দুপুরের ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের কাছে বদ্ধভূমি হয়ে উঠল উইকেট। সন্ধ্যার ম্যাচে আবার দেখা গেল ২০০ পেরোনো স্কোর। অবশ্য তাতে উইকেটের যতটা অবদান, তার চেয়ে বেশি অবদান রাজশাহী কিংসের ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাত। রাজশাহীর বাজে ফিল্ডিংয়ের সুযোগে ঢাকা ডায়নামাইটস করেছে ৫ উইকেটে ২০৫। বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে সাকিব আল হাসানের তেজের মুখে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে রাজশাহী, হেরেছে ৯৯ রানে। ছুটির দিনে দর্শকে ঠাসা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম দেখল একটি নিরুত্তাপ, ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচ।
উইকেট যে আসলেই ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন, সেটি সাকিব আল হাসান-মোসাদ্দেক হোসেন ভালোভাবেই বুঝিয়েছেন। ঢাকার দুই স্পিনারকে তো খেলতেই পারেননি রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। তবে সবচেয়ে উজ্জ্বল সাকিব আল হাসান। প্রথম ২ ওভারে বর্তমান রানার্সআপদের স্কোরটা হলো ভয়াবহ, ১-২! রান ১, উইকেট ২! দুজনই সাকিবের শিকার। বাঁহাতি অলরাউন্ডারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে রাজশাহী আর কোমর সোজা করে দাঁড়াতেই পারল না। খুঁড়িয়ে চলা রাজশাহী করতে পারল ১০৬ রান। ম্যাচ শেষে সাকিবের বোলিং বিশ্লেষণ যেকোনো বোলারের জন্যই ঈর্ষণীয়: ৪ ওভার ১ মেডেন ৮ রান ৪ উইকেট!
একটা দল কতটা বাজে ফিল্ডিং করতে পারে, সেটিই যেন বোঝাল রাজশাহী! সহজ ক্যাচ হাতছাড়া, দৃষ্টিকটু গ্রাউন্ড ফিল্ডিং আর ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাতের সৌজন্যে রানের পাহাড় গড়েছে ঢাকা। ১৮ রানেই ভাঙতে পারত ঢাকার ওপেনিং জুটি। মোস্তাফিজুর রহমানের করা চতুর্থ ওভারে এক্সট্রা কাভারে সুনীল নারাইনের সহজ ক্যাচটা হাতে জমাতে পারেননি মুমিনুল হক। ৮ রানে জীবন পাওয়া নারাইনকে আরও একটি সুযোগ দেন উসামা মীর। ৪.১ ওভারে লং অনে উসামা যখন ক্যাচটা ফসকান অলরাউন্ডারে রূপ নেওয়া এই ক্যারিবীয়র রান ১১।
সপ্তম ওভারে উসামার বলে লং অনে নারাইনের লোপ্পা ক্যাচ তালুবন্দী করতে পারেননি সামিত প্যাটেল। তখন ঢাকার ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানের রান ১৮। ৮.৪ ওভারে উসামার বলেই আবারও জীবন পেলেন নারাইন। স্টাম্পিং হাতছাড়া করেছেন উইকেটকিপার জাকির হাসান, নারাইনের রান ২৫।
চার-চারবার সুযোগ পাওয়া নারাইন শেষ পর্যন্ত মেহেদী হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন দলীয় সর্বোচ্চ ৬৯ রান করে। তার আগে জো ডেনলির সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ৭৮ বলে ১২৯ রান যোগ করে এনে দিয়েছেন দুর্দান্ত সূচনা, যেটি এই বিপিএলে সর্বোচ্চ জুটি। ৩ রানের মধ্যে ডেলপোর্ট ফিরলেও কাইরন পোলার্ডের ১৪ বলে ৩৩, শহীদ আফ্রিদির ৭ বলে ১৪ ও সাকিব আল হাসানের ৬ বলে ১৩ রান ঢাকাকে এনে দিয়েছে ২০০ ছাড়ানো স্কোর।
নিজের আগের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা কাজী অনিকের কঠিন এক দিন গেল আজ। বাঁহাতি পেসারের ওপর বেশি চড়াও হয়েছেন ঢাকার ব্যাটসম্যানরা—৪ ওভারে ২ উইকেট পেয়েছেন ঠিকই। তবে গুনতে হয়েছে ৫২ রান! রাজশাহীর বোলারদের মধ্যে যা একটু সফল মোস্তাফিজুর রহমান। যদিও উইকেট পাননি। সতীর্থ বোলাররা যেখানে বেদম প্রহারের শিকার হয়েছেন, তিনি সেখানে ৪ ওভারে দিয়েছেন ২২ রান।
ঢাকার বিশাল রানের জবাব দেবে কী, করুণভাবে পিষ্ট হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় অনেকটা নিশ্চিত রাজশাহীর! অন্যদিকে শেষ চারে পা রাখা নিশ্চিত ঢাকার।