২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ভিক্টোরিয়া, ওল্ড ট্রাফোর্ড, থাইল্যান্ড: ‘বর্ণিল’ ওয়ার্নের জীবন

যে বোলিং অ্যাকশন নকল করার চেষ্টা করা হয়েছে পৃথিবীজুড়েই!ছবি: রয়টার্স
তাঁর বোলিং ছিল জাদুকরি। ব্যাটসম্যান তো বটেই, এমনকি ধন্দে পড়ে যেতেন নাকি আম্পায়াররাও। সেই শেন ওয়ার্ন এমনভাবে চলে গেলেন, বিদায়বেলাও শুধুই অবিশ্বাস! ভিক্টোরিয়ায় জন্ম, ওল্ড ট্রাফোর্ডে অ্যাশেজে এক বলে দিয়েছিলেন আগমণী বার্তা। থাইল্যান্ডের এক দ্বীপে ঘুমের ঘোরেই চলে গেলেন লেগ স্পিন জাদুকর। মাঝে রেখে গেলেন বর্ণিল এক জীবন। যে জীবন হলিউডের, যে জীবন ক্রিকেট-রূপকথার!

১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৯

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার ফার্নট্রি গালিতে জন্ম। বাবা কিথ ওয়ার্ন, মা ব্রিজিট ওয়ার্ন।
অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবলার হতে চেয়েছিলেন ওয়ার্ন।  

২ জানুয়ারি, ১৯৯২

ভারতের বিপক্ষে সিডনিতে টেস্ট অভিষেক। এক ইনিংস বোলিং করে ১৫০ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট।  

ডিসেম্বর, ১৯৯২

মেলবোর্নে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৬৫ রানে ১ উইকেট নিলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট নেন ৫২ রানে। টেস্টে প্রথমবার ম্যাচসেরা হন ওই পারফরম্যান্সে।

২৪ মার্চ, ১৯৯৩

ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক। ১০ ওভারে ৪০ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ২ উইকেট।

৪ জুন, ১৯৯৩

ওল্ড ট্রাফোর্ডে অ্যাশেজ অভিষেক। নিজের প্রথম বলে মাইক গ্যাটিংকে আউট করেছিলেন। সে বল আখ্যা পেয়েছিল ‘বল অব দ্য সেঞ্চুরি’ হিসেবে।

১৯ ডিসেম্বর, ১৯৯৩
ইংল্যান্ডের ফিল ডিফ্রেইটাস, ড্যারেন গফ ও ডেভন ম্যালকমকে ফিরিয়ে মেলবোর্নে করেছিলেন হ্যাটট্রিক। ওয়ার্নের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে একমাত্র হ্যাটট্রিক।

১৯৯৪

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অ্যাডিলেডে পেয়েছিলেন ১০০তম টেস্ট উইকেট।

নভেম্বর, ১৯৯৪

ব্রিসবেনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭১ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন। টেস্টে তাঁর ক্যারিয়ারসেরা বোলিং হয়ে থেকেছে সেটিই।

১৯৯৫

পার্থে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পেয়েছিলেন ২০০তম টেস্ট উইকেট। সময়ের হিসাবে এখনো দ্রুততম।

ডিসেম্বর, ১৯৯৮

ভারতীয় বাজিকরকে তথ্য দেওয়ায় জরিমানা গুনেছিলেন। জরিমানা করা হয়েছিল মার্ক ওয়াহকেও।

শেন ওয়ার্ন: যে জীবন হলিউডের, যে জীবন ক্রিকেট-রূপকথার!
ছবি: রয়টার্স

১৯৯৮

প্রথম ইনিংসে ৫টি, দ্বিতীয় ইনিংসে ৬টি। তাতেই ৩০০তম উইকেট হয়ে যায় শেন ওয়ার্নের। ইতিহাসের প্রথম লেগ স্পিনার হিসেবে ৩০০ উইকেট নেন তিনি। তাঁর ৩০০তম শিকার ছিলেন জ্যাক ক্যালিস।

২০ জুন, ১৯৯৯

লর্ডসে অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তানকে ফাইনালে হারিয়ে জেতে বিশ্বকাপ। ৩৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচসেরা। ওয়ানডেতে ২০০তম উইকেটও পান ওই দিন।

