প্রথম আলোকে বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ
২০৩১ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ২০০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয় সম্ভব
২০২৫ সাল নাগাদ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। বাংলাদেশে অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বিশ্বাস করেন, ৫০০ কোটি নয়, ২০৩১ সাল নাগাদ এই খাত থেকে ২ হাজার কোটি (২০ বিলিয়ন) ডলার রপ্তানি আয় করা সম্ভব। সরকার, শিল্প (ইন্ডাস্ট্রি) ও শিক্ষা (একাডেমিয়া)—এই তিন খাতের অংশীজনেরা সমন্বিতভাবে তিনটি কাজ করলেই সেটি সম্ভব হবে।
কাজগুলো হলো তথ্যপ্রযুক্তি খাতের গবেষণা ও উন্নয়ন, দেশ–বিদেশে ইন্ডাস্ট্রি ব্র্যান্ডিং ও দক্ষ জনবল তৈরি। শনিবার রাজধানীর পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে চলমান বেসিস সফটএক্সপোতে প্রথম আলোকে এসব কথা বলেছেন বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।
রাসেল টি আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০২৫ সাল কিন্তু খুব দূরে নয়, কাল বাদে পরশুর মতো। ২০৩১ কিংবা ২০৪১ সালও খুব বেশি দূরে নয়। আমাদের সামনে অনেক সম্ভাবনা। উন্নত দেশগুলোর নৌকা চলছে কিন্তু আমাদের নৌকাটি ঘাটে ভিড়ে আছে। দুই হাজার কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের কথা যে বলছি, এটা আমাদের কেউ দান করবে না। আমাদের এটা ব্যবসা করে আনতে হবে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই আমাদের এই অর্থ আনতে হবে। এই সুযোগ আমাদের রয়েছে। এই জন্য তিন ক্ষেত্রের অংশীজনেরা (স্টেকহোল্ডার) সমন্বিতভাবে তিনটি কাজ করলেই সেটি সম্ভব।’
বাংলাদেশকে আইসিটির (তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি) দেশ হিসেবে কেউ চেনে না বলে মন্তব্য করেন রাসেল টি আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য চেনে। তাই আমাদের দেশকে বিশ্বের দুয়ারে তুলে ধরতে সঠিক ব্র্যান্ডিং করতে হবে। আমরা পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের কথা বলছি, কিন্তু আমরা বাস্তবে সেই কাজ করছি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের যাঁরাই যাচ্ছেন, তাঁরাই বলছেন “ভালো আছি”, তাহলে তিনি আমাদের কীভাবে সাহায্য করবেন? আমরা তথ্যপ্রযুক্তি খাত আসলে ভালো নেই। আমাদের অনেক কিছু করার আছে। সে কাজগুলো করতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশে কী করতে পারিনি, আমাদের তা দেখতে হবে। সে কাজগুলো স্মার্ট বাংলাদেশে করতে হবে।’
বেসিস সফটএক্সপো ২০২৩ দেশের এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী। সম্পূর্ণ বেসরকারি খাতের উদ্যোগে এমন বৃহৎ পরিসরে কোনো তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী এর আগে অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানালেন রাসেল টি আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতার পাশাপাশি সম্ভাবনাকে তুলে ধরা। আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রণী ভূমিকাতেই ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে “স্মার্ট বাংলাদেশ”-এ রূপান্তর করার ক্ষেত্রে একমাত্র শক্তিশালী অংশীদার হিসেবে বেসিসই পারবে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে।’
একনজরে বেসিস সফটএক্সপো ২০২৩
রাজধানীর পূর্বাচলে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে চলে বেসিস সফটএক্সপো। মেলা শুরু হয়েছে ২৩ ফেব্রুয়ারি। মেলা চলবে আগামীকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা।
* ২০৪টি দেশি-বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের স্টল বা প্যাভিলিয়ন।
* ২০০ জনের বেশি দেশি-বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তি–বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণ।
* আইসিটি-বিষয়ক ১৮টি সেমিনার।
* ২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প।
* ৫০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শনী।
* ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রোবট প্রদর্শনী।
* আউটসোর্সিং সম্মেলন।
* অ্যাম্বাসেডর নাইট, মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স, উইমেন ইন আইটি প্রোগ্রাম
* স্টার্টআপ সম্মেলন।
* ডেভেলপারস সম্মেলন ও জাপান ডে।
* গেমিং জোন, বিজনেস লাউঞ্জ, ফুড কোর্ট ও মিডিয়া কর্নার।
* দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের বিটুবি ম্যাচমেকিং।
* বিজনেস লিডারস মিট।
* প্রতিদিন সন্ধ্যায় কনসার্ট।