শিশুদের বর্ণমালা ও শব্দ শেখাতে গেম তৈরি করেছেন স্নাতক শ্রেণির ছাত্র রাব্বি
অনেক অভিভাবকই শিশুদের শান্ত রাখতে স্মার্টফোনে কার্টুন বা ভিডিও গেম চালু করে দেন। ভিনদেশি ভাষায় তৈরি কার্টুন বা ভিডিও গেমগুলোর মাধ্যমে শিশুরা সাময়িকভাবে শান্ত থাকলেও ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে পড়ালেখা সময়মতো করতে চায় না তরা। এ সমস্যার সমাধান দেবে ‘দ্য কিডি-লার্ন উইথ ফান’ গেম। খেলার ছলে শিশুদের বাংলা ও ইংরেজি বর্ণমালা এবং শব্দ শেখাতে সক্ষম গেমটি তৈরি করেছেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. গোলাম রাব্বি।
রংপুরের ছেলে মো. গোলাম রাব্বি এখন ঢাকায় থাকেন। মা গৃহিণী, বাবা বিদেশে চাকরি করেন। এক ছেলে, এক মেয়ের পরিবার হলেও জন্মের পর থেকে অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। নবম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় অ্যানিমেশন-গেমস, শব্দগুলোর সঙ্গে পরিচিত হন রাব্বি। এ সময় আশপাশে থাকা শিশুদের গেমের প্রতি আগ্রহ দেখে নিজেই শিক্ষামূলক গেম তৈরির উদ্যোগ নেন। সেই থেকে শুরু। অ্যানিমেশন ও গেম তৈরি শেখার জন্য রাত জেগে মুঠোফোনে ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখতে থাকেন। অনলাইনে বিভিন্ন কোর্সও করেন। তবে হাতে–কলমে গেম তৈরি শেখার জন্য প্রয়োজন কম্পিউটার। বিষয়টি জানালেন পরিবারকে। তবে দুই বেলা খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খাওয়া পরিবারের পক্ষে সে সময় কম্পিউটার কিনে দেওয়ার সাধ্য ছিল না। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর অবশেষে কম্পিউটার হাতে পান রাব্বি। এরপর সম্পূর্ণ নিজের প্রচেষ্টায় তৈরি করেন ‘দ্য কিডি-লার্ন উইথ ফান’ গেম।
মো. গোলাম রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, শিশুদের খেলার ছলে বর্ণমালা এবং শব্দ শেখার সুযোগ দিতে তৈরি করা হয়েছে গেমটি। মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গেমটিতে বাংলা বর্ণমালা শেখার অ্যানিমেশন যুক্ত করা হয়েছে। রয়েছে ক্যানডি ও রেসিং গেমের আদলে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগও। জাতীয় শিক্ষানীতি ও নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে শিক্ষার্থীদের ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতেই এ উদ্যোগ। গুগল প্লেস্টোর থেকে সহজেই নামিয়ে ব্যবহার করা যাবে গেমটি। শিগগিরই গেমটির আইওএস সংস্করণ উন্মুক্ত করা হবে।
প্রাক্-প্রাথমিক বয়সের শিশুদের উপযোগী ভাষাভিত্তিক এই শিক্ষামূলক গেমটিতে এলোমেলো বিভিন্ন অক্ষর সাজাতে হয়। শুধু তাই নয়, দৌড়ে নির্দিষ্ট অক্ষর ছোঁয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন অক্ষর একত্রিত করে শব্দ তৈরির সুযোগও রয়েছে গেমটিতে। ফলে খেলার ছলে সহজেই নতুন অক্ষর ও শব্দ শিখতে পারে শিশুরা। শুধু তাই নয়, পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকায় সহজেই শিশুদের অক্ষর বা শব্দ শেখার মান সম্পর্কে জানতে পারেন অভিভাবকেরা।