এআই দিয়ে ভুয়া ভিডিও কল, ২৭৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারকেরা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) প্রযুক্তি জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি এর অপব্যবহারও বাড়ছে। সম্প্রতি এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে, যা ‘ডিপফেক’ ভিডিও নামে পরিচিত। এসব ভিডিওতে নির্দিষ্ট ব্যক্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নড়াচড়া করার পাশাপাশি কণ্ঠস্বর ব্যবহার করায় অনেকেই বুঝতে পারেন না এটি নকল ভিডিও। এবার এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভুয়া ভিডিও কল করে হংকংয়ের একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে আড়াই কোটি মার্কিন ডলার বা ২৭৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা ধরে) হাতিয়ে নিয়েছে একদল প্রতারক। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে হংকংয়ের সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
হালনাগাদ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে তৈরি ডিপফেক ভিডিওর মাধ্যমে এ প্রতারণার ঘটনাটি ঘটেছে গত জানুয়ারি মাসে। এ জন্য প্রথমে হংকংয়ের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত এক কর্মকর্তার কাছে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তার (সিএফও) নামে একটি ভুয়া ই-মেইল পাঠানো হয়। প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে গোপনে অর্থ লেনদেন করার নির্দেশনা দেওয়া হয় ই-মেইলটিতে। প্রাথমিকভাবে ই-মেইলটি পড়ে সন্দেহ হয় সেই কর্মকর্তার। কিন্তু ই-মেইল পাওয়ার পর ভিডিও কলে সিএফওসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তা তাঁকে অর্থ লেনদেনের নির্দেশ দেন। ফলে তিনি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে অর্থ পাঠিয়ে দেন। পরে তিনি জানতে পারেন, ভিডিও কলটি ভুয়া ছিল এবং তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
ভিডিও কলে সিএফওসহ যেসব কর্মকর্তাকে কথা বলতে দেখা গেছে, তাঁদের চেহারা বা ভিডিও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি তাঁদের কণ্ঠও নকল করা হয়েছিল। ডিপফেকের মাধ্যমে আগেও অনেকে হয়রানির শিকার হয়েছেন। শুধু তা–ই নয়, জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের ডিপফেক ভিডিও তৈরি করে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা।
হংকংয়ের পুলিশ জানিয়েছে, ডিপফেক প্রযুক্তির মাধ্যমে সাধারণত একজন ব্যক্তির ভুয়া ভিডিও তৈরি করা হয়, তবে এ ক্ষেত্রে একই ভিডিওতে একাধিক ব্যক্তির ডিপফেক ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হলে, তা শনাক্ত করা কঠিন হবে। আর তাই বড় আকারের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে তারা।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে