আপনি কি স্মার্টফোনে আসক্ত? এই ৫ লক্ষণ মিলিয়ে নিন
স্মার্টফোন বর্তমানে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ব্যক্তিগত যোগাযোগ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চালানো, বিনোদনসহ নানা কাজে এর ব্যবহার বেড়েছে। আর তাই ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন কাজ করার পাশাপাশি বিনোদনের জন্য অনেকেই প্রতিদিন দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। স্মার্টফোন ব্যবহারের এই অভ্যাস ধীরে ধীরে নেশায় পরিণত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোন আসক্তি কখনো কখনো মাদকাসক্তির মতোই ক্ষতিকর হতে পারে। তবে আমরা অনেকেই স্মার্টফোনে আসক্ত হলেও তা জানি না। স্মার্টফোনে আসক্তির পাঁচটি লক্ষণ জেনে নেওয়া যাক।
১. স্মার্টফোন ব্যবহারের সময়
কত ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করলে তা আসক্তি হিসেবে গণ্য হবে, এর সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা বেশ কঠিন। তবে দিন দিন স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় বৃদ্ধি পাওয়াকে আসক্তির একটি বড় লক্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্ক গ্রিফিথস জানিয়েছেন, স্মার্টফোন আসক্তির ক্ষেত্রে স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় ক্রমাগত বাড়তেই থাকে। এর ফলে শুরুতে আধা ঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করলেও পরবর্তী সময়ে তা কয়েক ঘণ্টা হয়ে যায়। গত বছর এক গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে চার ঘণ্টার বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে আসক্তির প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেশি হয়ে থাকে।
২. দৈনন্দিন জীবনে স্মার্টফোনের প্রভাব
স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে ব্যক্তিগত জীবন, শিক্ষা কিংবা কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে কি না, তা দেখে আসক্তির মাত্রা বোঝা যায়। এ বিষয়ে মার্ক গ্রিফিথস জানিয়েছেন, স্মার্টফোন আসক্তির মূল বিষয় হলো, স্মার্টফোন ব্যবহারের সময়টা কতটা নেতিবাচকভাবে আপনার জীবনের ওপর প্রভাব ফেলছে। অর্থাৎ স্মার্টফোন ব্যবহারের সময়টা দৈনন্দিন জীবনযাপন, যেমন ব্যক্তিগত সম্পর্ক, শিক্ষা বা কর্মক্ষেত্রকে প্রভাবিত করলে তা আসক্তির পর্যায়ে পড়ে।
৩. স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণ
স্মার্টফোন আসক্তরা নিজেদের মানসিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্যও স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত নোটিফিকেশন, লাইক বা শেয়ার দেখার ফলে মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসরণ হয়, যা একধরনের সুখানুভূতি তৈরি করে। এ অনুভূতির জন্য অনেকেই স্মার্টফোনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।
৪. স্মার্টফোন মানসিক অবস্থাকে কতটা প্রভাবিত করে
আপনি যদি স্মার্টফোন ছাড়া অস্বস্তি বোধ করেন, তাহলে তা আসক্তির একটি বড় লক্ষণ হতে পারে। কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা মুঠোফোন আসক্ত, তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ ও বিষণ্নতার সমস্যা দ্বিগুণ বেশি। স্মার্টফোন আসক্তি কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে উদ্বেগ ও বিষণ্নতার মতো মানসিক সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
৫. স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে শারীরিক প্রভাব
স্মার্টফোনে আসক্ত হলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে, যেমন দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন ব্যবহার না করলে হাত কাঁপা, মাথা ঘোরা বা পেটের ব্যথার মতো বিভিন্ন সমস্যা হয় অনেকের। আবার দীর্ঘ সময় স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে ঘুমেরও সমস্যা হয়।