বাংলাদেশের ১৫ অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে টুইটার
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সমন্বিতভাবে কয়েকটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ব্যবস্থা নিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে তৈরি ১৫টি টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। টুইটার প্ল্যাটফর্মে থাকা টুইটার সেফটি অ্যাকাউন্ট থেকে করা এক টুইটে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
টুইটে বলা হয়েছে, যেসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে সেগুলোতে ৫০টিরও কম ফলোয়ার বা অনুসারী ছিল যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। বিষয়টি নিয়ে এখনো তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে অ্যাকাউন্টগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবে টুইটার।
টুইটে বলা হয়, আমাদের প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে অ্যাকাউন্টগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে কয়েকটি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টুইটারের অ্যাকাউন্ট বন্ধের সঙ্গে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রাপ্ত কেউ যুক্ত থাকতে পারে। তবে বিষয়টি এখনো স্পষ্ট করে বলা হয়নি। টুইটার কর্তৃপক্ষ কবে এসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে সে বিষয়ে বিছু জানায়নি।
এর আগে ফেসবুকের পক্ষ থেকেও এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফেসবুকের নিউজরুমে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে খোলা ৯টি পেজ ও ৬টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক। সমন্বিতভাবে ভুয়া পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বন্ধ হওয়া পেজগুলোর মধ্যে আছে বিডিএসনিউজ ২৪ ডটকম, বিবিসি-বাংলা নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট, নিউজ দিনেররাত ২৪ ডটকম।
তবে কোন ছয়টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে এখনো সেই তথ্য প্রকাশ করেনি ফেসবুক। ইন্টারনেটে নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় কাজ করা গ্রাফিকা নামে একটি কোম্পানিকে দিয়ে তদন্ত করায় ফেসবুক। তদন্তের পরই বাংলাদেশের ৯টি পাতা ও ৬টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ফেসবুক বলেছে, যে নয়টি পাতা ও ৬টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে, সেগুলোতে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পক্ষে এবং বিরোধীদের বিপক্ষে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছিল।
ফেসবুক জানায়, বন্ধ হওয়া পেজগুলোর মধ্যে একটির ফলোয়ার সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৯০০ জন। বন্ধ হওয়া পেজগুলো বুস্ট করতে (বিজ্ঞাপন বাবদ) ৮০০ মার্কিন ডলার ব্যয় করা হয়েছে। এখানে ২০১৭ সালের জুলাইয়ে প্রথম বুস্ট করা হয়। আর সর্বশেষ গত নভেম্বরে বুস্ট করা হয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের কাছে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট-সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাওয়া হলে তাতে সাড়া দেয়নি টুইটার কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে ওই অ্যাকাউন্ট-সম্পর্কিত তথ্য চাওয়া হয় বলে টুইটারের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনে বলা হয়। প্রতি ছয় মাস অন্তর টুইটার তাদের ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। অনলাইনে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে কোনো দেশের সরকারের তরফে টুইটারকে কী ধরনের অনুরোধ করা হয়, সে তথ্য থাকে। তবে কোন অ্যাকাউন্টের তথ্য চাওয়া হয়, তা উল্লেখ করা হয় না।