টেলিটক সংস্কার করার কিছু প্রস্তাব

ফোন কল ও ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহারের খরচ কম হলেও মানসম্পন্ন নেটওয়ার্ক না থাকার পাশাপাশি রিচার্জ জটিলতার কারণে মানুষের আশা পূরণ করতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মাসিক গ্রাহকসংখ্যার তথ্যমতে, বর্তমানে ৬৫ লাখ গ্রাহক রয়েছেন টেলিটকের, যা অন্যান্য মোবাইল অপারেটরের তুলনায় খুবই কম। আর তাই টেলিটকের সেবার মান বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

আজ বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যাত্রা শুরুর পর থেকে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড দেশের মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি। সীমিত ফোর–জি নেটওয়ার্ক, মাঠপর্যায়ে বিক্রি কার্যক্রমের উদাসীনতা, দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামো, স্বচ্ছতার অভাবসহ গত রাজনৈতিক সরকারের টেলিটক নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবের কারণে মোবাইল অপারেটরটি দেশের মানুষের চাহিদা ঠিকমতো পূরণ করতে পারেনি। আর তাই টেলিটকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করে সংস্কার আনতে হবে।

  • টেলিযোগাযোগ খাত–সংশ্লিষ্ট কারিগরি ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় দক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে টেলিটকের পরিচালনা বোর্ড সংস্কার করতে হবে।

  • টেলিটকের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ টেলিটক’ করতে হবে, যার মাধ্যমে টেলিটকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালনে অনুপ্রেরণা পাবেন।

  • টেলিটকের ধীরগতিতে চলা নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করে নেটওয়ার্কের পরিধি বাড়াতে হবে। ভবিষ্যতে দেশের স্বার্থ ও টেলিটকের ব্যবসায়িক দিক বিবেচনা করে বিনিয়োগ গ্রহণ করতে হবে। টেলিটকের নেটওয়ার্ক অন্যান্য অপারেটরের মতো দেশের সব জায়গায় স্থাপন করতে হবে।

  • গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনায় কম খরচে নির্দিষ্ট মেয়াদ ছাড়া ফোন কল ও ডেটা প্যাকেজ চালু করতে হবে। এ ছাড়া গ্রাহকসংখ্যা বাড়ানোর জন্য বিপণন কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি ব্যবসায়িক পরিধি বাড়াতে হবে। বিপণন ও বিক্রয় বিভাগগুলোকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে ঢেলে সাজাতে হবে।

  • ব্যাটারি ব্যাকআপ সুবিধা না থাকায় টেলিটকের অনেক টাওয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত ত্রুটিপূর্ণ ব্যাটারি পরিবর্তন করে টাওয়ার সচল রাখতে হবে।

  • মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে টেলিটকের প্রশাসনিক কাঠামো সংস্কার করা প্রয়োজন। কাজের গতি ও স্বচ্ছতা, দক্ষ ও সৎ কর্মকর্তাদের অন্তর্ভুক্ত করে ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে হবে।

  • গ্রাহকেরা যাতে দেশের সব এলাকায় টেলিটকের সিম ও রিচার্জ কিনতে পারেন, সে জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া সরকারের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টেলিটকের সিম ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

  • গত সরকারের সময় টেলিটক বিক্রি করার উদ্যোগ বাতিল করে অপারেটরটিকে জনসাধারণের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এই বিক্রয়প্রক্রিয়ায় কে বা কারা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতেন, তাদের নাম উন্মোচনের পাশাপাশি শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

  • টেলিটকের ফাইভ-জি প্রকল্পের দুর্নীতি অনিয়ম দ্রুত তদন্ত করতে হবে।

  • বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) কর্মকর্তাদের টেলিটকে নিয়োগ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।