয়েক কোটি বছর সময় প্রয়োজন হয়। এই প্রক্রিয়াকে উইলসন সাইকেল বলা হয়। প্রায় ১৮ কোটি বছর আগে বিশাল মহাদেশ প্যানজিয়া ভেঙে তৈরি হয়েছিল আটলান্টিক মহাসাগর। বিশাল এই মহাসাগরও একদিন বদলে যাবে। একটি টেকটোনিক প্লেট অন্যটির নিচে প্রবেশ করতে থাকলে সাবডাকশন জোন তৈরি হয়। ভবিষ্যতে ভূমধ্যসাগরের জিব্রাল্টার প্রণালির নিচের সাবডাকশন জোন আটলান্টিকের ভেতরে প্রবেশ করবে। তখন আটলান্টিক সাবডাকশন সিস্টেম গঠিত হয়ে আটলান্টিক রিং অব ফায়ার তৈরি হবে। নতুন সাবডাকশন জোন তৈরির কারণেই মূলত আটলান্টিক মহাসাগরের বৃদ্ধি কমে যাবে।
জিওলজি জার্নালে আটলান্টিক মহাসাগরের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। পর্তুগালের লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জোয়াও ডুয়ার্তে বলেন, এই বিষয়কে সাবডাকশন ইনভেশন বলে। উন্নত মডেলিং টুলস ও সুপার কম্পিউটারের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। জিব্রাল্টারের গঠনকে বিশদভাবে বিশ্লেষণ করে আটলান্টিকের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে। গত কয়েক কোটি বছরে পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ ধীরগতিতে এগিয়েছে। এই ধীরগতি আরও দুই কোটি বছর পর্যন্ত চলবে। এরপরই আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে পরিবর্তন দেখা যাবে। প্রথমে আটলান্টিকের পূর্বদিকের ভূত্বকের পরিবর্তন শুরু হবে। ধীরে ধীরে আটলান্টিক নিজেই বদলে যেতে শুরু করবে। আটলান্টিকের দুপাশে ক্যারিবিয়ানের লেসার অ্যান্টিলিস ও স্কোটিয়া আর্ক নামের আরও দুটি সাবডাকশন জোন রয়েছে।
সূত্র: ফিজিস ডটঅর্গ