যে কৌশলে করোনা ঠেকানোর পক্ষে বিল গেটস
বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে শঙ্কিত মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বিল গেটস। তিনি এই ভাইরাসের থাবা থেকে মুক্ত থাকতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি নিয়েছেন। বাড়ি থেকে কাজ করছেন। এই সময়ে করোনাভাইরাস বিষয়ে তিনি রেডিটে আস্ক মি এনিথিং সেশনে অংশ নেন। সেগুলো পরে প্রকাশ করেন নিজের ব্লগে। সেখানে তিনি করোনা মোকাবিলার কৌশল নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি চীন, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুর যেভাবে এই দুর্যোগ সামাল দিয়েছে, তার প্রশংসা করেন।
এ ক্ষেত্রে বিল গেটস নিজের দেশ যুক্তরাষ্ট্র এখনো পিছিয়ে আছে বলে মনে করেন। করোনার থাবায় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলো যে ক্ষতির মুখে পড়বে, তা নিয়ে শঙ্কিত তিনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ভ্যাকসিন উৎপাদনে তাঁর ফাউন্ডেশনের (বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন) উদ্যোগ নিয়েও কথা বলেন। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য সেসব প্রশ্ন ও উত্তরগুলো তুলে ধরা হলো:
বর্তমান সংকটের কোন বিষয়টি আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে? কোনটা আপনাকে আশা জোগাচ্ছে?
-করোনাভাইরাস সংকটে অনেকগুলো ধনী দেশ আক্রান্ত। সন্দেহভাজনদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব (যেটাকে আমি শাটডাউন বলছি) মেনে চলাসহ সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে আগামী দুই থেকে তিন মাসে ধনী দেশগুলো করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম হবে। আমি চিন্তিত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিয়ে। তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধনী দেশগুলোর মতো তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার উপায় নেই। তাদের হাসপাতালগুলোর সক্ষমতাও অনেক কম।
এই সংকটের সময়ে মার্কিনিরা কীভাবে একে অন্যকে সহায়তা করতে পারে, বিস্তারিত বলবেন কী?
-সবচেয়ে বড় যে বিষয় তা হলো—শাটডাউন পদ্ধতি মেনে চলুন। মানে সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রেখে সামাজিক দূরত্বের নীতি মেনে চলুন। এতে করে আপনার আশপাশের লোকের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হবে না। আক্রান্তের হার নাটকীয়ভাবে কমে যাবে। এতে করে দ্রুততম সময়ে আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারব। স্বাস্থ্যসেবা খাতের কর্মীদের মতো অনেকেই নায়কোচিত সব কাজ করবেন। আমাদের উচিত তাদের সহযোগিতা করে যাওয়া। নজিরবিহীন এই সময়ে আমাদের সবার উচিত শান্ত থাকা।
১৮ মাসের কম সময়ের মধ্যে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের কোনো সম্ভাবনা কি আছে? থাকলে কতটুকু?
-খুবই ভালো একটি প্রশ্ন। ভ্যাকসিন বানানোর জন্য ছয়টি ভিন্ন প্রচেষ্টা চলছে। কেউ কেউ আরএনএ নামের নতুন একটি ধারা নিয়ে কাজ করছেন, যেটা এখনো প্রমাণিত নয়। আমাদের ভিন্ন ভিন্ন ধারা নিয়ে কাজ করে ভিন্ন ভিন্ন কিছু বের করতে হবে। মাথায় রাখতে হবে, এর অনেকগুলোই হয়তো কার্যকর হবে না। বিশ্বকে বাঁচাতে আক্ষরিক অর্থে আমাদের কোটি কোটি ভ্যাকসিন বানাতে হবে। ভ্যাকসিনগুলো নিরাপদ ও কার্যকর কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন। কিছু ভ্যাকসিন আবার বয়স্কদের জন্য কার্যকর হবে না।
কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য কতটা সময় লাগতে পারে?
