বোলিংয়ে যেভাবে সফল হলেন মিরাজ

৪ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজএএফপি

মেহেদী হাসান মিরাজের টেস্ট ক্যারিয়ারে একমাত্র সেঞ্চুরিটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। টেস্ট ও ওয়ানডের সেরা বোলিংয়েও প্রতিপক্ষের জায়গায় লিখতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নামই। অ্যান্টিগা টেস্টেও প্রথম ইনিংসে সেই মিরাজই বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। ২২.৫ ওভারে ৫৯ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন এ অফ স্পিনার। পেসারদের সঙ্গে জুটি বেঁধে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৬৫ রানে অলআউট করতে মূল ভূমিকা পালন করেন তিনিই।

অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে নিজের বোলিং পারফরম্যান্স নিয়ে ব্যাখ্যায় অবশ্য নতুন কিছু বললেন না মিরাজ। দেশের বাইরের সাফল্যের সেই পুরোনো কৌশলেই ধরা দিয়েছে সাফল্য, মনে করেন তিনি।

দিনের খেলা শেষে সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট ড্যারেন গঙ্গার প্রশ্নের উত্তরে মিরাজ বলছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় উইকেট কিছুটা ধীরগতির ছিল। এই উইকেটে শুধু একই জায়গায় বল করে যাওয়াটা সঠিক সিদ্ধান্ত। এতে করে ব্যাটসম্যানদের আউট হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে। আমি আসলে তখন ডট বল দেওয়াতে মনোযোগ দিয়েছি।। এরপরই সাফল্য এসেছে।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৬৫ রানে আটকে দেওয়ার মূল কৃতিত্ব মিরাজেরই
এএফপি

ইনিংসের শুরুতে অবশ্য মিরাজ উইকেটের পেছনে ছুটেছেন। কিন্তু তাতে সাফল্য পাননি। ৪ উইকেটের সবকটিই এসেছে তাঁর বোলিংয়ের শেষ ১১ ওভারে, যখন উইকেট শিকারের চিন্তা ভুলে রান থামানোর চেষ্টা করেছেন তিনি, ‘প্রথম দুই-তিন স্পেলে আমি উইকেটের জন্য বল করেছি। এটাই সমস্যা হয়েছিল। এরপর আমি রান আটকানোর দিকে যাই। ওভারপ্রতি আড়াই রানের মতো দিলে সুযোগ আসবে বলে মনে করেছিলাম। এমনই হয়েছে।’

এ ক্ষেত্রে মিরাজকে পথ দেখিয়েছেন সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক ও তাইজুল ইসলাম। মিরাজের কথা, ‘আমি প্রথম ২-৩ টা স্পেলে হতাশ ছিলাম কারণ ভালো বোলিং হচ্ছিল না, ঠিক জায়গায় করতে পারছিলাম না। মানসিকভাবে ফোকাসড হওয়াটা জরুরী ছিল। সে ক্ষেত্রে আমার সতীর্থ মুমিনুল ও তাইজুল আমাকে দারুণ সমর্থন দিয়েছে। তাদের দুজনকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’

আমি প্রথম ২-৩ টা স্পেলে হতাশ ছিলাম কারণ ভালো বোলিং হচ্ছিল না, ঠিক জায়গায় করতে পারছিলাম না। মানসিকভাবে ফোকাসড হওয়াটা জরুরী ছিল। সে ক্ষেত্রে আমার সতীর্থ মুমিনুল ও তাইজুল আমাকে দারুণ সমর্থন দিয়েছে। তাদের দুজনকে ধন্যবাদ দিতে চাই।
মেহেদী হাসান মিরাজ

বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের দ্বিতীয় ইনিংসেও মিরাজ ছিলেন আলোচনায়। তামিম ইকবাল আউট হওয়ার পর তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে নামেন। ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রেসিডেন্ট একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও তিনে নেমেছিলেন মিরাজ। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে এবারই প্রথম। তবে মিরাজের ইনিংস দীর্ঘ হয়নি। ২ রান করে আউট হন তিনি। এ প্রসঙ্গে মিরাজ বলছিলেন, ‘আমরা আসলে মূল উইকেটগুলো হারাতে চাচ্ছিলাম না। ৪৫ মিনিটের মতো বাকি ছিল দিনের। যে কারণে আমি উপরে উঠে আসি। আমার জন্য দারুণ সুযোগ ছিল মিডল অর্ডারে রান করার। কিন্তু আমি সেটা করতে পারিনি। আশা করছি এরপর সুযোগ আসলে কাজে লাগাবো।’

আরও পড়ুন

এ তো গেল মিরাজের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের কথা। দ্বিতীয় দিন শেষে ১১২ রানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ দলের তৃতীয় দিনের লক্ষ্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে মিরাজ বলছিলেন, ‘ব্যাটসম্যানদের দিকে তাকিয়ে আছি। যদি দুইটা শত রানের জুটি হয়, দুজন ব্যাটসম্যান ৭০ করে রান পায় তাহলে সুযোগ আমাদেরও আছে। আমাদের লক্ষ্য আগামীকাল পুরো দিন ব্যাট করা। ভালো ব্যাট করলে সুযোগ থাকবে।’