চাকরি মেলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হলো
বিশেষভাবে সক্ষম বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মর্যাদাপূর্ণ জীবিকা ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে চাকরি মেলা অনুষ্ঠিত হলো। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) উদ্যোগে ও সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজঅ্যাবিলিটির (সিএসআইডি) সহযোগিতায় আজ শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর প্রধান কার্যালয়ে দিনব্যাপী চলে এই মেলা।
মেলার উদ্বোধন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক। এ সময় তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সঙ্গে সবার সেতুবন্ধ তৈরি করা, তাঁদের আত্মনির্ভরশীল করার জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। জীবনের সব ক্ষেত্রে সবকিছুতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথা মাথায় রেখেই স্থাপনা নির্মাণ করতে হবে। কারণ, দেশকে এগিয়ে নিতে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে সমান সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে। জেলা–উপজেলা পর্যায়ে হাইটেক পার্কগুলোয় যে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কাজ করবে, সেখানে একজন করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির চাকরির ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, সরকারি হিসাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা ৩০ লাখের বেশি। তাই বাংলাদেশ সরকার এই বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য ভাবতে শুরু করেছে। বিভিন্ন প্রকল্প, প্রতিযোগিতা, চাকরি মেলাসহ নানা আয়োজনের মাধ্যমে তাঁদের সামনে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। আগে না থাকলেও বর্তমানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক ও সচিব শেখ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সব সময় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পাশে থাকার চেষ্টা এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর রয়েছে। সবাইকে আমাদের উন্নয়নের ধারায় আনতে হবে এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে আমরা চলতে পারব না।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিএসআইডির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, বিসিসির নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যাঁরা এ মেলায় এসেছেন, তাঁদের চাকরি প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনিশ্চয়তায় না রেখে তাঁদের সুযোগ দিতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশে প্রত্যেক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে ‘স্মার্ট’ করার ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
চাকরি মেলা উপলক্ষে সারা দেশ থেকে বিশেষভাবে সক্ষম পাঁচ শতাধিক মানুষ অনলাইনে জীবনবৃত্তান্ত (সিভি) জমা দিয়েছিলেন। মেলায় সরাসরি উপস্থিত হয়েও সিভি জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল। যাঁদের তথ্যপ্রযুক্তি–দক্ষতা রয়েছে, তাঁদের নিয়োগ দিতে মেলাতেই সাক্ষাৎকার নেয় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ডেটা এন্ট্রি, গ্রাফিকস ডিজাইন, অ্যানিমেশন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল বিপণন, কল সেন্টার এজেন্ট, প্রোগ্রামিংসহ নানা রকম কাজের জন্য প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নিয়োগের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে জানান মেলার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে চাকরি মেলা ২০২২–এর শীর্ষ চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সম্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করে জেনওয়েবটু লিমিটেড।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সাল থেকে বিসিসির মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিনা মূল্যে আইসিটি প্রশিক্ষণ চালু করা হয়। প্রশিক্ষণ নেওয়া ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে চাকরিপ্রার্থী ও চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে ২০১৫ সাল থেকে চাকরি মেলার আয়োজন করা হচ্ছে।