কেমব্রিজে শিক্ষায় এআই নিয়ে সেমিনার, যা বললেন বক্তারা
যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগ সম্প্রতি শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করে। ‘কেমব্রিজ জেনারেটিভ এআই ইন এডুকেশন কনফারেন্স’ নামের এ আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এটি ছিল শিক্ষা ও প্রযুক্তির নতুন সংযোগের এক আয়োজন।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইরেড প্র্যাটস্কি তাঁর বক্তৃতায় ‘জেনারেটিভিজম’ ধারণাটি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা এআই সম্পর্কে সচেতন না হই, তবে এটি স্বায়ত্তশাসিত হয়ে উঠতে পারে। যা আমাদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।’ এআইয়ের সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নিতে তিনি শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইউরোপীয় শিক্ষক রেজওয়ান সিদ্দিকী তাঁর অভিজ্ঞতা থেকে ডিজিটাল বিভাজন দূর করা ও এআই ব্যবহারে প্রযুক্তিগত অসমতা কমানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। কীভাবে প্রযুক্তিশিক্ষায় সমতা আনতে পারে, সেটি তিনি তুলে ধরেন।
ইউনেসকোর পরামর্শক অধ্যাপক ওয়েইন হোমস শিক্ষকদের সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ‘আজ যদি আপনি চ্যাটজিপিটি দিয়ে ই–মেইল লেখাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তবে ১০ বছর পর কেন পিছিয়ে পড়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাবেন না।’ কেমব্রিজের অধ্যাপক রুপার্ট ওয়েগেরিফ এআই টুলসের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। সম্মেলনের সভাপতি কেমব্রিজের অধ্যাপক স্টিভেন ওয়াটসন শিক্ষকদের এবং এআই ডেভেলপারদের মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এই সম্মেলনে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ১০০ জন বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ অংশ নেন এবং শিক্ষাক্ষেত্রে এআইয়ের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন। ইউরোপ থেকে এশিয়ায় তাঁরা প্রযুক্তির হাইব্রিড ধারণা তৈরি করার জন্য কাজ করছেন, যাতে প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত হয় এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উন্নত পরিবেশ তৈরি হয়। কেমব্রিজের এই সম্মেলন শুধু প্রযুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেনি, বরং আগামী প্রজন্মের শিক্ষার জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন অংশগ্রহণকারীরা।