এবার পদত্যাগ করলেন বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ
দেশের সফটওয়্যার খাতের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি ও পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন রাসেল টি আহমেদ। আজ বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বেসিস কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। রাসেল টি আহমেদ বিভিন্ন মেয়াদে বেসিসের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য থাকার পাশাপাশি পরপর দুই মেয়াদে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
পদত্যাগপত্রে বেসিসের সব পরিচালক ও সদস্যের উদ্দেশে রাসেল টি আহমেদ বলেন, সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণে আমি বেসিসের সভাপতি ও নির্বাহী পরিষদের পরিচালক পদ থেকে পদ্যত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একই সঙ্গে আপনাদের ভালোবাসায় দেওয়া দায়িত্ব পুরো সময় পর্যন্ত পালন করতে না পারায় বেসিসের সব সদস্যের কাছে ক্ষমা চাইছি। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আমি সব সময় চেষ্টা করে যাব।
পদত্যাগের বিষয়ে আজ দুপুরে রাসেল টি আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বেসিসের পাঁচ মেয়াদের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছি। সদস্যদের ভালোবাসায় সর্বশেষ দুই মেয়াদে সভাপতিও ছিলাম। পেশাগত যেকোনো বিষয়ে প্রতিযোগিতা হতেই পারে, তবে সম্প্রতি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে নোংরা রাজনীতি করা হচ্ছে, যা আমি মেনে নিতে পারিনি। আর তাই আমি বেসিসের কার্যনির্বাহী কমিটির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দ্রুত অনুমোদন করার জন্য অনুরোধ করেছি। আশা করি, তারা আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করবেন।’
প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার ফ্যাসিবাদের দোসরমুক্ত করে বেসিসে প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে বক্তারা জানান, বেসিস এখন দুর্বৃত্তদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সংগঠনটির কার্যনির্বাহী কমিটিতে পলাতক ফ্যাসিবাদের দোসর ও তাদের প্রেতাত্মারা রয়েছে। তারা সংগঠনকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ব্যবহার না করে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যবহার করেছে। আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদের সহযোগী হয়ে এরা সীমাহীন লুটপাট চালিয়েছে। এমনকি ছাত্র–জনতা হত্যার সময় ৩ আগস্ট বেসিসে অনুষ্ঠান করে বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছে, বাংলাদেশে কোনো সমস্যা নেই। আর তাই অবিলম্বে বেসিস সভাপতিকে পদত্যাগ করতে হবে, অন্যথায় তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
গত মে মাসে অনুষ্ঠিত বেসিসের ২০২৪–২৬ মেয়াদের নির্বাহী পরিষদের নির্বাচনে রাসেল টি আহমেদের নেতৃত্বাধীন ‘ওয়ান টিম’ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। বেসিসের ১১টি পদে তিনটি প্যানেল ৩৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। আওয়ামী সরকারের পতনের পর এরই মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি, ই–কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই–ক্যাব) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনটাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)–এর সভাপতিরা পদত্যাগ করেছেন।