২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মিলার-ফন ডার ডুসেনে রেকর্ড গড়ে ভারতকে হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা

দারুণ এক জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুর্দান্ত জয় এনে দিয়েছেন মিলার ও ফন ডার ডুসেনএএফপি

২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২০৬ রান তাড়া করে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের ইতিহাসে তাদের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল সেটিই। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে সে রেকর্ড নতুন করে গড়তে হতো তাদের। রেসি ফন ডার ডুসেনের ৪৬ বলে অপরাজিত ৭৫, ডেভিড মিলারের ৩১ বলে অপরাজিত ৬৪ রান আর ৬৪ বলে দুজনের অবিচ্ছিন্ন ১৩১ রানের জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা করল সেটিই। অধিনায়ক হিসেবে ঋষভ পন্তের অভিষেকের দিনে ভারত ২১২ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল, দক্ষিণ আফ্রিকা সেটি পেরিয়ে গেছে ৭ উইকেট ও ৫ বল বাকি রেখে। টানা ১২টি টি-টোয়েন্টি জেতার পর এই প্রথম হারল ভারত। এ ম্যাচ জিতলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে টানা জয়ের রেকর্ডটি এককভাবে নিজেদের করে নিত ভারত।

রান তাড়ায় পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেট হারালেও ৬১ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক ও টেম্বা বাভুমা অবশ্য তেমন কিছু করতে পারেননি—৮ বলে ১০ রান বাভুমার, ১৮ বলে ২২ রান ডি ককের। দক্ষিণ আফ্রিকার মূলত কাজে আসে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে তিনে পাঠানো। হার্শাল প্যাটেলের ফুল টসে বোল্ড হওয়ার আগে ১৩ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় ২৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি।

৪৬ বলে অপরাজিত ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন ফন ডার ডুসেন
বিসিসিআই

তবে ডি ককের পর প্রিটোরিয়াসের উইকেটে একটু চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফন ডার ডুসেনের শুরুটাও ছিল ধীরগতির। মিলারের সঙ্গে তাঁর জুটি শুরুর সময় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ৬৪ বলে ১২৯ রান।

প্রথম বাউন্ডারি মারতে মুখোমুখি হওয়া ১১তম বল পর্যন্ত অপেক্ষা করেন মিলার, প্রথম ১০ বলে তাঁর রান ছিল ৯। ১২তম ওভারে হার্শাল প্যাটেলকে চার-ছয়ে খোলস ছেড়ে বের হন, তাঁর ঝড়ও শুরু হয় তখনই। পরের ওভারে অক্ষর প্যাটেলের ওপর চড়াও হন, টানা তিন বলে মারেন তিনটি বাউন্ডারি—চার, ছয়, ছয়। মাত্র ২২ বলেই অর্ধশতক পেয়ে যান দুর্দান্ত এক আইপিএল কাটানো মিলার।

আরও পড়ুন

ফন ডার ডুসেনও খোলস ছেড়ে বের হন হার্শালের ওপর চড়াও হয়েই। প্রথম ৩২ বলে তাঁর রান ছিল ৩১। সেখান থেকে ৩৭ বলেই ৫০ ছুঁয়ে ফেলেন তিনি, ১৭তম ওভারে হার্শালকে ৩ ছয় ও ১ চারে তোলেন ২২ রান। চাপটা এরপর গিয়ে পড়ে ভারত বোলারদের ওপরই। পরের ওভারে ভুবনেশ্বর কুমার আসেন, মিলার-ফন ডার ডুসেন রেহাই দেননি তাঁকেও। ওই ওভারেও ওঠে ২২ রান।

এর আগে ভারত ২০০ পেরোয় মোটামুটি প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের অবদানেই। প্রথম পাঁচজনেরই স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫০-এর ওপর, সর্বনিম্ন রান ২৩। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য তেমন সহজ ছিল না, ভারত ব্যাটসম্যানরা এমন মনে করলেও সেখানেই ঝড় তোলেন তাঁরা।

ভারতের বড় স্কোরের ভিত গড়ার মূল কারিগর ছিলেন কিষাণ
বিসিসিআই

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামার পর অবশ্য প্রথম ৫ ওভারে ৩৬ রানের বেশি তুলতে পারেনি ভারত। এরপরই শুরু হয় ঝড়। ঈশান কিষান ও রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের উদ্বোধনী জুটিতে ওঠে ৫৭ রান, গায়কোয়াড় ফেরেন ১৫ বলে ২৩ রান করে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কিষানকে দারুণ সঙ্গ দেন ২৭ বলে ৩৬ রান করা আইয়ার, সে জুটিতে ওঠে ৪০ বলে ৮০ রান।

ভারতের বড় স্কোরের ভিত গড়ার মূল কারিগর কিষান, ৪৮ বলে ৭৬ রানের ইনিংসে ১১টি চারের সঙ্গে তিনি মারেন ৩টি ছক্কা। এরপর অধিনায়ক পন্ত ও সহ-অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া তাঁদের শেষটা করেন দারুণ। ১৬ বলে ২৯ রান পন্তের, মাত্র ১২ বলে ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন পান্ডিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজ ও তাব্রেইজ শামসির করা ৫ ওভারে ৭০ রান তোলে ভারত।