লড়াই চালিয়ে যাবেন বাংলাদেশের বিপক্ষে বাদ পড়া প্যাটেল
আগের টেস্টে ইনিংসে ১০ উইকেট, পরের টেস্টে দলে জায়গাই নেই। চোট বা এমন কিছু হলে তা-ও এজাজ প্যাটেলের স্রেফ দুর্ভাগ্য বলে চালিয়ে দেওয়া যেত। তবে ব্যাপারটা যখন দেশের মাটিতে কৌশলগত সিদ্ধান্ত, তখন আদতে প্যাটেলের ভাগ্যকে কী বলা যায়?
আপাতত কিউই বাঁহাতি স্পিনার হতাশ। এখনকার পেস বোলিং আক্রমণকে দারুণ বলে নিজের ভাগ্য মেনে নিয়েছেন তিনি। তবে স্পিনকে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের বৃহত্তর অংশ বানানোর লড়াইটা চালিয়ে যাবেন—প্যাটেল বলেছেন এমনই।
প্রধান কোচ গ্যারি স্টিডের কাছেই দলে না থাকার খবরটা পেয়েছেন প্যাটেল। নিজের হতাশাটাও জানিয়ে দিয়েছেন, ‘শুধু নিজের হতাশাটাই প্রকাশ করেছি। কারণ, আপনার মাঝে মাঝে কথা বলতে হবে। দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলতে যে আপনি উদ্গ্রীব—সেটা তো দেখাতে হবে।’
তবে ব্যাপারটা ব্যক্তিগত কিছু নয়, পরিষ্কার করেছেন সেটাও, ‘গ্যারির সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। তবে এর আগেও এমন খোলামেলা কথা বলেছি। সেগুলো যে সব সময় খুবই স্বস্তিকর, তা নয়। তবে আমরা একে অন্যের সামনে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারি—কার অবস্থান কোথায়।’
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের স্পিনার হয়ে টেস্ট দলে ঢোকাটা সহজ নয় মোটেও। গত তিন বছর মিলিয়ে স্পিনাররা সেখানে করেছেন মাত্র ১৫২.৩ ওভার। ১৩০.৭ স্ট্রাইক রেটে তাঁরা নিয়েছেন মাত্র ৭ উইকেট। প্যাটেল নিজেও দেশের মাটিতে ৩ টেস্ট খেলে উইকেটের দেখা পাননি। মুম্বাইয়ে অমন ঐতিহাসিক পারফরম্যান্সের পরও তিনি কেন দলে নেই, প্যাটেল সেটা বোঝেন ভালোভাবেই, ‘নিউজিল্যান্ডের যেকোনো সময়ের চেয়ে অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার আছে এখন আমাদের। আমি যে যুগে ক্রিকেট খেলছি, আমার মনে হয়, সেটারই অংশ এটা। এই পরিস্থিতি কিন্তু নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের জন্য দারুণ।’
তবে প্যাটেল পরিবর্তনের পক্ষে, ‘আমি বুঝি তারা কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আমার কাছে ব্যাপারটা কাজ করে যাওয়ার, পরিবর্তনটা আনার। আমার পুরো ক্যারিয়ারটাই এমন। যখনই আমার সামনে বাধা বা হতাশা আসে, আমার ধারণা, আমার ক্ষুধাটা বেড়ে যায়। আমার কাছে ব্যাপারটা তাই অনুশীলনে ফিরে আরও উন্নতি করার।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট যে মাউন্ট মঙ্গানুইতে, নিউজিল্যান্ডে অন্যতম স্পিন–সহায়ক পিচ বলতে গেলে সেটিই। সেখানেও নেওয়া হয়নি প্যাটেলকে। বাংলাদেশের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ ও ওয়েলিংটনে খেলবে নিউজিল্যান্ড, পরের সিরিজে প্যাটেলের জন্য সুযোগ পাওয়াটা তাই আরও কঠিন।
তবে থামতে চান না প্যাটেল, ‘স্পিনার হিসেবে গ্রাউন্ডসম্যানদের এটা দেখানো আমার কাজ—এটা (স্পিন) সম্ভব। এরপর ব্যাপারটা তাদের ওপর। তারা যদি এভাবে ভাবে, “আমরা নিউজিল্যান্ডে একটু স্পিন বোলিং দেখতে চাই।” এ পরিবর্তনের দিকে যাওয়ার চেষ্টাই করতে হবে। অবশ্য আমাদের দেশে যে কাজটা কঠিন, সেটাও বুঝি আমরা।’
তবে পরিস্থিতির যে পরিবর্তন দরকার সেটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন প্যাটেল, ‘ঘরোয়া ক্রিকেটে আমার মনে হয় গ্রাউন্ডসম্যানদের একটু রোমাঞ্চিত হওয়ার সুযোগ আছে (স্পিনের ব্যাপারে)। এবং এটা আমাদের খেলোয়াড়দেরও সহায়তা করবে। এক, বোলিংয়ের দিক দিয়ে এমন উইকেটে কীভাবে করতে হয়। আবার ব্যাটিংয়ের দিক দিয়ে দেখলেও ভিন্ন কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে শেখা যায়।’
প্যাটেল চান, নিউজিল্যান্ডের পরবর্তী প্রজন্ম স্পিনের এই শিল্পে উৎসাহী হোক, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের বৃহত্তর যে ছবি, স্পিন বোলিং যাতে সেটার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়—সেটা নিশ্চিত করার লড়াইটা আমি চালিয়ে যাব।’