-প্রথম যে ভ্যাকসিনগুলো আমরা পাব, সেগুলো স্বাস্থ্যসেবা কর্মী ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা পাবেন। সবকিছু যদি ঠিকঠাক মতো চলে, এটা হয়তো ১৮ মাসের আগেই হবে। তবে আমরা, হোয়াইট হাউস করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের প্রধান ড. ফাওচি ও অন্যরা বিষয়টি নিয়ে এখনো নিশ্চিত নই, তাই এখনই আমরা কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারছি না। তবে পুরোদমে কাজ চলছে।
এই প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে চীনের সাড়া দেওয়া নিয়ে কী ভাবছেন? ১০-এ তাদের কত দেবেন?
-২৩ জানুয়ারির পর চীন যখন বুঝতে পারল বিষয়টা কতটা গুরুতর, তারা কঠোরভাবে লকডাউন নীতি প্রয়োগ করল। এটা আগের পরিস্থিতির সঙ্গে বড় ধরনের পার্থক্য গড়ে দিল। বহু কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেও ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রোধ করা গেল। অন্য দেশও এখন এটা প্রয়োগ করে ভালো ফল পাচ্ছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহ হলেই পরীক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব মানার নীতি ভালো কাজে দিচ্ছে। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত আমাদের সবারই এই সমন্বিত পদ্ধতি মেনে চলা উচিত।
এই মহামারি শেষ হওয়ার পর বিশ্ব সম্প্রদায় হিসেবে আমাদের প্রথম করণীয় কী, যাতে আমরা পরের কোনো মহামারিকে ভালোভাবে সামাল দিতে প্রস্তুত হতে পারি?
-টেড টকে আমি বিষয়টি নিয়ে ২০১৫ সালে বলেছিলাম। রোগ শনাক্ত, ওষুধ ও ভ্যাকসিনের সামর্থ্য আমাদের প্রয়োজন। যথাযথ বিনিয়োগ করা হলে বিশেষজ্ঞরা ভালোভাবে এটা করতে পারবে। এ নিয়ে সব দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে। আমরা সিইপিআই (কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপিয়ার্ডনেস) তৈরি করেছি। ভ্যাকসিনের বিষয়ে কিছু কাজ হয়েছে। তবে গোটা বিশ্বের জন্য উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে হলে এখানে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে।
আপনি ও অন্য বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের মহামারির বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তারপরও বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সরকার কোনো ধরনের প্রস্তুতিই নিল না কেন? আপনার কী মনে হয়?
-নতুন কী ধরনের ভাইরাস হানা দেবে, সে সম্পর্কে কেউ কোনো ধারণা করতে পারে না। আমরা শুধু বুঝতে পারি, এটা কোনো ফ্লু বা শ্বাসতন্ত্রের রোগ হিসেবে আবির্ভূত হবে। এটা নিয়ে কাজ করার জন্য কোনো তহবিল নেই। সিইপিআই গড়তে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে আমাদের ফাউন্ডেশন (বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন), ওয়েলকাম, নরওয়ে, জাপান, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। এটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই ছোট একটি উদ্যোগ। আমরা সম্ভাব্য যুদ্ধ ও অগ্নিকাণ্ডে লড়ার মতো প্রস্তুতি অর্জন করেছি। তবে মহামারির বিরুদ্ধে লড়ার মতো প্রস্তুতি আমাদের নিতে হবে। রোগ শনাক্ত, চিকিৎসা ও ভ্যাকসিনের মতো বিষয়গুলো প্রাকৃতিক মহামারিতে ভালোভাবে কাজে দেবে, এটাই সবচেয়ে আশার কথা।
আপনি যে অঙ্গরাজ্যে থাকেন, সেই সিয়াটলে করোনাভাইরাস সন্দেহে পরীক্ষা অনেক কম হচ্ছে না? অন্য অঙ্গরাজ্যের তুলনায় এখানে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম নয় কি? এটা কী সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি কার্যকরের কারণে, নাকি পরীক্ষার অপ্রতুলতার কারণে হয়েছে?
