ছেলে বা মেয়েটি যখন বড় হচ্ছে, তখন মা-বাবার মনে নানা শঙ্কার সঙ্গে যুক্ত হয় ‘সে নেশা করছে কি না’ এই প্রশ্ন। নেশা থেকে সন্তানকে দূরে রাখতে চাইলে মা-বাবার আচরণ হতে হবে সন্তানের প্রতি ‘পারস্পরিক নির্ভরযোগ্যতা’। নেশায় আসক্ত হওয়ার আগেই তাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে সে নেশার জগৎকে ‘না’ বলতে পারে। এ জন্য যা যা করতে পারেন, তা হলো:
l সন্তানের প্রতি আপনার ভালোবাসা প্রকাশ করুন। তাকে ভালোবাসছেন অথচ তা প্রকাশ করছেন না, এমনটা যেন না হয়।
l সে কিছু বলতে চাইলে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে তার কথা শুনুন। তাকে তাচ্ছিল্য করবেন না।
l ‘গুণগত সময়’ দিন। তার সঙ্গে তার বা আপনার পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে খোলামেলা কথা বলুন।
l সফলতার পাশাপাশি জীবনে ব্যর্থতাকে মেনে নেওয়ার মতো করে তাকে তৈরি করুন। তার কোনো ব্যর্থতাকে সমালোচনা-বিদ্রূপ করবেন না।
l তার সামনে কোনো অপরাধ করা বা অপরাধের পক্ষ নেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
l সন্তান যখন একটু বুঝতে শিখবে, তখন নেশার বিষয়াদি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলুন এবং নেশার পরিণতিগুলো তাকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে অবহিত করুন।
l তার ওপর অযথা চাপ তৈরি করবেন না, ‘তোমাকে এটা পারতেই হবে’—এ-জাতীয় বাক্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
l অন্যের সঙ্গে তার তুলনা করবেন না, তাকে অহেতুক সন্দেহ করবেন না।
l গোপন নজরদারি, বিশেষ করে বাড়ির কাজের লোক, নিরাপত্তাকর্মী ও গাড়িচালককে দিয়ে তার ওপর নজরদারি কখনোই করাবেন না।
l তার ভালো কাজের প্রশংসা করুন আর অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করলে একটা পর্যায় পর্যন্ত সেটাকে অধিক গুরুত্ব দেবেন না।
l প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে তার কাছে প্রযুক্তির ইতিবাচক দিকগুলো ব্যাখ্যা করুন। ইতিবাচকভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে তাকে উৎসাহ দিন।
l তার বন্ধুদের গুরুত্ব দিন। ভালো বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে উৎসাহী করুন। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যেতে বা তাদের কারও বাসায় রাত কাটাতে চাইলে আপনি কুশলী হোন। দেখুন, ও কাদের সঙ্গে কোথায় যাচ্ছে, কার বাসায় রাত কাটাচ্ছে—প্রয়োজনে বন্ধুদের মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন।
l বয়ঃসন্ধিকাল পেরোতে থাকলে তাকে যৌনতার বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করুন।