‘শ্রীলঙ্কার জয়াসুরিয়া’ বললেই সবার মনে হয় ক্রিকেটার সনাত্ জয়াসুরিয়ার কথা। কথাটা শুনে কাসুন জয়াসুরিয়া হাসেন। এই জয়াসুরিয়া শ্রীলঙ্কা ফুটবল দলের এক নম্বর স্ট্রাইকার। গত পরশু ভুটানের বিপক্ষে যিনি এবারের সাফ ফুটবলে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছেন হ্যাটট্রিক করে নিশ্চয়ই খুব খুশি। আন্তর্জাতিক ম্যাচে এর আগে হ্যাটট্রিক ছিল? কাসুন জয়াসুরিয়া: হ্যাঁ, আগেও হ্যাটট্রিক ছিল। তবে ঠিক মনে করতে পারছি না। একটু মনে করুন না।জয়াসুরিয়া: (কিছুক্ষণ ভেবে) গত বছর সম্ভবত ব্রুনাইয়ের বিপক্ষে ৫ গোল করেছিলাম। কিছুদিন আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭-১ জয়ের ম্যাচটায় হ্যাটট্রিক ছিল আমার। সব মিলিয়ে ৩-৪টি আন্তর্জাতিক হ্যাটট্রিক করেছি। ঢাকা এসেই নাকি প্রথমবারের মতো বাবা হওয়ার সুখবর পেয়েছেন...জয়াসুরিয়া: হ্যাঁ। অসাধারণ এক অনুভূতি হচ্ছে এখন। ৪ ডিসেম্বর মাঠে যাওয়ার আগে স্ত্রীর ফোন পেলাম, আমার ছেলে হয়েছে। সেই আনন্দে মাঠে একটা গোল করে ছেলেকে উত্সর্গ করেতে চেয়েছিলাম। সেদিন না পারলেও ছেলে-ভাগ্যেই বোধহয় কাল (পরশু) গোল পেয়ে পেলাম। কত বছর ধরে জাতীয় দলে আছেন?জয়াসুরিয়া: ১২ বছর তো হবেই। ৫০-৬০টি ম্যাচ খেলে ফেললাম। কোন ক্লাবে খেলেন?জয়াসুরিয়া: কলম্বোর রথনাম ক্লাবে। গত বছরের চ্যাম্পিয়ন দল। তা ছাড়া ভারতের ডেম্পোসহ আরও একটি ক্লাবে খেলেছি। মালদ্বীপ লিগেও খেলেছি। ‘শ্রীলঙ্কার জয়াসুরিয়া’ বললেই তো লোকে ক্রিকেটার সনাত্ জয়াসুরিয়ার কথা ভাবে।জয়াসুরিয়া: (হাসি) হ্যাঁ, একই নাম। ক্রিকেটার জয়াসুরিয়া তো শ্রীলঙ্কায় খুবই জনপ্রিয়। আপনি কেমন জনপ্রিয়?জয়াসুরিয়া: ওর তুলনায় কিছুই নয়। সনাত্ অনেক বেশি বিখ্যাত। তবে লোকজন আমাকেও চেনে। গত তিন বছর আমি শ্রীলঙ্কান লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গোল্ডেন বুট জিতেছি। সেই সূত্রে বেশ পরিচিতি এসেছে। ক্রিকেটার জয়াসুরিয়ার সঙ্গে আলাপ আছে?জয়াসুরিয়া: না, আলাপ নেই। ওই জয়াসুরিয়ার সঙ্গে কখনো দেখাও হয়নি। বলেন কী! কখনোই দেখা হয়নি? সনাত্ আপনাকে চেনেন?জয়াসুরিয়া: সনাত্ ফুটবল নিয়ে খুব একটা আগ্রহী নয় বলেই জানি। তবে আমার নামটা নিশ্চয়ই শুনে থাকবে। টিভি, খবরের কাগজে তো আমার ছবি আসছে। আমার ধারণা, তিনি জানেন আমি কে! কখনো কি তাঁর সঙ্গে দেখা করার, কথা বলার আগ্রহ হয়নি আপনার?জয়াসুরিয়া: যেকোনো সময়ই হয়তো আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারি। তবে এখন পর্যন্ত দেখা হয়নি। আশা করি, কোনো এক দিন হবে। তবে এটা আমার কাছে বিশেষ কিছু মনে হয় না। কারণ আমরা দুজনই তো শ্রীলঙ্কান। শ্রীলঙ্কায় তো ক্রিকেটারদেরই মানুষ বেশি চেনে। সে তুলনায় ফুটবলাররা কতটা পরিচিত?জয়াসুরিয়া: ক্রিকেটাররা বেশি পরিচিত হতে পারে, তবে ফুটবলারদেরও মানুষ কম-বেশি চেনে। শ্রীলঙ্কায় ক্রিকেট সবচেয়ে জনপ্রিয়, তারপর ফুটবল আছে। রাগবিও জনপ্রিয়। ধরুন, কলম্বোর রাস্তায় সনাত্ জয়াসুরিয়া হেঁটে যাচ্ছেন। আপনিও যাচ্ছেন। লোকে আপনার দিকে ছুটে যাবে?জয়াসুরিয়া: এটা ঠিক, সনাত্ই বেশি মনোযোগ পাবে। তবে আমি একেবারেই মনোযোগ পাব না, তাও না। ফুটবল সমর্থকেরা তো আমার সম্পর্কে জানে। শ্রীলঙ্কায় ফুটবল টিমটা ক্রিকেটের তুলনায় কেমন মনোযোগ পায়?জয়াসুরিয়া: সন্দেহ নেই, ক্রিকেট দলকে নিয়েই হইচই বেশি। আমরা বেশির ভাগ সময় প্রচার পাই না। শ্রীলঙ্কায় ফুটবল পেশাদার নয়। এটা বড় সমস্যা। ক্রিকেটে পেশাদারিত্ব আছে। আমরা পেশাদার ফুটবল খেললে ক্রিকেটের চেয়ে ভালো করতে পারতাম। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল তো ভারতে সিরিজ হারল। খেলা দেখেছেন?জয়াসুরিয়া: টিভিতে দেখেছি। ০-২ হার, খুবই খারাপ লেগেছে।