-যুক্তরাষ্ট্রে এখনো সংগঠিতভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে না। আমি আশা করছি, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সরকার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে কীভাবে আপনি বাড়িতে বসে পরীক্ষাটা করতে পারেন। তবে এই মুহূর্তে বিষয়টি একটু এলোমেলো। সিয়াটলে প্রতিদিনই হাজার হাজার পরীক্ষা হচ্ছে, তবে সেটা জাতীয় ট্র্যাকিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত না।
পরীক্ষায় কারও পজিটিভ এলে বুঝতে হবে কোথায় এর শুরু, এরপর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি কঠোরভাবে মানতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থান শনাক্তের ডিজিটাল ব্যবস্থাসহ নানা প্রযুক্তিগত বিষয় প্রয়োগ করে দুর্দান্ত কাজ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
ইমপিরিয়াল কলেজের কোভিড-১৯ রেসপন্স টিম এক প্রতিবেদনে বলেছে, কোনো পদক্ষেপ না নিলে ৪০ লাখ মার্কিনি মারা যাবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো নীতি পালন করলে মৃতের সংখ্যা কমে হবে ১০ থেকে ১২ লাখ। আর ১৮ মাসের জন্য যদি সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে হয়তো কয়েক হাজার মানুষ মারা যাবে। আপনার কী মনে হয়?
-এটা খুবই নেতিবাচক। চীনের অভিজ্ঞতা এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তারা গোটা অঞ্চল অবরুদ্ধ করে বিরাট সাফল্য পেয়েছে। তারা ব্যাপক হারে পরীক্ষা করেছে। ফলে তারা দ্রুত আক্রান্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে। তারা ব্যাপক হারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে পেরেছে। ইমপিরিয়াল কলেজের অনুমানের সঙ্গে চীনের এই অভিজ্ঞতা যাচ্ছে না। এগুলো নিয়ে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে।
কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা নিয়েও ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দেখা যাচ্ছে। অভিনেতা, অভিনেত্রী, খেলোয়াড়দের মতো তারকাদের বিষয়ে যত দ্রুত সাড়া দেওয়া হচ্ছে, অন্যদের বেলায় কিন্তু তেমনটা ঘটছে না।
-সরকার যখন পুরো বিষয়টির ব্যবস্থাপনা করছে, তখন ধনী ও বিখ্যাতরা কীভাবে বিশেষ সুবিধা পান? তার মানে প্রচলিত স্বাস্থ্য সেবা খাতে মানুষের সামাজিক অবস্থান একটা ভূমিকা রাখে। জনগণের উচিত এমন একটা স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে কথা বলা, যেখানে ধনী-গরিবে বৈষম্য করা হবে না।
আমাদের একটি ওয়েবসাইট ব্যবস্থা চালু করতে হবে, যেখানে ঢুকে মানুষ তাদের অবস্থার কথা জানাতে পারবেন। জরুরি ভিত্তিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এটা খুবই সম্ভব। কারণ, পৃথিবীর অনেক দেশই এটা করছে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে বয়স্কদের প্রাধান্য দিতে হবে। এই ব্যবস্থা দ্রুত চালু করতে না পারলে আমরা বুঝতেই পারব না আমরা কী বাদ দিয়ে যাচ্ছি, আর সেটা আমাদের জন্য কতটা বিপদের।
নেদারল্যান্ডস এই ভাইরাস মোকাবিলায় নতুন একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করছে। তারা পুরোপুরি লকডাউনের চেয়ে রোগ প্রতিরোধের সক্ষমতা বাড়ানোর প্রতি জোর দিচ্ছে। আপনি এটাকে কীভাবে দেখছেন?
-এখন পর্যন্ত যে পদ্ধতিটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর, তা হলো শাটডাউন বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি। আপনি যদি এটা না মানেন, তাহলে বিপুলসংখ্যক মানুষের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়বে। হাসপাতালগুলোর ধারণক্ষমতার বাইরে চলে যাবে রোগীর সংখ্যা। আমি আশা করি শেষ পর্যন্ত নেদারল্যান্ডসও সেটাই করবে, যেটা অন্যরা করেছে।
এই মহামারিতে আপনার ফাউন্ডেশন কীভাবে সহায়তা করছে? আপনি অর্থ দিচ্ছেন নাকি স্বাস্থ্যসেবা খাতের কর্মীদের প্রয়োজনীয় জিনিস দিচ্ছেন?
