মাউস ক্লিকের মাধ্যমে জালিয়াতি কী ও প্রতিকারই–বা কী

বিজ্ঞাপনেও প্রতারণা করে সাইবার অপরাধীরাছবি: টাইমস অব ইন্ডিয়ার সৌজন্য

ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার ঘটনাও বাড়ছে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের জন্য তেমনি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘ক্লিক ফ্রড’। এই কৌশল অবলম্বন করে প্রতারকেরা প্রতারণা করে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, যেসব প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের জন্য অর্থ বিনিয়োগ করছে, তারাও প্রকৃত তথ্য জানতে পারছে না এবং ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

যেভাবে এই জালিয়াতি হয়

সাধারণত অনলাইনে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি তার কাঙ্ক্ষিত ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। এসব বিজ্ঞাপনে ক্লিক করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সেবা গ্রহণের সম্ভাবনা তৈরি হয় এবং ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে তথ্যও সংগ্রহ করা যায়। এর জন্য ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে প্রতিটি ক্লিকের জন্য অর্থ খরচ করেন বিজ্ঞাপনদাতা। তবে প্রতারকেরা ডিজিটাল বিজ্ঞাপন থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে বট (বিশেষ কাজ করার একধরনের স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রাম) দিয়ে বা ইচ্ছাকৃতভাবে এসব বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে। ফলে বিজ্ঞাপনদাতা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন।

কয়েকভাবে ক্লিক ফ্রড বা জালিয়াতি হতে পারে। ‘পে পার ক্লিক’ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অনলাইনে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই বিজ্ঞাপনদাতার কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হয়। প্রতারকেরা বট দিয়ে এসব বিজ্ঞাপনে ভুয়া ক্লিক করে অর্থ হাতিয়ে নেন। ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের ‘কস্ট পার ইমপ্রেশন’–এর মাধ্যমে একটি বিজ্ঞাপন কতবার দেখা হলো, তা বিশ্লেষণ করে অর্থ দেন বিজ্ঞাপনদাতারা। প্রতারকেরা বট দিয়ে ক্লিক করে এ ধরনের বিজ্ঞাপনেও ভুয়া ‘ইমপ্রেশনস’ তৈরি করে।

এ ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে।

জালিয়াতি শনাক্তকরণ টুল

ক্লিকের মাধ্যমে জালিয়াতি ঠেকাতে ক্লিক ফ্রড শনাক্তকরণ টুল ব্যবহার করা যেতে পারে। এসব টুল ফ্রড ক্লিক শনাক্ত করার পাশাপাশি সেগুলোকে ব্লক করে দেয়। টুলগুলো সন্দেহজনক ক্লিক শনাক্তে বিজ্ঞাপনে বিভিন্ন আইপি ঠিকানা থেকে আসা ক্লিকের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে।

আইপি ঠিকানা ব্লক করা

ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বিশ্লেষণের জন্য গুগল অ্যাডসসহ বিভিন্ন ধরনের অ্যানালাইসিস টুল ব্যবহার করা হয়। এসব টুল ব্যবহার করে নির্দিষ্ট আইপি ঠিকানাকে নির্দিষ্ট ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের জন্য ব্লক করা হয়। ফলে যেসব আইপি ঠিকানা ব্লক করা থাকে, সেসব আইপি ঠিকানায় সেই বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয় না। তাই নির্দিষ্ট কোনো আইপি ঠিকানা সন্দেহজনক মনে হলে সেটিকে ব্লক করে রাখা যেতে পারে।

ক্যাপচা ব্যবহার

ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে ক্লিক করার পর ওয়েবসাইটের ল্যান্ডিং পেজে প্রবেশের জন্য ক্যাপচা ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ফলে কোনো বট ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে সেটি আর মূল ওয়েবসাইটে প্রবেশ পারবে না।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া