গাড়ির টায়ার কেনার আগে যে বিষয়গুলো জানতে হবে
নিরাপদে গাড়ি চালানোর জন্য চাকার টায়ারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। টায়ারের গ্রিপ কমে গেলে পিছলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই গাড়ির চাকা পুরোনো হলে অথবা চাকার খাঁজকাটা অংশে যদি ন্যূনতম ফাঁকা না থাকে, তবে টায়ার পরিবর্তন করে নেওয়াই ভালো। কিন্তু টায়ারের মান সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকায় অনেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না, কোন ব্র্যান্ডের টায়ার কিনবেন। এই সুযোগে দোকানিরা বেশি লাভের আশায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মানহীন টায়ার ক্রেতার কাছে বিক্রি করেন। আর তাই কেনার আগে টায়ারের মান ভালো না মন্দ, তা জানার জন্য বেশ কিছু বিষয়ে জানতে হবে।
চাকার রেটিং
কেনার আগে প্রথমেই টায়ারের রেটিং সম্পর্কে জানতে হবে। টায়ারের সঙ্গে থাকা কাগজে রেটিংয়ের তথ্য লেখা থাকে। ‘এ’ (সবুজ) রেটিং থাকলে বুঝতে হবে এটি সর্বোচ্চ জ্বালানিসাশ্রয়ী। অপর দিকে ‘জি’ (লাল) রেটিং থাকলে টায়ারটি কম জ্বালানিসাশ্রয়ী। ‘ডি’ নামে আরও একটি রেটিং থাকে। এর অর্থ এই টায়ারগুলো ভারী যানবাহনে ব্যবহার করা হয়।
‘এ’ রেটিং পাওয়া টায়ার ‘জি’ রেটিংয়ের তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় করে। এর ফলে গাড়ির তেল কম খরচ হয়। ছবির ডানে থাকা রেটিংয়ে ভেজা রাস্তায় ব্রেক করার পর চাকা কত দ্রুত থামবে, সে তথ্য জানানো হয়েছে। ছবিতে ‘এ’ থাকায় বুঝতে হবে, ভেজা রাস্তায় ব্রেক করার জন্য চাকাটি সেরা মানের।
অনেক সময় গাড়ি চলার সময় চাকায় শব্দ হয়, এতে অনেকেই বিরক্ত হন। এ ক্ষেত্রে চাকাটি যত কম ডেসিবেল বা ডিবির হবে, তত কম শব্দ হবে। ছবিতে চাকাটির সম্পর্কে জানানো হয়েছে, এটি ৬৮ ডিবি শব্দ করে, যা বেশ মানসম্পন্ন।
উৎপাদনের তারিখ
টায়ারের মেয়াদ সর্বোচ্চ ছয় বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই টায়ার কেনার আগে উৎপাদনের সময় জানতে হবে। টায়ারের গায়ে উৎপাদনের তারিখ সাধারণত ২০২০ বা ২২২১ হিসেবে উল্লেখ করা থাকে। এখানে প্রথম দুটি সংখ্যা উৎপাদনের সপ্তাহ এবং পরের দুটি সংখ্যা উৎপাদনের বছরকে নির্দেশ করে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, টায়ারের গায়ে ৪৭০৮ লেখা রয়েছে, এর মানে হলো টায়ারটি ২০০৮ সালের ৪৭তম সপ্তাহে নানো হয়েছে, মানে নভেম্বর–ডিসেম্বর মাসে। টায়ারের গায়ে যদি ১৭২৩ লেখা থাকত, তাহলে বোঝা যেত, টায়ারটি ২০২৩ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে তৈরি করা হয়েছে।
টায়ারের আকার
গাড়ির ডান দরজার খুঁটির সঙ্গে একটি স্টিকার থাকে, সেখানে গাড়ির টায়ারের আকার লেখা থাকে। ভালো মাইলেজ ও স্বচ্ছন্দে ভ্রমণের জন্য গাড়ির মডেল অনুযায়ী সঠিক আকারের টায়ার ব্যবহার করতে হবে। ছবিতে টায়ারের গায়ে ১৯৫/৫৫ আর১৬ ৮৭ ভি লেখা রয়েছে। এখানে ১৯৫ মানে টায়ারের প্রস্থ, ৫৫ হলো উচ্চতা, আর ১৬ রিমের আকার, ৮৭ ভার বহনের ক্ষমতা এবং ভি’তে গতি বোঝানো হয়েছে। টায়ারের সক্ষমতার এ তালিকায় ভার বহনের ক্ষমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছবিতে থাকা টায়ারের ৫৪৫ কেজি পর্যন্ত ভার বহন করতে পারে।