চার্জার দিয়ে মোবাইলে আগুন লাগাতে পারে দুর্বৃত্তরা
সব সাইবার হামলা শুধু তথ্য চুরি করার জন্য ঘটে না। অনেক সময় সাইবার দুর্বৃত্তরা ডিজিটাল উপায়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটনোর চেষ্টা করতে পারে। চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টেনসেন্টের গবেষকেরা এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তাঁরা বলছেন, বর্তমানে বাজারে থাকা অনেক মোবাইল ফোনের ফাস্ট চার্জারে নতুন একটি নিরাপত্তা ত্রুটি বের করেছেন। এ ত্রুটি কাজে লাগিয়ে ডিভাইসের ওপর হামলা করতে পারে দুর্বৃত্তরা।
ফোর্বস অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যখন ইউএসবি কেবল দিয়ে ডিভাইসের সঙ্গে ফাস্ট চার্জার যুক্ত করা হয়, তখন দুটি বস্তুর মধ্যে পরস্পর বোঝাপড়া ঘটে। এতে শক্তিশালী চার্জের বিষয়টি ডিভাইস নিরাপদে গ্রহণ করতে পারে। চার্জের ব্যবস্থাপনার বিষয়টি ডিভাইসের ফার্মওয়্যার ও চার্জারের ফার্মওয়্যারের মাধ্যমে ঘটে।কিন্তু হ্যাকাররা যদি চার্জার হ্যাক করে ফেলে তখন ডিভাইসে হঠাৎ অতিরিক্ত চার্জ গিয়ে তাতে আগুন লাগতে পারে।
টেনসেন্টের গবেষকেরা বলেন, স্মার্ট ডিভাইসে চার্জার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এতে ক্ষতিকর প্রোগ্রাম সেট করতে পারে হ্যাকাররা। স্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার ঢুকিয়ে তা থেকে চার্জারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে তারা। এরপর চার্জারের ফার্মওয়্যার পরিবর্তন করে তা অস্ত্রে রূপান্তর করতে পারে। ওই চার্জার যখনই কোনো ডিভাইসে লাগানো হয়, তখনই ওতে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। অনেক সময় ডিভাইসের সঙ্গেও ম্যালওয়্যার আসতে পারে। আক্রমণকারী ফোনের ক্ষতিকর প্রোগ্রামটি সক্রিয় করে তা থেকে ফাস্ট চার্জারকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে।
টেনসেন্টের পক্ষ থেকে ফাস্ট চার্জার হ্যাক করার একটি ডেমো ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। টেনসেন্টের পক্ষ থেকে এ প্রক্রিয়াকে বলা হচ্ছে 'ব্যাডপাওয়ার।'টেনসেন্টের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাডপাওয়ার সমস্যায় থাকা ডিভাইসগুলো বিশেষ ডিভাইসের মাধ্যমে আক্রমণ করা সম্ভব। অনেক ডিভাইস আবার মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট বা ল্যাপটপ দিয়েও হামলা করা যায়।
গবেষকেরা বাজারে বর্তমানে ২৩৪ রকম ফাস্ট চার্জার খুঁজে পেয়েছন। তাঁরা মোট ৩৫ ধরনের চার্জার নিয়ে গবেষণা করে ১৮টিতে ফাস্ট চার্জার সমস্যা পেয়েছেন। মোট আটটি ব্র্যান্ডের পণ্যে এ সমস্যা পাওয়া গেছে। ১৮ ধরনের চার্জিং ডিভাইসের মধ্যে ১১ টি সাধারণ ডিভাইস দিয়েই আক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। গবেষকেরা আরও সতর্ক করেছেন, ইউএসবি বা ইউএসবি-সি কেবল ব্যবহার করে কোনো ৫ ভোল্টের ডিভাইস ফাস্ট চার্জারে যুক্ত করবেন না।
টেনসেন্টের শুয়ানশু ল্যাবের গবেষকেরা বলছেন, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে চায়না ন্যাশনাল ভালনারিবিলিটি ডেটাবেইস ও আক্রান্ত ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে। এ প্রক্রিয়ার সমাধান আনার চেষ্টা করছেন তারা। গবেষকেরা গ্রাহক পর্যায়ে সুপরিচিত ব্র্যান্ড ছাড়া অন্য কোনো জায়গা থেকে ফাস্ট চার্জার কেনার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার কথা বলেছেন।