কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভালো না মন্দ?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে সোমবার প্রকাশিত নিবন্ধে সাফ জানিয়েছেন সুন্দর পিচাই। গুগলের প্রধান নির্বাহী তো ছিলেনই, এখন তিনি গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটেরও প্রধান নির্বাহী। তাঁর কথা একদম ফেলে দেওয়ার সুযোগ নেই।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় প্রযুক্তিগুলোর একটি হিসেবে উল্লেখ করেন সুন্দর পিচাই। তবে পরিকল্পনাহীন ব্যবহারে সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা লিখতেও ভোলেননি তিনি। অতীতে নতুন প্রযুক্তি কীভাবে নতুন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা তিনি উদাহরণ দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন। লিখেছেন, যেকোনো ব্যক্তির সঙ্গে যুক্ত হতে এবং যেকোনো জায়গা থেকে তথ্যের আদান–প্রদান সহজ করেছে ইন্টারনেট। আবার ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়াও সহজ হয়েছে এতে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে সুন্দর পিচাই বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত নীতিমালার খসড়া তৈরির কাজ শুরু করছে। বৈশ্বিক মানদণ্ড ঠিক করতে হলে আন্তর্জাতিকভাবে সমন্বয় প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে ভিন্ন মঞ্চে কিছুটা ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন চীনা টেলিযোগাযোগ পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেন ঝেংফেই। গত মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে চলমান ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের এক অধিবেশনে তিনি বলেন, ‘মানবজাতির কল্যাণে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারব বলে আমি মনে করি। সবাই উন্নত জীবন চায়, দুর্দশার নয়।’
যন্ত্রের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে মানুষের মনে ভয় অমূলক বলে মন্তব্য করেছেন রেন ঝেংফেই। বলেছেন, একসময় মানুষ পারমাণবিক বোমা ভয় পেত। এখন তাদের ভয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে। এআই পারমাণবিক বোমার মতো ক্ষতিকর হবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
‘আ ফিউচার শেপড বাই আ টেকনোলজি আর্মস রেস’ শীর্ষক অধিবেশনে রেন ঝেংফেইয়ের সঙ্গে আলোচক ছিলেন ইতিহাসবিদ ও লেখক জুভাল নোয়া হারারি। হারারি অবশ্য অতটা নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে প্রতিযোগিতামূলক বিনিয়োগ সবার জন্যই শঙ্কার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কম করে হলেও এটা উনিশ শতকের শিল্পবিপ্লবের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে। সে সময় বিশ্বে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ পেয়েছিলেন বিশ্বনেতারা। বর্তমান পেশির লড়াই ভিন্নধর্মী উল্লেখ করে হারারি বলেন, একটা দেশ সম্পর্কে সব তথ্য পেলে আপনাকে এখন সৈন্য পাঠাতে হয় না। সূত্র: ম্যাশেবল, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম