প্রযুক্তির এই দিনে: ১০ নভেম্বর
মাইক্রোসফট উইন্ডোজের প্রথম ঘোষণা দিলেন বিল গেটস
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ঘোষণা দেন। ২০ নভেম্বর এটি প্রকাশিত হয়।
১০ নভেম্বর ১৯৮৩
মাইক্রোসফট উইন্ডোজের প্রথম ঘোষণা দিলেন বিল গেটস
কম্পিউটারের গুরুগম্ভীর খোলস ছেড়ে তখন বেরিয়ে আসছে আইবিএম। পিসি দিয়ে ঘরোয়া কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু অ্যাপল কম্পিউটার তখন এগিয়ে। বিশেষ করে ছবিভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম, অর্থাৎ গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেসের কারণে অ্যাপল ম্যাকিন্টোশ কম্পিউটার জনপ্রিয় সে সময়। ওদিকে দামের দিক থেকে সাশ্রয়ী হলেও আইবিএমের পারসোনাল কম্পিউটারে তখনো কাজ করতে হয় লিখে লিখে নির্দেশ দিয়ে। এমন সময় ছবিভিত্তিক কম্পিউটার চালানোর সফটওয়্যার অ্যাপল লিসার মতো অপারেটিং সিস্টেম আনার ঘোষণা দেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। এর নাম উইন্ডোজ। ২০ নভেম্বর এটি প্রকাশিত হয়। তবে অনেকবার তারিখ পিছিয়ে সবার জন্য উইন্ডোজ ১.০ উন্মুক্ত হয় ১৯৮৫ সালে। এমএস ডস থেকে উইন্ডোজ ছিল পারসোনাল কম্পিউটারের জন্য একটি বৈপ্লবিক সফটওয়্যার। এই অপারেটিং সিস্টেমে পুল–ডাউন মেন্যু, মাউসের ব্যবহার, পর্দায় ছকের মতো একসঙ্গে একাধিক সফটওয়্যার দেখার সুবিধা এবং একসঙ্গে একাধিক সফটওয়্যার চালানোর সুবিধা ছিল। উইন্ডোজ ১.০ প্রকাশিত হওয়ার পরও উইন্ডোজ সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা পায় না। এই গ্রহণযোগ্যতা আসে উইন্ডোজ ৩.০ অপারেটিং সিস্টেমে।
পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারের উপযোগী উইন্ডোজের বিশেষ সংস্করণ বের হয়। যেমন ভোক্তাদের জন্য উইন্ডোজ এনটিম সার্ভারের জন্য উইন্ডোজ সার্ভার ও এমবেডেড যন্ত্রের জন্য উইন্ডোজ আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস)। উইন্ডোজ পরিবারের উইন্ডোজ ৯এক্স, উইন্ডোজ মোবাইল ও উইন্ডোজ ফোন কয়েক বছর চলার পর বন্ধ হয়ে যায়।
সবকিছুর পরও উইন্ডোজ এখনো বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ডেস্কটপ কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম। গত মার্চ মাসে দেওয়া স্ট্যাট কাউন্টারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে অপারেটিং সিস্টেমের বাজারের ৭০ শতাংশ উইন্ডোজের দখলে। অ্যান্ড্রয়েডের ব্যাপক উত্থানের কারণে স্মার্টফোনে অনেকটাই পিছিয়ে আছে উইন্ডোজ। ২০২২ সাল পর্যন্ত উইন্ডোজের সর্বশেষ সংস্করণগুলো হলো পিসি ও ট্যাবলেট কম্পিউটারের জন্য উইন্ডোজ ১১, বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য উইন্ডোজ ১১ এন্টারপ্রাইজ ও সার্ভারের জন্য উইন্ডোজ সার্ভার ২০২২।
১০ নভেম্বর ১৯৫৯
এমএস ওয়ার্ডের স্রষ্টা রিচার্ড ব্রডির জন্ম
পৃথিবীর জনপ্রিয় সফটওয়্যারগুলোর একটি হলো মাইক্রোসফটের এমএস ওয়ার্ড। লেখালেখি করার এই সফটওয়্যারে স্রষ্টা রিচার্ড ব্রডি ১৯৫৯ সালের ১০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মূলত একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও লেখক। মাইক্রোসফটের ৭৭তম কর্মী ব্রডি ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের কারিগরি সহকারী। ব্রডি মাইক্রোসফটের অ্যাপ্লিকেশন বিভাগে প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যও ছিলেন। তিনি মাইক্রোসফটের প্রথম সি কম্পাইলার, নোটপ্যাডের মূল সংস্করণ এবং আইবিএম পিসির জন্য ওয়ার্ড প্রোগ্রাম লিখেছেন। ১৯৯২ সালে তিনি ডেটাবেজ সফটওয়্যার মাইক্রোসফট অ্যাকসেস নির্মাণ দলের নেতৃত্ব দেন। ব্রডির উল্লেখযোগ্য প্রকাশনা হলো গেটিং পাস্ট ওকে উইথ ভাইরাস অব দ্য মাইন্ড (১৯৯৫) ও গেটিং পাস্ট ওকে: দ্য সেলফ-হেল্প বুক ফর পিপল হু ডোন্ট নিড হেল্প (১৯৯৩)।
১০ নভেম্বর ২০০৩
দেশে ভিওআইপি বৈধ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত
ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফোন করার সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল বাংলাদেশে উন্মুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০০৩ সালের ১০ নভেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভিওআইপি উন্মুক্ত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। একই বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ভিওআইপি পরিচালনার জন্য লাইসেন্স নীতিমালার শর্ত প্রণয়নের কাজ শুরু করে।
২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর প্রথম আলোর শিরোনাম প্রতিবেদনে জানা যায়, ভিওআইপি আইনের আওতায় না থাকার কারণে দেশে প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকার অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসা গড়ে উঠেছে। ভিওআইপি উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর ২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে তৎকালীন বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ড—বিটিটিবি (বর্তমানে বিটিসিএল) আন্তর্জাতিক ফোন কলের খরচ (কল রেট) কমিয়ে আনে।
সূত্র: কম্পিউটার হিস্ট্রি ডটওআরজি, কম্পিউটার হোপ, উইকিপিডিয়া ও প্রথম আলো