গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই সম্প্রতি চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আয় প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, বর্তমানে গুগলের নতুন কোডের (প্রোগ্রামিং সংকেত) ২৫ শতাংশের বেশি তৈরি হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে। প্রকৌশলীরা শুধু এআই দিয়ে তৈরি এই কোড যাচাই ও পরিমার্জনের কাজ করছেন। এতে কোড লেখার প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তন এসেছে। একই সঙ্গে প্রকৌশলীদের কাজের ধরনও বদলে গেছে। নিয়মিত কাজগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হওয়ায় প্রকৌশলীরা এখন মূলত জটিল সমস্যার সমাধান ও নতুন উদ্ভাবনে মনোযোগ দিতে পারছেন। তবে এআইয়ের এই অগ্রগতি নতুন প্রজন্মের কোডারদের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জও তৈরি করছে। এ নিয়ে পাঁচটি দিক তুলে ধরেছেন গুগলের প্রধান নির্বাহী। দেখে নেওয়া যাক।
১. গুগলের এক-চতুর্থাংশ কোড লিখছে এআই
সুন্দর পিচাই জানিয়েছেন, গুগলের ২৫ শতাংশের বেশি কোড এআই লেখার কারণে সফটওয়্যার উন্নয়নের কাজের গতি বেড়েছে। পাশাপাশি এআইকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে গুগল নতুন যুগের সূচনা করেছে। এটি প্রযুক্তি খাতে এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
২. প্রকৌশলীদের দায়িত্বে পরিবর্তন
এআই-নির্ভর কোডের কারণে গুগলের প্রকৌশলীদের কাজের ধরন বদলাচ্ছে। প্রকৌশলীরা এখন মূলত এআইয়ের তৈরি করা কোড যাচাই, পরিমার্জন ও উন্নত করার কাজ করছেন। এর ফলে তাঁরা সাধারণ কোডিংয়ের চেয়ে আরও জটিল সমস্যার সমাধান ও সৃজনশীল কাজে বেশি মনোযোগ দিতে পারছেন। প্রকৌশলীদের জন্য এটি একটি নতুন ধরনের কাজের ক্ষেত্র। এর ফলে এআইয়ের সহায়তায় জটিল কাজ করার সুযোগ বাড়ছে।
৩. নতুন প্রজন্মের কোডারদের ওপর প্রভাব
এআই ব্যবহারের ফলে প্রাথমিক স্তরের ও সাধারণ কোডিংয়ের কাজগুলো কমে যাচ্ছে। ফলে নতুন কোডারদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। তাই তরুণ কোডারদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ করার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সহজ কোডিংয়ের বাইরে এআই পরিচালনা, যাচাই ও জটিল সমস্যা সমাধানের দক্ষতা এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
৪. গুগলের এআইকেন্দ্রিক নীতি
গুগল তার পরিচালনে এআই ব্যবহারের পরিধি আরও বাড়ানোর জন্য কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন এনেছে। গবেষণা, মেশিন লার্নিং ও নিরাপত্তা–সম্পর্কিত দলগুলোকে একত্র করে দ্রুত এআই মডেল বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গুগল জেমিনি এ ক্ষেত্রে উদাহরণ। এতে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।
৫. কোডিংয়ের ভবিষ্যৎ
সুন্দর পিচাইয়ের ঘোষণায় ভবিষ্যতের প্রযুক্তি খাতের একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি বলছেন, ভবিষ্যতে এআইকে একজন সহকর্মী হিসেবে দেখা হবে। এআইকে প্রতিযোগী হিসেবে গণ্য করা হবে না। এআই প্রকৌশলীদের কাজে সহায়ক হয়ে উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। আর প্রকৌশলীরা এআইয়ের আউটপুট পর্যবেক্ষণ ও যাচাই করবেন। এআইয়ের ফলে কোডিং পেশা শেষ হয়ে যাবে না; বরং ভবিষ্যতে এটি নতুন সম্ভাবনার সূচনা করবে। এআই দিয়ে কোড তৈরির ফলে মানুষ থাকবে মূল পর্যবেক্ষকের ভূমিকায়।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে