করোনার বিরুদ্ধে জিততে বিল গেটসের তিন দফা
নতুন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে জিততে তিন দফা পরিকল্পনা দিয়েছেন টেকজায়ান্ট মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে গত মঙ্গলবার লেখা এক নিবন্ধে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। গেটস ওই লেখায় জানিয়েছেন, তিন দফা পরিকল্পনায় এগোলেই যুক্তরাষ্ট্র নভেল করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হতে পারবে।
ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত ওই নিবন্ধটির চুম্বক অংশ প্রকাশ করেছে বিজনেস ইনসাইডার। বিল গেটস বলেছেন, বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতেই এই তিন দফা পরিকল্পনা তৈরি করেছেন তিনি। মূলত বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে কাজ করতে গিয়েই বিশেষজ্ঞদের মতামত জানার সুযোগ হয় তাঁর। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই তিন দফা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন তিনি।
বিল গেটস বলেছেন, প্রথম দফায় পুরো আমেরিকাজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় নতুন করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের শনাক্ত করার পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন বিল গেটস। তাঁর মতে, শনাক্তকরণ পরীক্ষা কর্মসূচি আরও বেগবান করা প্রয়োজন। এ জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। বিল গেটস বলেছেন, এ ক্ষেত্রে কোন কোন ব্যক্তির পরীক্ষা আগে করাতে হবে, কাদের ক্ষেত্রে গুরুত্ব বেশি দিতে হবে—সেটি আগে ঠিক করতে হবে। একই সঙ্গে সব স্বাস্থ্যকর্মীর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে জোর দিয়েছেন বিল গেটস। তাঁর মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকর্মীরাই সর্বাধিক ঝুঁকিতে রয়েছেন।
তৃতীয় দফায় নতুন করোনাভাইরাসের চিকিৎসাপদ্ধতি নিরূপণের ক্ষেত্রে তথ্যভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিল গেটস। তিনি বলেছেন, সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতি নিরূপণ ও ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে তথ্যভিত্তিক উপাত্ত কাজে লাগাতে হবে। বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিল গেটস বলেছেন, এ ক্ষেত্রে গুজব ও আতঙ্ক ছড়ানো প্রতিহত করতে হবে।
বিল গেটস ২০১৫ সালেই এক সম্মেলনে মহামারি আসার আশঙ্কার কথা বলেছিলেন। ওই সময় তিনি সঠিক প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছিলেন।
ওয়াশিংটন পোস্টে গতকাল প্রকাশিত হওয়া নিবন্ধে বিল গেটস আরও লিখেছেন, ‘নভেল করোনাভাইরাসের চেয়ে এগিয়ে থাকার সুযোগ এরই মধ্যে হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনো পার হয়ে যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২ লাখ মানুষ কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে চার হাজারের বেশি মারা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য বলছে, বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত করোনা কেড়ে নিয়েছে ৪১ হাজার ২৬১ জনের প্রাণ। ১৮০টি দেশে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৬১ জন। গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস তিন থেকে চার মাসেই গোটা বিশ্বে ভয়াবহ এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।