ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে সাইবার বুলিং বন্ধে কাজ করছে মেটা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে ফেসুবক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে সবচেয়ে বেশি। তরুণেরা যাতে নিরাপদ পরিবেশে আরও সুন্দরভাবে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে পারেন, সে জন্য ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে কিশোর বয়সীরা যাতে সাইবার বুলিংয়ের শিকার না হয়, সে বিষয়েও কাজ করছে মেটা। এ বিষয়গুলো জানাতে আজ মঙ্গলবার সকালে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মেটা।
ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ায় ফেসবুকের সেফটি সিকিউরিটি ম্যানেজার প্রিয়াঙ্কা বালা বলেন, ‘মানসিক স্বাস্থ্য, শিশু মনস্তত্ত্ব, ডিজিটাল লিটারেসিসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করে আমরা বিভিন্ন ফিচার ও টুল তৈরি করেছি। ফলে সবার জন্য নিরাপদে ও দায়িত্বশীলভাবে অনলাইনে যুক্ত হওয়া সহজ হয়।’
প্রিয়াঙ্কা জানান, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট খোলার আগে ব্যবহারকারীর বয়স অবশ্যই ১৩ হতে হবে। সর্বনিম্ন বয়সসীমার নিচে কোনো ব্যক্তির অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেলে সঙ্গে সঙ্গে মুছে দেবে (ডিলিট) দেবে কর্তৃপক্ষ। তবে বয়সসীমা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে স্পষ্ট কোনো ধারণা দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।
প্রিয়াঙ্কা বালা তাঁর আলোচনায় তুলে ধরেন, যদি ১৮ বছরের কম বয়সী কেউ তার বয়স ১৮ বছরের বেশিতে পরিবর্তন করতে চায়, তাকে নিজের পরিচয়পত্র আপলোড করে অথবা ভিডিও সেলফি রেকর্ড করে নিজের বয়স যাচাই করিয়ে নিতে হবে। একই সঙ্গে মা-বাবারা ‘ফ্যামিলি সেন্টার অ্যাকসেস’ করে নিজের কিশোর-কিশোরী সন্তানের সঙ্গে টুল সেটআপ করে নিতে পারেন। ফলে তাঁরা ইনস্টাগ্রামে সন্তানের কার্যক্রম তদারক করতে পারেন।
২০২১ সাল থেকে ১৬ বছরের নিচে যে কেউ ইনস্টাগ্রামে যোগ দিলে তার অ্যাকাউন্ট ‘প্রাইভেট অ্যাকাউন্ট’–এ পরিণত হয়। অপ্রাপ্তবয়স্করা ফেসবুকে নতুন অ্যাকাউন্ট খুললে তাদের অ্যাকাউন্টে ‘ফ্রেন্ডস’ অপশন দেওয়া থাকে। তাদের অ্যাকাউন্টে ‘পাবলিক’ অপশনটি থাকে না। ফলে তারা কোনো ছবি বা পোস্ট দিলে, সেগুলো সবাই দেখতে পাবে না। শুধু তাদের প্রোফাইলে যুক্ত থাকা বন্ধুরা দেখতে পাবে। অপ্রাপ্তবয়স্ক কেউ ‘পাবলিক’ অপশন দিয়ে কিছু শেয়ার করতে চায়, তাকে সেটিংসে গিয়ে অপশনটি চালু করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের ‘পাবলিক’ হিসেবে শেয়ার করার অর্থও জানিয়ে দেয় ফেসবুক।
সংবাদ সম্মেলনে প্রিয়াঙ্কা বালা বলেন, ‘গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কিশোর-কিশোরীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিজ্ঞাপনদাতারা শুধু বয়স ও স্থান (লোকেশন) ব্যবহার করতে পারছেন। টার্গেটিং অপশনের তালিকা থেকে আমরা জেন্ডার (লিঙ্গ) সরিয়ে দিয়েছি। গত বছর ইন্টারেস্ট ও অন্যান্য অপশনও সরিয়ে দিয়েছি। বয়স ও স্থানের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে কিশোর-কিশোরীরা তাদের বয়সের উপযুক্ত বিজ্ঞাপন দেখতে পাচ্ছে। এর মাধ্যমে তাদের অবস্থানস্থলের আশপাশে প্রাপ্ত পণ্য ও সেবার বিজ্ঞাপন তাদের কাছে পৌঁছানোও নিশ্চিত করা যায়। এ ছাড়া কিশোর-কিশোরীদের আগের এনগেজমেন্ট, লাইক দেওয়া ইনস্টাগ্রাম পোস্ট বা ফেসবুক পেজ, তাদের দেখা বিজ্ঞাপনের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না।’
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে সাইবার বুলিং বা হয়রানি বন্ধেও মেটা কাজ করছে। কিশোর–কিশোরীদের জনপ্রিয় মাসিক ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’র সঙ্গে মিলে মেটা সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে বলে জানান প্রিয়াঙ্কা বাল্লা। সম্মেলনে সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কা থেকে মেটার বেশ কয়েকজন কর্মী যুক্ত ছিলেন।