-যারা রোগ শনাক্ত, ওষুধ ও ভ্যাকসিন তৈরির জন্য কাজ করছে, আমাদের ফাউন্ডেশন সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে। ফেব্রুয়ারিতে আমরা ১০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছি; আরও দেব। আমাদের মূল লক্ষ্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ ও ভ্যাকসিন তৈরির সক্ষমতা অর্জন করা।
শ্বাসকষ্টের রোগে ব্যবহৃত ভেন্টিলেটর উৎপাদনে আপনি কোনো সহায়তা করতে পারেন?
-এটা নিয়ে কাজ করার অনেকেই আছে। আমাদের ফাউন্ডেশন রোগ শনাক্ত, ওষুধ ও ভ্যাকসিনের ওপর কাজ করে। তাই এখনই আমরা এর সঙ্গে যুক্ত হতে চাই না। তবে আফ্রিকাসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ব্যাপক আকারে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে এ বিষয়ে সহায়তা করতে পারি।
এই সময়ে জাতীয়ভাবে কি আশ্রয়কেন্দ্র থাকা উচিত? আপনার কী মনে হয়?
-বেশির ভাগ মানুষই বাড়িতে থাকতে পারেন। তবে যাদের কাজ নেই, তাদেরও থাকার জন্য একটা জায়গা দরকার। বাড়িতে রেখে পরীক্ষা করার জন্যও এটা দরকার।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি অব্যাহত রেখে ব্যবসা-বাণিজ্য কীভাবে চলবে?
-দেখতে হবে কোনগুলো লাগবেই। খাদ্য সরবরাহ, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের লাগবেই। পানি, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেটের মতো বিষয়গুলোও লাগবে। কীভাবে এগুলো ঠিকভাবে চালিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিজেদের মতো কাজ করে যাচ্ছে।
কবে এই দুর্যোগের শেষ হবে?
-বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের দৌরাত্ম্য কমিয়ে আনতে আমাদের দরকার ভ্যাকসিন। সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে অনেক ধনী দেশ আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে পারবে। কিন্তু ভ্যাকসিন ছাড়া উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকানো খুবই কঠিন হবে।
এ অবস্থা আর কত দিন চলবে?
-এটা দেশ ভেদে ভিন্ন হবে। পর্যাপ্ত পরীক্ষা আর কঠোর শাটডাউন করে চীন এই ভাইরাসের বিস্তার প্রায় ঠেকিয়ে ফেলেছে। কোনো দেশ যদি ব্যাপক হারে পরীক্ষা করে এবং শাটডাউন নীতি কঠোরভাবে মানে, তাহলে দেড় থেকে আড়াই মাসের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
শাটডাউন নীতি শেষ হওয়ার পর যদি আবার এই ভাইরাস ফিরে আসে?
-এটা নির্ভর করবে এক দেশ থেকে আরেক দেশে কী পরিমাণ লোক আসা-যাওয়া করবে আর স্বাস্থ্য পরীক্ষা কত কঠোরভাবে করা হবে, তার ওপর। চীনে কিন্তু ফিরে আসার হার খুব কম। কারণ, তারা অন্য দেশ থেকে তাদের দেশে লোক আসা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। হংকং, তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুর খুবই ভালো করেছে। আমরা যদি ঠিক এমনটাই করি, এই ভাইরাসের বিস্তার কমে যাবে।
সীমিত সাধ্যে খুব বাজে পরিস্থিতির মধ্যেও কীভাবে এই ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে পারি?
-বারবার হাত ধুয়ে ফেলুন। দূরত্ব বজায় রাখুন। জ্বর হলে ও কাশি দিলে অন্যের কাছ থেকে দূরে থাকুন। আপাতত এগুলোই পারে আমাদের রক্ষা করতে।