'বাংলাদেশের পতাকার ওজন ১৮০ কেজির চেয়েও বেশি'
>২০১৬ গুয়াহাটি-শিলংয়ের এসএ গেমসে ভারোত্তলনে সোনা জিতেছিলেন মাবিয়া আক্তার। পদক নেওয়ার সময় পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতের সুরে অঝোর ধারায় কেঁদেছিলেন। ১৮ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া জাকার্তা এশিয়াডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁর হাতেই থাকবে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা
‘আমার সোনার বাংলা...’ জাতীয় সংগীতের সুরে আড়াআড়িভাবে বাঁধা বাংলাদেশের পতাকা ওপরে উঠছে আর বিজয় মঞ্চে স্যালুটের ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটি অঝোরে কাঁদছেন। ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্তের কথা বলতে গেলে ২০১৬ সালে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের এই দৃশ্যটির প্রসঙ্গ না টানলেই নয়। জাতীয় সংগীতের সুরের মূর্ছনার সঙ্গে তাঁর অঝোর কান্নার দৃশ্য এ দেশের খেলাধুলার ইতিহাসের একটা অংশ হয়েই আছে। যার কাছে দেশের লাল-সবুজ পতাকা এত বেশি সম্মানের, জাকার্তা এশিয়ান গেমসে সেই মাবিয়ার হাতেই থাকবে জাতীয় পতাকার গুরুভার।
১৮ আগস্ট থেকে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও পালেমবাংয়ে শুরু হচ্ছে এশিয়ান গেমসের ১৮তম আসর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মার্চপাস্টে বাংলাদেশের পতাকা থাকবে মাবিয়ার হাতে। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে পতাকা বহন করার সুযোগ পেয়ে স্বাভাবিকভাবে দারুণ খুশি এসএ গেমসের সোনাজয়ী ভারোত্তোলক। তাঁর কাছে পতাকার সম্মান কত বেশি, সেটি জানালেন নিজেই।
এস এ গেমসে মাবিয়া সোনা জিতেছিলেন ১৪৯ কেজি ওজন তুলে। তবে সর্বোচ্চ ১৮০ কেজি ওজন তুলেছেন গত বছর কমনওয়েলথ গেমসে। এর চেয়ে মাবিয়ার কাছে পতাকার ওজনই বেশি মনে হচ্ছে, ‘এ এক ভিন্ন রকম অনুভূতি। আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আসরের মার্চ পোস্টে সাধারণ অ্যাথলেট হিসেবে অংশ নিয়েছি, এবার পুরো দেশের নেতৃত্ব দিয়ে আমি সামনে থেকে পতাকা বহন করব। এটি নিঃসন্দেহে গৌরব ও আনন্দের। ১৮০ কেজি ওজনের চেয়েও পতাকার ওজন অনেক বেশি আমার কাছে। পুরো দেশের মানুষ এই পতাকার দাবিদার। সবার সম্মান জড়িত থাকে এই পতাকায়।’
৬৩ কেজি ওজন শ্রেণিতে লড়বেন মাবিয়া। কিন্তু এশিয়াডের মতো বড় আসরে লড়তে নামার আগে নামমাত্র অনুশীলন নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন, ‘ব্যক্তিগত রেকর্ড ১৮০ কেজি আছে। চেষ্টা করব সেরাটা দিতে। মাত্র দেড় মাস ট্রেনিং হয়েছে। এশিয়ান গেমসের মতো আসরে যা কখনোই যথেষ্ট না। উন্নতমানের জিমনেশিয়াম, ভালো কোচ, ইকুইপমেন্ট, আর নিয়মিত ক্যাম্পিংয়ের ব্যবস্থাটা চেয়েছি। কিন্তু পেলাম না। তবুও আশা করি কমনওয়েলথ গেমসের চেয়ে বেশি ওজন তুলতে পারব।’
ভারোত্তোলনসহ এবার এশিয়ান গেমসের মোট ১৪টি খেলায় অংশগ্রহণ করবে বাংলাদেশ—ফুটবল, কাবাডি, হকি, শুটিং, সাঁতার, অ্যাথলেটিকস, ভারোত্তলন, কুস্তি, বাস্কেটবল, ব্রিজ, গলফ, বিচ ভলিবল, রোয়িং ও আর্চারি। মোট অ্যাথলেট ১১৭ জন (৮৬ জন পুরুষ ও ৩১ নারী)। বিশাল এই বহর ইন্দোনেশিয়ার জন্য ব্যাগ গোছালেও পদকের আশা নেই বললেই চলে। সর্বোচ্চ আশা আছে কাবাডি, শুটিং, আর্চারিকে ঘিরে। সেটিও খুব ভালো করলে। নিজেদের সর্বোচ্চটা দিলেও এসব খেলায় পদকের দেখা মিলবে কি না, তা বলা যাচ্ছে না।