রাইড শেয়ারিংয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে করণীয়

ঢাকার রাস্তায় বাইক চলার ছবি দিন। ক্যাপশন: বাইক কিংবা গাড়ি যেটাই হোক, রাইড শেয়ারিংয়ের সময় নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবুন
ফাইল ছবি : প্রথম আলো

প্রতিদিনকার চলাচলে এখন ‘রাইড শেয়ারিং’ জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। যাঁদের ব্যক্তিগত গাড়ি বা মোটরবাইক নেই, এই ব্যস্ত শহরে রাইড শেয়ারিং তাঁদের জন্য আশীর্বাদের মতো। দিন-রাতের যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে গাড়ি বা মোটরবাইক বুক করা যায় দেখে এই অ্যাপভিত্তিক পরবিহনসেবা বেশ সুবিধাজনক। তবে রাইড শেয়ারিংয়ের সময় যাত্রীদের কিছু বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন। এতে যাত্রাকালে বা ট্রিপের সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়।

যা যা করতে হবে

যথেষ্ট সময় নিয়ে বাসায় বসেই রাইডের চাহিদা জানান। ফোন হাতে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে থাকাটা নিরাপদ নয়। চালকের রেটিং দেখে এরপর রাইড রিকোয়েস্ট করুন।

গাড়িতে ওঠার আগে গাড়ির নম্বর, মডেল, চালকের ছবি ইত্যাদি মিলিয়ে নিন। যখনই সম্ভব হবে, গাড়ির পেছনের সিটে বসুন, এতে দরকার পড়লে আপনি দ্রুত গাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে পারবেন। গাড়িতে চড়ার সময় সিটবেল্ট বেঁধে বসুন। রাইড শেয়ারিং অ্যাপের ‘শেয়ার ট্রিপ স্ট্যাটাস’ সুবিধাটি ব্যবহার করে প্রিয়জনদের সঙ্গে আপনার অবস্থান (লোকেশন) শেয়ার করুন। কোনো রাইড শেয়ারিং চালকের ব্যবহারের কারণে তাঁকে নিয়ে আপনার মনে সন্দেহ জাগলে নিরাপদ থাকার চেষ্টা করুন, প্রয়োজনে যাত্রা বাতিল করুন (রাইড ক্যান্সেলেশন)।

মোটরবাইকে চলাচলের সময় নিজে হেলমেট পরুন, চালক হেলমেট পরছেন কি না, খেয়াল রাখুন। বাইকে চলার সময় চালক ও যাত্রীর মধ্যে যাতে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা না হয়, বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি। এ ছাড়া মোটরসাইকেল যাতায়াতের সময় নিজেও ফোনে কথা বলবেন না, চালককেও নিরুৎসাহিত করুন।

নিরাপত্তা সবার আগে

অ্যাপভিত্তিক পরিবহনসেবা পাঠাওয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ জানান, পাঠাওয়ের রাইড শেয়ারিংয়ে যাত্রী ও চালকের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হয়। পাঠাও দুর্ঘটনা বা যেকোনো ক্ষতির ক্ষেত্রে ‘সেফটি কভারেজ’ দেয়। তিনি বলেন, ‘চালকদের জন্য আমরা কঠোরভাবে হেলমেটের মতো সেফটি গিয়ারের ব্যবহার নিশ্চিত করি, যাতে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে ক্ষতির পরিমাণ যথাসাধ্য কম রাখা যায়। এ ছাড়া জরুরি সময়ে আমরা যেকোনো ইস্যু বা কলকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি, যাতে সর্বোচ্চ সহায়তা করা যায়। আমরা আইনি পরামর্শ ও সমর্থনও প্রদান করি।’

উবারও নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাই এসব সেবা ব্যবহার করলে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আপনি থাকতে পারেন নিশ্চিন্ত। এ ধরনের ট্রিপগুলো সার্বক্ষণিক জিপিএসের আওতায় থাকে, তাই খুব সহজেই অনুসরণ করা যায়। আরও আছে ‘সেইফটি টুলকিট’ ও ২৪ ঘণ্টা হটলাইনের মতো ফিচার। এর বাইরে উবারে আছে রাইডচেক ৩.০ সুবিধা, যা যাত্রার ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম ঘটতে দেখলে শনাক্ত করে। এরপর উবারের প্রতিনিধি যাত্রী ও চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই অনিয়মের ব্যাপারে জানতে চাইবেন এবং তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত হবেন। পাশাপাশি, বিমা নীতিমালার মাধ্যমে যাত্রীরা কোনো দুর্ঘটনার মুখোমুখি হলে তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রাইড শেয়ারিং সেবাগুলোতে সরাসরি চুক্তিভিত্তিক যাতায়াতের হার বেড়ে গেছে। এই যাত্রাগুলোর ক্ষেত্রে অ্যাপ ব্যবহার করা হয় না। চালকেরা সরাসরি রাস্তা থেকে যাত্রীর সঙ্গে দরদাম করে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছে দেন। বাংলাদেশ পুলিশ এ ধরনের যাতায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া ওপরে বলা সুবিধাগুলোর কোনোটিই সরাসরি যাতায়াতে পাওয়া যাবে না। ফলে এমন চলাচল যাত্রী ও চালক—উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে।