দীর্ঘ ১৯ বছরের কাবাডি ক্যারিয়ার। ২০১০ এসএ গেমসের আগে হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন। তবে সেরে উঠলেও কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাননি জিয়াউর রহমান (জিয়া)। এবার ডাক পেয়েছেন সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়াডের কাবাডি দলে। এটাই তাঁর শেষ টুর্নামেন্ট। শেষটা তাই স্মরণীয় করে রাখতে চান একসময়ের বিশ্বসেরা রেইডার
: ছয় বছর পর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলবেন। আবারও ফিরবেন— এমনটা ভাবতে পেরেছিলেন?
জিয়াউর রহমান: আমি সব সময় ভাবতাম, যেকোনো দিন জাতীয় দলে ফিরতে পারি। কখনো আত্মবিশ্বাস হারাইনি। জাতীয় দলে ফিরলে যেকোনো খেলোয়াড়েরই ভালো লাগে। খবরটা শোনার পর থেকে আমারও খুব ভালো লাগছে।
: ঘরোয়া টুর্নামেন্টে নিয়মিতই খেলেছেন। কিন্তু জাতীয় দলে খেলতে না পেরে নিশ্চয়ই খারাপ লাগত?
জিয়া: কাবাডি খেলাটাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। আমাদের বাপ-চাচা কাবাডি খেলতেন। আমাদের রক্তেই কাবাডি। তাই খেলতে না পারলে খুবই খারাপ লাগত। সারাক্ষণ মনে হতো, আবার কবে জাতীয় দলে ফিরতে পারব। কবে সবার সঙ্গে মজা করব, আনন্দ করব।
: আপনি তো একসময় বিশ্বসেরা রেইডার ছিলেন। পুরোনো জিয়াকে কি আবারও ফিরে পাওয়া যাবে?
জিয়া: কাবাডি একজনের খেলা নয়। দলগত খেলা। ক্রিকেটে যেমন অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান একা কখনো দলকে জেতাতে পারেন না। সবাইকেই ভালো খেলতে হয়। আমাদেরও তেমনি সবাইকেই ভালো খেলতে হয়। নিজের ব্যাপারে বলব, সেই সময়ের মতোই এখনো খেলছি। জাতীয় দলেও আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। তেমন ফিটনেস, জয়ের ক্ষুধা এখনো আমার মধ্যে আছে।
: আর কত দিন খেলে যেতে চান?
জিয়া: আমি এখনো ফিট আছি খেলার জন্য। ঘরোয়া টুর্নামেন্টে, লিগে খেলছি ভালোভাবেই। কিন্তু আর কত দিন খেলব? এবার মনে হয়েছে নতুনদের জায়গা করে দিতে হবে। এ জন্যই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই এশিয়াডে খেলেই অবসর নেব। এবারের এশিয়ান গেমসটা তাই স্মরণীয় করে রাখতে চাই। দলের জন্য, নিজের জন্যও।
: এসএ গেমস, এশিয়ান গেমস, বিশ্বকাপ, বিচ গেমস মিলিয়ে আপনার অধিনায়কত্বে ৯টি পদক (২ রুপা,৭ ব্রোঞ্জ) জিতেছে বাংলাদেশ। এবারও আপনিই অধিনায়ক!
জিয়া: অধিনায়ক বলেই দায়িত্ব একটু বেশি। আমি এবারও পদক আনতে চাই দলের জন্য। দলকে এখন থেকেই উজ্জীবিত করতে শুরু করেছি। আমি জাতীয় দলে ফেরায় দলের অন্যরাও খুব খুশি। দলের সবাই ভালো কিছু করার জন্য উন্মুখ।
: এশিয়াডের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি কেমন হচ্ছে?
জিয়া: এশিয়াডে বাংলাদেশ কখনো পদক ছাড়া ফেরেনি। কিন্তু চীন থেকে গতবার আমরা খালি হাতে ফিরেছি। যদিও ওই দলে আমি ছিলাম না। কিন্তু দলের হার আমাকে খুবই পীড়া দিয়েছিল। আমার এত খারাপ লেগেছিল যে কয়েক দিন ভালোমতো খেতে পারিনি। এবার আমাদের লক্ষ্যই থাকবে একটা ভালো ফলাফল করা। আমার নিজের জন্যও বলতে পারেন এটা একটা চ্যালেঞ্জ। প্রস্তুতি এখনো শুরু হয়নি। শুনেছি আগামী সপ্তাহে ক্যাম্প শুরু হবে। যত তাড়াতাড়ি ট্রেনিং শুরু হবে, ততই আমাদের জন্য ভালো।
: কাবাডির সেই সোনালি দিন ফেরাতে না পারার কারণ কী?
জিয়া: মাঠে খেলা না থাকাই এর একমাত্র কারণ। মেয়েদের কাবাডি ফেডারেশন তাও টুকটাক আয়োজন করে, কিন্তু পুরুষ কাবাডির বেলায় একটু উদাসীনই দেখা যায়। তবে আশার কথা, আবারও আমাদের দিকে মনোযোগী হচ্ছে ফেডারেশন।