সেই ‘বিতর্কিত কনকাশন বদলি’ রাজিথারই চমক
কাসুন রাজিথা চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দুই দিন ছিলেন ড্রেসিংরুমে আরামে। হঠাৎই একাদশে থাকা পেসার বিশ্ব ফার্নান্ডো মাথায় আঘায় পাওয়ায় কনকাশন (মাথায় আঘাতজনিত সমস্যা) বদলি হিসেবে রাজিথাকে মাঠে নামতে হয়। এরপর সেই রাজিথাকেই শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে ভীতিকর বোলার মনে হচ্ছিল। নিজের প্রথম স্পেলেই নাজমুল হোসেন ও মুমিনুল হককে আউট করে বাংলাদেশ দলকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলেন ২৮ বছর বয়সী লঙ্কান পেসার।
আজও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নিয়েছেন। ৮৮ রান করা লিটন দাসকে কট বিহাইন্ড করে ঠিক পরের বলেই তামিম ইকবালকে বোল্ড করেন। প্রথমবারের মতো টেস্টে হ্যাটট্রিক ও ৫ উইকেট নেওয়ার সুযোগও সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু সেটি হয়নি। তবে কনকাশন বদলি হিসেবে নেমেই রাজিথা করেছেন নিজের ক্যারিয়ার–সেরা (৪/৬০) বোলিং।
আজ দিনের খেলা শেষে নিজের বোলিং নিয়ে রাজিথা বলছিলেন, ‘উইকেটটা ব্যাটিংয়ের জন্য খুবই ভালো। আমি নিজের স্বাভাবিক বোলিংটাই করে গিয়েছি। লাইন-লেংথ ঠিক রেখেছি। সেটা কাজেও দিয়েছে।’ রাজিথার চার উইকেটের তিনটিই ছিল বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের, তিনবারই রাজিথা বল করছেন রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে।
ভালো লেংথ থেকে বেরিয়ে যাওয়া বলে কট বিহাইন্ড হন নাজমুল। মুমিনুলের ফ্রন্ট ফুট ডিফেন্স ভেদ করে বল ভেঙেছে স্টাম্প। তামিমকেও ঠিক মুমিনুলের মতোই বোল্ড করেন এই লঙ্কান তরুণ। বাঁহাতিদের রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে আউট করার পরিকল্পনাটা অবশ্য আগেই করে রেখেছিল লঙ্কানরা। রাজিথা বলছিলেন, ‘আমরা পরিকল্পনাটা এভাবেই করেছিলাম। সেটা বাস্তবায়নও করতে পেরেছি।’
চট্টগ্রাম টেস্টের ম্যাচের ভাগ্য কোন দিকে যাচ্ছে, এ ব্যাপারে অবশ্য পরিষ্কার করে কিছু বলেননি তিনি। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসে ৩৯৭ রানের জবাবে বাংলাদেশ ৪৬৫ রান করেছে। আজ বিকেলে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৯ রান করেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ এখনো ২৯ রানে এগিয়ে আছে।
তবে পঞ্চম দিন লিডের আশা করতেই পারে শ্রীলঙ্কা। আজ শেষ বেলায় বল টার্ন করলেও উইকেট এখনো ব্যাটসম্যানদের হয়েই কথা বলছে বলে দাবি রাজিথার, ‘উইকেট এখনো ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো। কিছুটা টার্ন আছে। কালও হয়তো থাকবে। তবে আমাদের ব্যাটসম্যানরা দক্ষ। তাঁরা এখন ম্যাচের অবস্থা বুঝে খেলতে পারবে।’
রাজিথাকে ঘিরে আরও একটি আলোচনাও ছিল। কনকাশন বদলি হিসেবে রাজিথাকে খেলানো কৌশলগত কি না, এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। শ্রীলঙ্কার কোচ ক্রিস সিলভারউড অবশ্য এ ধরনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন, ‘আমার মনে হয়, তোমরা বিষয়টিকে ভুল দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছ। ক্রিকেটারদের সুস্বাস্থ্য সবার আগে। বিশ্বর মাথায় বল লেগেছিল। পরে সে মাথাব্যথা অনুভব করছিল। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, সে ঠিক আছে কি না। এ কারণেই সে খেলছে না। কাসুন খুব ভালো করেছে। ম্যাচে প্রভাব সৃষ্টি করেছে। সুতরাং আমরা এ ক্ষেত্রে কোনো সুবিধা নিইনি। আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করেছি।’