এআই চালাতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পথে মেটা

এআই প্রযুক্তি ও পরিবেশের স্বার্থে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করবে মেটাছবি: মেটা

মার্ক জাকারবার্গ ঘোষণা দিয়েছেন, মেটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি পরিচালনা করতে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ছোট আকারের পারমাণবিক চুল্লি (স্মল নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর) স্থাপন করা হবে। মেটা জানিয়েছে, এআই পরিচালনার জন্য বিশাল কম্পিউটিং শক্তি প্রয়োজন। বিশ্বজুড়ে অবস্থিত তাদের ডেটা সেন্টারগুলো ২৪ ঘণ্টা চালু রাখতে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ অপরিহার্য। এ প্রয়োজন মেটাতে প্রতিষ্ঠানটি এবার পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।

সম্প্রতি মেটা পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করেছে। তাদের ভাষ্য, মানবসংযোগের ভবিষ্যৎ নির্মাণ এবং এআই উদ্ভাবনের পরবর্তী ধাপে পৌঁছাতে বৈদ্যুতিক গ্রিডের সম্প্রসারণ ও নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্য অর্জনে পারমাণবিক শক্তি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

ডেডলাইন: ২০৩০ সাল

মেটা জানিয়েছে, তাদের পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ ২০৩০ সালের দিকে শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে ১ থেকে ৪ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিদ্যুৎ সরবরাহ কেবল তাদের ডেটা সেন্টারের চাহিদা মেটাবে না, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের চাহিদাও পূরণ করবে। উল্লেখ্য, একটি সাধারণ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রায় ১ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। তবে মেটার পরিকল্পিত কেন্দ্রগুলো কোথায় স্থাপন করা হবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কীভাবে কাজ করে

পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল ভিত্তি হলো ফিশনপ্রক্রিয়া। এতে পরমাণু ভেঙে তাপ ও শক্তি উৎপন্ন করা হয়। এই তাপ ব্যবহার করে পানিকে বাষ্পে রূপান্তরিত করা হয়, যা টারবাইন চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।

প্রযুক্তি খাতে কার্বনমুক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের আরও উদ্যোগ

মেটার মতো গুগল ও অ্যামাজনও কার্বনমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক শক্তির দিকে ঝুঁকছে। সম্প্রতি গুগল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক পারমাণবিক শক্তি প্রতিষ্ঠান কাইরস পাওয়ারের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। তাদের পরিকল্পনা, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে আরও কেন্দ্র স্থাপন।

অ্যামাজন তিনটি নতুন পারমাণবিক প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির মতে, পারমাণবিক শক্তি কেবল তাদের ডেটা সেন্টারের চাহিদা মেটাবে না, বরং ২০৪০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর লক্ষ্য পূরণে ভূমিকা রাখবে।

মেটার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা

মেটা জানিয়েছে, পারমাণবিক শক্তি প্রকল্পগুলো অন্য পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তি উদ্যোগের তুলনায় বেশি মূলধননির্ভর। তাই এর পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন দীর্ঘমেয়াদি হতে হবে। একাধিক কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব, যা শুধু মেটার বিদ্যুতের চাহিদাই নয়, শিল্প খাতের কার্বন নিঃসরণ কমাতেও সাহায্য করবে।
সূত্র: ডেইলি মেইল