শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সহ-অধিনায়ক বিতর্ক দিয়ে শুরু। এরপর মাঠে টানা পরাজয় আর মাঠের বাইরের নানা বিতর্কে টালমাটাল বাংলাদেশ দল। সেসব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কাল বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান আরেকবার উচ্চারণ করলেন, সবার আগে শৃঙ্খলা
মুশফিকুর রহিম অভিযোগ করেছেন, এশিয়া কাপের দল নির্বাচনের আগে তাঁর মতামত নেওয়া হয়নি। ব্যাপারটাকে কীভাবে দেখছেন?
নাজমুল হাসান: আমি যেটা জানি, নির্বাচকেরা দল করে দেয়। সেখান থেকে কোচ এবং অধিনায়ক মিলে মূল একাদশ ঠিক করে। মুশফিক নতুন কিছু চাচ্ছে কি না জানি না। আমাকে এখন জানতে হবে, আগে থেকেই এ রকম হয়ে আসছে নাকি নতুন হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, ফারুকও (প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ) এখন দেশে নেই। তবে একটা টুর্নামেন্টের আগে মুশফিকের এভাবে বলা ঠিক হয়নি।
মুশফিকের সঙ্গে কি এ নিয়ে আপনার কথা হয়েছে?
নাজমুল: আমি মুশফিককে ফোন করেছিলাম, তবে অন্য ব্যাপারে। তাকে বললাম, তুমি-মুমিনুল-নাসির আছ, ইমরুল কায়েস এসেছে। তোমরা তিন-চারজনই যথেষ্ট একটা ম্যাচ বের করার জন্য। দলে কে আছে, কে নেই এগুলো নিয়ে তোমরা চিন্তায় পড়ে গেলে কেন! তোমরা কি ভয় পাচ্ছ? ও বলল, ‘প্রশ্নই ওঠে না।’ এটাই আমি শুনতে চাচ্ছিলাম। গত ম্যাচের দিন মাশরাফি আমাকে বলল, এশিয়া কাপে বড় বড় দলগুলোর এবার খবর আছে। আমরা খেলোয়াড়দের মুখে এগুলোই শুনতে চাই।
সাকিবের শাস্তি কমানোর জন্য দল থেকে একটা অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু সে রকম কোনো সম্ভাবনা তো নেই মনে হয়...
নাজমুল: আমি এ রকম কোনো সম্ভাবনা দেখি না। কিছু সিদ্ধান্ত আছে, যেগুলো নেওয়া অত্যন্ত কঠিন। সেই কঠিন সিদ্ধান্তটা নিয়েও যদি আপনি তা থেকে ফিরে আসেন, সবাই মনে করবে ভবিষ্যতেও দল থেকে চাপ এলে শাস্তি প্রত্যাহার হয়ে যাবে। আমরা সাকিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিইনি। তাঁর নির্দিষ্ট একটা আচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা বহির্বিশ্বে দেশ, বোর্ড ও খেলোয়াড়দের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে।
এটা তাহলে সবার জন্য একটা বার্তাও...
নাজমুল: বার্তাটা পরিষ্কার হওয়া উচিত। শৃঙ্খলা দলের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সাকিব এশিয়া কাপের দুটি খেলা খেলবে না। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে খেলেনি। এ রকম একটা মুহূর্তে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ কিছু না। খুব কঠিন, কষ্টকর সিদ্ধান্ত ছিল। আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি. তা থেকে সরে এলে ভবিষ্যতে সবার জন্য ভুল বার্তা যাবে। আমি দলকে বলতে চাই, তোমরা যেমন মনে করো সাকিবকে দরকার, আমরাও তাই মনে করি। কিন্তু তাই বলে অন্যায়ের শাস্তি হওয়ার পর সেখান থেকে সরে দাঁড়ানো ঠিক হবে না।
সহ-অধিনায়ক নিয়ে বিতর্কের পর দলে একটার পর একটা নেতিবাচক ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ মুশফিকের ওই মন্তব্য। আপনার কি মনে হয় না দলের মধ্যে একটা ছন্দপতন ঘটে গেছে?
নাজমুল: আমি তো অনেক দিন ধরেই ছন্দপতন দেখছি। অনেক দিন থেকেই অনেক কিছু দেখছি বা শুনছি, যেটা হওয়ার কথা না। সেই জিম্বাবুয়ে সফর থেকেই দেখছি এবং শুনছি। কিন্তু সব সময় আমাদের মধ্যে কাজ করে, এই সময়ে এ রকম একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া বুঝি ঠিক হবে না। সবাই বলে, ছয় মাস সময় দেন, এই বিশ্বকাপটা শেষ হোক...। তারপর সব ঠিক করে দেব। আমি এর সঙ্গে একমত নই। একটা এশিয়া কাপ বা একটা বিশ্বকাপে হয়তো আমার ক্ষতি হতে পারে, কিন্তু ওই সিদ্ধান্তের জন্য ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ অনেক ভালো হবে। আমরা প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ভালোবাসি। তাই বলে কোনো ধরনের অন্যায় বা বিশৃঙ্খলা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এটা বোঝানোর জন্য আমি মনে করি, এই হলো সঠিক সময়। কেউ অপরিহার্য নয়। পিটারসেনকে ইংল্যান্ড বাদ দেয়নি, যখন সে ফর্মের তুঙ্গে? শেন ওয়ার্নকে অস্ট্রেলিয়া বাদ দেয়নি?