এপ্রিল, ২০০০

উইজডেনের চোখে শতাব্দীর সেরা পাঁচ ক্রিকেটারের একজন নির্বাচিত হন। অন্য চারজন ছিলেন ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান, গ্যারি সোবার্স, জ্যাক হবস ও ভিভ রিচার্ডস।

আগস্ট, ২০০০

ইংলিশ নার্সকে আপত্তিকর বার্তা পাঠিয়ে ফেঁসে যান। অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়কত্বের পদ থেকে বরখাস্ত হন।

মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে, শেন ওয়ার্ন ছিলেন আলোচনায়
ছবি: রয়টার্স

২০০১

ওভালে নেন ১১ উইকেট। প্রথম অস্ট্রেলিয়ান বোলার হিসেবে ৪০০ উইকেট হয়ে যায়।

ফেব্রুয়ারি, ২০০৩

বিশ্বকাপের আগ দিয়ে নিষিদ্ধঘোষিত ওষুধ সেবনের দায়ে এক বছর নিষিদ্ধ হন। ওয়ার্ন এর আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেটিই হতে যাচ্ছে তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আর ওয়ানডে খেলেননি।

৮ মার্চ, ২০০৪

গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন। পেয়ে যান ৫০০তম টেস্ট উইকেট, ব্যাটসম্যান ছিলেন হাসান তিলকারত্নে।

জুন, ২০০৫

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় স্ত্রী সিমোন কালাহানের সঙ্গে। ওয়ার্নের তিন সন্তানেরই মা সিমোন।

জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০০৫

ব্যক্তিগত জীবনের ঝামেলার ঊর্ধ্বে উঠে ওয়ার্ন দেখান অ্যাশেজে স্মরণীয় পারফরম্যান্স। তবে অ্যাশেজ হারে অস্ট্রেলিয়া। ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে ওই সিরিজেই ৬০০ টেস্ট উইকেট পান। এজবাস্টনে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে থেকে বোল্ড করেন অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসকে, যেটিকে বলা হয় ‘স্ট্রাউস বল’।

২০০৬

বক্সিং ডে টেস্ট, এমসিজি। ঘরের মাঠে ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে ৭০০তম টেস্ট উইকেট পান শেন ওয়ার্ন।

২০০৫ অ্যাশেজ: ওভালে কেভিন পিটারসেনকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন ওয়ার্ন
ছবি: এএফপি

৫ জানুয়ারি, ২০০৭

সিডনিতে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। বিদায় বলেন গ্লেন ম্যাকগ্রাও। অ্যাশেজে ইংল্যান্ডকে ধবলধোলাই করে অস্ট্রেলিয়া।

১ জুন, ২০০৮

ইতিহাসের প্রথম আইপিএলের নিলামের পর ‘অন্যতম খর্বশক্তির’ বলা হচ্ছিল রাজস্থান রয়্যালসকে। সে দলকে নিয়ে শিরোপা জেতেন শেন ওয়ার্ন। একই সঙ্গে দলটির অধিনায়ক ও কোচ ছিলেন ওয়ার্ন।

১০ ডিসেম্বর, ২০১১

ব্রিটিশ অভিনেত্রী লিজ হার্লির সঙ্গে সম্পর্কের গুজব। পরে বাগদানও হয়। তবে ২০১৩ সালে বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

১৯ জুলাই, ২০১৩

আইসিসির হল অব ফেমে যুক্ত করা হয় শেন ওয়ার্নকে।

২২ জুলাই, ২০১৩

বিগ ব্যাশ দিয়ে পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় বলেন। খেলছিলেন মেলবোর্ন স্টারসের হয়ে।

৪ মার্চ, ২০২২

ক্রিকেট–বিশ্ব নাড়িয়ে দেওয়া খবর। থাইল্যান্ডের কোহ সামুইয়ে মারা যান ওয়ার্ন। ধারণা করা হচ্ছে, হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

বিদায়, শেন ওয়ার্ন!
ছবি: রয়টার্স