সিঙ্গাপুরের ডেভিড অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলবেন, সন্দেহ নেই ওয়েডের
পিএসএল, টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট, দ্য হানড্রেড, সিপিএল, আইপিএল, বিগ ব্যাশ, পিএসএল, আইপিএল ঘুরে আবার টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট—গত এক বছরে টিম ডেভিড যেন টি-টোয়েন্টির বিশ্বভ্রমণেই বের হয়েছেন। সিঙ্গাপুরে জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটার এবারের আইপিএলেও আলো ছড়িয়েছেন, কমপক্ষে ৫০ বল খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি (২১৬) স্ট্রাইক রেট নিয়ে। তবে অস্ট্রেলিয়ার দরজা তাঁর জন্য খুলবে কবে, এখন প্রশ্ন সেটিই।
ম্যাথু ওয়েড বলছেন, ডেভিডের অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই তাঁর। তবে সেটি পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই কি না, আলোচনা সেটি নিয়েই। অবশ্য ওয়েডের মতে, ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের হাতে সময় আছে অনেক।
সিঙ্গাপুরে জন্ম নিলেও দুই বছর বয়সেই বাবা-মার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান ডেভিড। অবশ্য বাবার কর্মসূত্রে সিঙ্গাপুরে নিয়মিতই যাতায়াত ছিল তাঁদের। দেশটির হয়ে ২০১৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ১৪টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিও খেলেছেন তিনি।
টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠা ডেভিড নতুন করে আলোচনায় আসেন এবারের আইপিএলে ভিত্তিমূল্যের প্রায় ২০ গুণ বেশি দাম পেয়ে। ৮ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে তাঁকে দলে নেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। প্রথম দুই ম্যাচে ১২ ও ১ রান করার পর বাদ পড়লেও দলে ফিরে দেখিয়েছেন, কেন তাঁকে অমন দাম দিয়ে দলে নিয়েছিল মুম্বাই। সব মিলিয়ে ৮ ম্যাচে ডেভিড ব্যাটিং করেছেন ৩৭ গড় ও ২১৬ স্ট্রাইক রেটে।
আইপিএলের পরই ডেভিড গেছেন ইংল্যান্ডে, ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে খেলতে। সেখানে প্রথম ২ ম্যাচে ডেভিডের ব্যাটিং পারফরম্যান্স এমন—১৮ বলে ৩৫ ও ২৫ বলে ৬০ রান। ঘরোয়া ক্রিকেটে এমন পারফরম্যান্সের পরও অবশ্য অস্ট্রেলিয়া দলে সুযোগ হয়নি এখনো তাঁর। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সামনে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও সর্বশেষ গুজরাট টাইটানসের হয়ে আইপিএল জেতা ওয়েড অবশ্য ডেভিডের দলে আসা সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন, ‘বিশ্বের কোনো খেলোয়াড়ের চেয়েই কম শক্তি নেই তার, আইপিএলে যেভাবে খেলেছে, তাতে দারুণ খুশি হয়েছি আমি। দুই ম্যাচ পর তো হাওয়াই হয়ে গিয়েছিল, যেটি একটু রহস্যজনকই ছিল। তবে জায়গা ফিরে পেল।’
হোবার্ট হারিকেনসে ডেভিডের সতীর্থ ওয়েডের মতে, তাঁর ‘যেকোনো কিছু’ হয়ে ওঠারই সামর্থ্য আছে। অস্ট্রেলিয়া দলে আসার জন্য অনেক সময়ও আছে বলে মনে করেন ওয়েড, ‘এ বিশ্বকাপ হোক বা পরেরটি, তার হাতে অনেক সময় আছে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সে ক্রিকেট খেলবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
ডেভিড কতটা পথ পেরিয়ে এসেছেন, ওয়েড মনে করিয়েছেন সেটিও, ‘ম্যাচ খেলার দিক দিয়ে বেশ তরুণ একজন ক্রিকেটার সে। তিন বছর আগে তো কোনো রকম চুক্তিতেই ছিল না। হারিকেনসে যখন এল, কোনো চুক্তিই ছিল না।’
অবশ্য এখনকার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া দলে আসাটা সহজ নয়, ওয়েড বলেছেন সেটিও, ‘টিম (ডেভিড), রাইলি মেরেডিথ, বেন ম্যাকডারমট, ড্যানিয়েল স্যামস—সবাই এগিয়ে আসছে। সুযোগ পেলে দলে প্রভাব রাখার মতো অনেক ক্রিকেটার। এবং তাদের সামনেও দুর্দান্ত কিছু ক্রিকেটার আছে।’
শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পরের টি-টোয়েন্টি সিরিজটি খেলবে অস্ট্রেলিয়া। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও একটি সিরিজ আছে তাদের। সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে আরেকটি সিরিজের কথা থাকলেও সেটি নিশ্চিত হয়নি এখনো।
বিশ্বকাপের আগে কোনো একটি সিরিজে ডেভিডের জায়গা হতে পারে, এমন ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার সীমিত ওভারের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই দুর্দান্ত ফর্মে আছে। আইপিএলও অসাধারণ কেটেছে তার। প্রথম বল থেকেই পেটানোর সামর্থ্যটা বেশ দুর্লভই, এবং সে অনেকবার এমন করে দেখিয়েছে। এমন ধারাবাহিক থাকলে তার দিকে অবশ্যই নজর থাকবে আমাদের।’
ডেভিড অবশ্য আপাতত ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতেই ব্যস্ত থাকবেন। টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের পর দ্য হানড্রেডে সাউদার্ন ব্রেভের হয়ে খেলার কথা আছে তাঁর। ৪ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হওয়ার কথা এবারের হানড্রেড।