২০২৫ হবে গুগলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বছর

উদ্ভাবনী ক্ষমতার ওপর জোর দিচ্ছেন গুগলের সিইও সুন্দর পিচাইছবি: রয়টার্স

২০২৫ সালকে ‘পরিবর্তনের বছর’ হিসেবে উল্লেখ করে কর্মীদের আরও উদ্যমী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা ও বৈশ্বিক নিয়ন্ত্রক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রতিষ্ঠানটির উপযুক্ত অবস্থান নিশ্চিত করতে কাজের গতি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি এক কৌশলগত বৈঠকে সুন্দর পিচাই বলেন, ‘২০২৫ সাল গুগলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে বছরটি পরিবর্তনেরও। আমাদের লক্ষ্য হবে প্রযুক্তির সুফল কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীদের বাস্তব সমস্যাগুলোর কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা।’

গুগল তাদের নতুন এআই মডেল জেমিনি নিয়ে বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই মডেল ও এর অ্যাপ্লিকেশনকে গুগলের পরবর্তী সফল পণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ জন্য জেমিনিকে ব্যবহারকারীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়াই হবে আগামী বছরের প্রধান লক্ষ্য। পিচাই কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘২০২৫ সালে জেমিনির বিস্তৃতি আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এটি এমন একটি পণ্য, যা ৫০ কোটির বেশি ব্যবহারকারী অর্জনের ক্ষমতা রাখে।’

এআই প্রযুক্তির প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে গুগলের প্রতিযোগিতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এমন সময়ে এই পরিকল্পনা সামনে এনেছেন পিচাই। এদিকে ওপেনএআই তাদের নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই সঙ্গে পারপ্লেক্সিটি সম্প্রতি ৯০০ কোটি ডলারের মূল্যায়নে ৫০ কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে।

অবশ্য কিছু ক্ষেত্রে গুগলের পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন পিচাই। তবে তিনি গুগলের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী। পিচাই বলেন, ‘ইতিহাসে দেখা গেছে, সব সময় প্রথম হওয়া জরুরি নয়। বরং ভালোভাবে কাজ করে শ্রেষ্ঠ মানের পণ্য তৈরি করাই গুরুত্বপূর্ণ।’

গুগল এখন বড় ধরনের নিয়ন্ত্রক প্রতিবন্ধকতারও মুখোমুখি। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টের সার্চ মার্কেট মনোপলি মামলা এবং ক্রোম ব্রাউজার ও বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি নিয়ে তদন্ত এখন চলমান। এ প্রসঙ্গে পিচাই বলেন, ‘আমাদের আকার ও সাফল্যের কারণে বৈশ্বিক নজরদারির আওতায় থাকা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়।’

একই সঙ্গে গুগলের শুরুর দিনগুলোর ‘সৃজনশীল এবং কৃচ্ছ্রসাধন’ মনোভাব ফিরে পাওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন পিচাই। তিনি বলেন, ‘অল্প সম্পদ দিয়েই সৃষ্টিশীলতার উন্মেষ ঘটানো সম্ভব। সব সমস্যার সমাধান কর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে হয় না। দক্ষতা ও উদ্ভাবন ক্ষমতার ওপরই নির্ভর করতে হবে।’ কর্মীদের আরও উদ্ভাবনী এবং লক্ষ্যভিত্তিক হতে আহ্বান জানিয়ে পিচাই উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক ব্যয় সাশ্রয় ও কর্মীর সংখ্যা হ্রাসের উদ্যোগ প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘমেয়াদি কৌশল বাস্তবায়নের অংশ। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, সীমিত সম্পদ দিয়েই সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করা।’

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া