গতবার পেয়েছেন ফুলের মালা। এবার কাঁটার আঘাত। পরশু হঠাৎ করেই বরখাস্ত হলেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের কোচ মারুফুল হক। কোচের চাকরির নিশ্চয়তা নেই, এটা জানা থাকার পরও অবাকই হয়েছেন শেখ রাসেলকে গতবার ট্রেবল জেতানো কোচ
লিগের মাঝপথও পেরোয়নি এখনো। হঠাৎ এমন কিছু হবে ভাবতে পেরেছিলেন?
মারুফুল হক: না, এভাবে হঠাৎ বরখাস্ত হব ভাবিনি। আমার গতকালের (পরশু) ট্রেনিং পরিকল্পনাও প্রস্তুত ছিল। আগের দিন সন্ধ্যায় টিম ম্যানেজার ফোন করে বললেন, কাল ১২টায় আসেন। আমি যাওয়ার পর ওনারা বললেন, ওনাদের ডোনাররা টিমের রেজাল্ট নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তাঁরা টাকা দিতে চান না। আর কোনো উপায় নেই, নতুন কোচও নিয়ে আসা হয়েছে। আমি যেন আর দলকে কোচিং না করাই।
এটা শোনার পর আপনার প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
মারুফুল: আমি সহজে বিচলিত বা অল্পতেই উৎফুল্ল হই না। তবে এবার মর্মাহত হয়েছি, যেটির বড় কারণ আগামী ৭, ৯ ও ১১ মে কলম্বোতে এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপে শেখ রাসেলের খেলা আছে। ওটার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তার কয়েক দিন আগে এভাবে বরখাস্ত হওয়া আমার কাছে অপ্রত্যাশিতই।
ফুটবল কোচদের তো এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতেই হয়, তাই না?
মারুফুল: এটা ঠিক। তবে সময়টা দেখুন, প্রেসিডেন্টস কাপের প্রতিপক্ষ তিনটি দলের ভিডিও সংগ্রহ করেছিলাম। আমার মূল নজর ছিল প্রেসিডেন্টস কাপের ওপর। এমন অবস্থায় বিদায় মেনে নেওয়া কঠিনই। প্রাসঙ্গিকভাবে বলি, মাঠে খেলোয়াড় টাইব্রেকারে শট মিস করল কেন, সে জন্যও আমাকে শোকজ করা হয়েছে! ওই মিসের জন্য কি আমি দায়ী, বলুন? তবু বলেছি, আমি দায়ী।
ক্লাব সভাপতি বলেছেন, মাঠে সাফল্য না পাওয়ায় তাঁরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
মারুফুল: ক্লাবের দৃষ্টিতে হয়তো ঠিকই করেছে। তবে আমার মতে, কাজটা ঠিক হয়নি। এএফসির বড় টুর্নামেন্টের ১০-১২ দিন আগে যত ভালো কোচই আনা হোক, ভালো করার সময় নেই তাঁর হাতে। তবে ক্লাবের নতুন কোচ নেওয়ার স্বাধীনতা আছে, আমি তাই ক্লাবের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি।
গতবার ট্রেবল জিতেছেন এই শেখ রাসেলের হয়েই। এবার সমস্যাটা কোথায় হলো?
মারুফুল: এবারের বিদেশি খেলোয়াড়েরা শেখ রাসেলের সঙ্গে মানায় না। ম্যাচ উইনার-প্লেমেকার নেই। সেন্ট্রাল ডিফেন্সের দুই খেলোয়াড়কে পর পর দুই ম্যাচে পাইনি। লেফট ব্যাক, রাইট ব্যাক, সেন্ট্রাল মিডফিল্ড পজিশনে কোনো বিশেষজ্ঞ খেলোয়াড় ছিল না।
তাহলে কি ভালো খেলোয়াড় পেলেই কেবল কোচ মারুফুল হক সাফল্য পান?
মারুফুল: এই যৌক্তিক প্রশ্নটা আসতেই পারে। কিন্তু মাঠে ফল না পেলেও পারফরম্যান্স কিন্তু ভালো ছিল। আমি খুশি। বড় ম্যাচগুলোতে আমরা ভালো খেলেছি। সময় পেলে এই দলটিই দাঁড়িয়ে যেত।
গতবার সনি নর্দের মতো খেলোয়াড় ছিল। এবার কি নর্দের অভাব অনুভব করেছেন?
মারুফুল: শুধু সনি না, গতবারের দলের নয়জন নেই এবার। সনি ছাড়া বাকিরা থাকলে হয়তো সনির অভাব অনুভব করতাম। কিন্তু তা করিনি। যা আছে, তা নিয়েই চলতে হয়েছে।